ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - পিরোজপুরে জোড়া খুনের দায়ে একজনের ফাঁসির আদেশ

পিরোজপুরে জোড়া খুনের দায়ে একজনের ফাঁসির আদেশ

পিরোজপুর প্রতিনিধি > পিরোজপুরে জোড়া খুনের অপরাধে জনৈক গৌতম রায়কে (৩৮) মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো: গোলাম কিবরিয়া। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষনা করা হয়।
২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারী দন্ডপ্রাপ্ত গৌতম তার স্ত্রী ও চাচীকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে।
পিরোজপুর থানায় একই দিন দায়ের করা এজাহার সুত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর সদর উপজেলার দক্ষিন বাদুরা গ্রামের হিমাংশু রায়ের পুত্র গৌতম পারিবারিক তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তার স্ত্রী দুটি নাবালক জমজ কণ্যার মা সীমা (৩০)কে জবাই করে ও চাচী শেফালি (৫০)কে কুপিয়ে হত্যা করে। সীমার বাবা ঝালকাঠী জেলার কাঠালিয়া উপজেলার আমুড়িবুনিয়া গ্রামের ক্ষিতিশ চন্দ্র ভক্ত (৬৫) পিরোজপুর থানায় দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেন যে, ঘটনার দিন তার জামাতা গৌতম রায় বাদুরা বাজার থেকে মাছ কিনে বাড়িতে এসে তা স্ত্রীকে কাটতে বলে। সীমা সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় স্বামীকে বলে যে, হাতের কাজ শেষ করে সে মাছ কাটবে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে গৌতম দৌড়ে ঘরে ঢুকে দা এনে উঠানে এসে সীমার গলায় কোপ দেয় এবং তার চুলের মুঠি ধরে জবাই করে হত্যা করে। এ ঘটনা দেখে গৌতমের চাচার স্ত্রী শেফালী ও চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শিউলী পাশের ঘরে বসে চিৎকার করলে গৌতম দৌড়ে গিয়ে তাদেরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। প্রতিবেশিরা শেফালী ও শিউলী কে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শেফালীকে মৃত ঘোষনা করেন।
পিরোজপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা পরের বছরের ১ মে আদালতে গৌতমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। গ্রেফতার হওয়ার পর গৌতম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অপরাধ স্বীকার করে।
মোট ১৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শষেে জেলা জজ তার ৪৫ পৃষ্ঠার রায় উল্লেখ করেন যে, ৩ নং স্বাক্ষী মারাত্মক আহত শিউলীর সাক্ষ্য, আসামীর স্বীকারোক্তি এবং অন্যান্য স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যে এবং কাগজপত্র পর্যালোচনায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, গৌতম এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। জেলা জজ বলেন, সে একজন মানুষরুপি পশু, তার বেচে থাকার কোন অধিকার নেই। তাই সীমা হত্যার অপরাধে গৌতমকে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় ফাসিতে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শেফালীকে হত্যায় একই ধারায় একই ধরনের শাস্তি প্রদান করা হল। এ ছাড়া শিউলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করার অপরাধে দন্ডবিধির ৩২৬ ধারায় ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হল।
এই চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলার রায় শোনার জন্য আদালত প্রাঙ্গনে বাদুরা এলাকার নারী-পুরুষ সহ শত শত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিল। রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, পিপি এডভোকেট খান মো: আলাউদ্দিন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে সাজানো অস্ত্র মামলায় আসামী করে হয়রাণির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গত সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে থানা পুলিশের দায়ের করা একটি ...