ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূল - পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে কৃষকের স্বপ্ন চুরমার

পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে কৃষকের স্বপ্ন চুরমার

পিরোজপুর প্রতিনিধি :

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পিরোজপুরে আমন ক্ষেত ও শীতের সবজি ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন কৃষকেরা। পিরোজপুরে বিভিন্ন উপজেলায় ফসলি ক্ষেতজুড়ে ছিল আমন ধান ও শীতকালীন সবজির আবাদ। কয়েকদিন পরেই আমন ধান কাটার ধুম পড়তো আর শীতের সবজি উঠতো হাট-বাজারে। এতে লাভের স্বপ্ন দেখছিল কৃষকেরা। কিন্তু তাদের এ স্বপ্ন পানির নীচের তলিয়ে গেছে ঘূর্ণীঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণীঝড় ‘মিধিলি’ মারাত্মক কোন আঘাত না হানলেও দু’দিনের অবিরাম বৃষ্টির কারনে এবং নি¤œচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারনে আমনধান সহ রবি শষ্যের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। যদিও কৃষি বিভাগ বলেছে- ঝড়ে তেমন একটা ক্ষতি হয়নি।
পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, চলতি বছরে জেলায় ৬৫ হাজার ৬১৪ হেঃ জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। ঘূর্ণীঝড় ‘মিধিলি’র কারনে প্রায় সকল জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেলেও ৬ হাজার ৫৬১ হেঃ জমির ১ লক্ষ ৩১ হাজার ২৩ মেঃ টঃ আমন ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমান ৩ হাজার ২৮১ লক্ষ টাকার মতন।
এ ছাড়া প্রায় ২০০ হেঃ জমিতে রবি শষ্যের চাষ হয়েছিল জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। কৃষি বিভাগের মতে এর মধ্যে ৪০ হেঃ জমির রবিশষ্য সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। যার পরিমান ৮০০ মেঃ টঃ এবং যার বাজার মুল্য ৮০ লক্ষ টাকা বলে ধারনা করেছে কৃষি বিভাগ। ডাল জাতীয় শষ্যের চাষ হয়েছে ১হাজার ৪১০ হেঃ জমিতে। এর মধ্যে ৪২৩ হেঃ জমির ডাল নষ্ট হয়ে গেছে, যার পরিমান ৪২৩ মেঃটঃ এবং বাজার মুল্য ৮৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বলে জানান উপ-পরিচালক ড. মো. নজরুল ইসলাম ।
কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। পিরোজপুর সদর উপজেলার রায়েরকাঠী এলাকার সবজি চাষি ফজলুল হকের চোখে মুখে দুঃস্বপ্ন। কারণ তার প্রায় আড়াই একরের সবজি ক্ষেত পানির নিচে। পানি সরে গেলেও কোনোভাবে রক্ষা করতে পারবেন না ফসল। এরই মধ্যে ক্ষেতের টমেটো, লাউ, শিম ও পেপে গাছ মরা শুরু করেছে। পানি নেমে গেলেও অনেক গাছ মরে যাবে। আর পানির নিচে তলিয়ে থাকা শাক-সবকজির চারাও পচে যাবে। চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকার উপর।
মঠবাড়িয়া খেতাছিড়া এলাকার কৃষক মোহম্মদ হোসেন আলী বলেন, সবেমাত্র ধান বের হয়েছে। এখনো পাকেনি। এরই মধ্যে ঝড়ে ধানগাছ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ধান কাটতেও শ্রমিক খরচ বেশি হবে। এমনিতেই ধান ক্ষেতে এবার ওষুধ খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে।
জেলা কৃষি স¤প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. নজরুল ইসলাম জানান, কয়েকটি স্থানে ক্ষেতে থাকা আমন ধানের গাছ ভেঙে পড়েছে। আমন ক্ষেত ও সবজি ক্ষেতে পানি জমে আছে। পানি দ্রæত নেমে গেলে ধানসহ ফসলের ক্ষতি কম হবে। তিনি আরও জানান, জেলাতে ৬৫ হাজার ৬১৪ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। শীতের সবজির আবাদ হয়েছে ২০০ হেক্টর জমিতে। ক্ষেতের আমন ধান এখনো কাঁচা। এ পর্যন্ত কিছু আগাম জাতের জমির ধান কাটা হয়েছে।

 

 

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...