ব্রেকিং নিউজ
Home - দৃশ্যকাব্য - দৃ শ্য কা ব্য : ১ বিলুপ্ত পুরা

দৃ শ্য কা ব্য : ১ বিলুপ্ত পুরা

ব্যবহার কমলে প্রয়োজনীয় জিনিস কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায়। প্রযুক্তির উৎকর্ষ জীবন থেকে আমাদের লোকজ অনেক কিছুই বিলুপ্ত । তবে কালে ভদ্রে কিছু জিনিসের দেখা মেলে। তখন হারানো বেলার স্মৃতি ঘাই মারে । আহা সেই কবে দেখেছিলাম। আমার মায়েরও দুটো ছিল। ধান চালের জীবন তখন। মেঠেল জীবন। খুব প্রয়োজন পড়ত মায়ের রোজকার জীবনে। গৃহস্থ বাড়ির সংসারে খুব দরকারী জিনিস ছিল বেতের তৈরী এই জিনিসটা। উঠানে ধান উঠলে এই জিনিসটা দিয়ে মাপা হত। আবার নিত্য আহারের চাল এই জিনিসে মেপেই রান্না হত । আমাদের গ্রাম দেশে একে বলা হত পুরা । কেউ আবার সের বলত। আমি এখনও এটাকে পুরা বলেই চিনি। অঞ্চলভেদে এর আলাদা নাম থাকতে পারে। কারিগর এমনভাবে পাকা বেতের উপরণ দিয়ে এটাকে এমন নিপুণ করে তৈরী করত যে এক সের চাল অথবা ধানের নিঁখুত পরিমাপ করা যেত। আবহমান বাংলার কুটির শিল্প এই জিনিসটা। এখন এর ব্যবহার নেই। একদম নেই । আগে গাঁয়ের প্রতিটা গৃহস্থবাড়িতে এটা মিলত। প্রাত্যহিক সংসারী জীবনের অনুসঙ্গ ছিল ধান ও চালের পরিমাপক এই পুরা।
বহু বছর পর আজ গ্রাম্য হাটের ভাসমান এক দোকানী বাঁশের তৈরী পসরার সাথে দুইটা বিলুপ্ত পুরা সাজিয়ে বসেছিল। ক্রেতা মিলছিলনা। তেমন প্রয়োজন পড়েনা বলে চাহিদা নেই। দোকানী প্রতিটার দাম হেঁকেছিল ১০০ টাকা। খুব ইচ্ছে করছিল একটা পুরা কিনে নেই। আবার ভাবি না থাক কোন কাজে লাগবেনা যে আমার ! কি মাপবো আমি এ পুরাটা দিয়ে ! আমার হাড়িতে রোজ যে চাল রান্না হয় তা তো মাপার একটা প্লাস্টিকের মগ আছে। দরকারী না ভেবেই এভাবেই রোজ আমার ঐতিহ্য বিলুপ্ত করে দেই ।
৥ ছবি ও প্রতিবেদন > দেবদাস মজুমদার ।

Leave a Reply

x

Check Also

ব্যাঙের ছাতায় ভেষজ গুণ

দেবদাস মজুমদার <> স্থানীয় পরিচিতি ব্যাঙের ছাতা । অঞ্চলভেদে ভূঁইছাতা, কোড়ক ছাতা, ছত্রাক, পলছত্রাক, ভুঁইছাতি, ...