পিরোজপুর সংবাদদাতা > পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার চার যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এর ৩ সদস্যের এক তদন্তদল আজ বৃহস্পতিবার ভাণ্ডারিয়াায় ঘটনাস্থ পরিদর্ন করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সত্য রঞ্জন রায় এর নেতৃত্বে তদন্ত দল পিরোজপুরে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার তদন্তদল মামলার বাদী ও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহনের জন্য ভান্ডারিয়া সফর করেন। সহকারী পুলিশ সুপার সত্য রঞ্জন রায় জানান,আগামী ৩ দিন মামলার তদন্ত কাজে তারা পিরোজপুর ও ভান্ডারিয়ার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন সহ স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহন করবেন। তদন্ত দলের অপর সদস্যরা হলেন, এস আই মাহবুবুর রহমান ও কম্পিউটার অপারেটর হাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য ভান্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বিজয় কৃষ্ণ বালা গত বছরের ৬ অক্টোবর পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একই ইউনিয়নের পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত খবির উদ্দিনের ছেলে আমীর হোসেন ও তার ভাই ফজলুল হক, প্রয়াত শামছুল হকের ছেলে নূরুল আমীন ও প্রয়াত আবুল হাসেমের পুত্র আঃ মন্নানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সত্যব্রত সিকদার মামলাটি তদন্তের জন্য যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠনোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন ৭১’ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে আসামীরা রাজাকার হিসাবে পাক সেনাদের সঙ্গে মিলে তার (বাদীর) পিতা নিরোধ চন্দ্র বালাসহ একই বাড়ির ছয় জনসহ ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের ৯ কার্তিক ভোরে আসামিরা পূর্ব পশারীবুনিয়া গ্রামে বিজয় কৃষ্ণ বালার বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাসহ সাত জনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর পূর্ব পশারীবুনিয়া গ্রামের বনমালী গাছারুর বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে এক দড়িতে বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে বিজয় কৃষ্ণ বালা বেঁচে গেলেও তাঁর বাবা নিরোধ চন্দ্র বালা, ছোট ভাই রনজিৎ বালা, বোনের স্বামী সুকুমার মিস্ত্রী, প্রতিবেশী গঙ্গাচরণ হালদার, অমূল্য মিস্ত্রি, সমীর মিস্ত্রি ঘটনাস্থলেই মারা যান । এছাড়া একই বছরের ২০ জ্যৈষ্ঠ আসামিরা পূর্ব পশারীবুনিয়া গ্রামের উপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, চিত্র রঞ্জন বেপারি, সতীশ চন্দ্র বেপারি, শরৎ চন্দ্র মাঝি, প্রকাশ হালদারকে গুলি করে হত্যা করে । আসামিরা বিভিন্ন সময় আরও ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে বলেও মামলায় উল্ল্যেখ করা হয়। এ ছাড়া যুদ্ধকালীন সময় আসামিরা পাকসেনাদের সাথে মিলে হিন্দু মেয়েদের ধর্ষন ও বাড়ি-ঘরে আগুন ও লুটপাট চালায় বলেও মামলায় উল্ল্যেখ করা হয়েছে ।