দেশ থেকে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচারের অনুসন্ধানে এনবিআর যত গভীরে যাচ্ছে, তত কুৎসিত চেহারা বের হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, বুধবার ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) অর্থ পাচারের তথ্য প্রকাশ করে। এতে ১৪৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ২৬তম হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র ২০১৩ সালে পাচার হয়েছে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার যা টাকার অঙ্কে ৭৬,৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পাচার হওয়া এই অর্থ আগের বছরের তুলনায় ৩৩.৭৯ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে বিগত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ৫,৫৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ৪ লাখ ৪১,৪২৪ কোটি টাকা।
গড়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। জিডিপির হিসাবে এর পরিমাণ ৫.২৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
তিনি অর্থ পাচারের প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে দুদক, পুলিশ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরকে পৃথকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ নজিবুর রহমান বলেন, ‘এনবিআরের কাস্টমস, আয়করসহ বিভিন্ন আঙ্গিক ও কৌশল থেকে কাজ করছে। পাচার বা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। অনেকের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা পাচারের একটি আলামত খুঁজতে গিয়ে বাংলাদেশে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি আটক করা হয়েছে।
মুদ্রা পাচার রোধের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্রিয়তা অনেক বেশি। সে আঙ্গিকে বোর্ড সুনামের সঙ্গে কাজ করবে।’ এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এনবিআরে একটি চোরাচালান বিরোধী ফোরাম করতে অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। যেখানে বিভাগীয় কমিশনার, বিভিন্ন সংস্থা যুক্ত থাকবে। খুব শিগগিরই এ ফোরাম গঠন করা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জিএফআই অর্থ পাচারের যে চিত্র দিয়েছে, তা বেশ উদ্বিগ্ন হওয়ার মত। তবে ভয়ভীতি দূর করে আমরা রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা করছি। যতই ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি দেওয়া হোক না কেন রাজস্ব বোর্ড তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে।’