ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - ঈদুল আযহা অর্থ হচ্ছে ত্যাগের উৎসব

ঈদুল আযহা অর্থ হচ্ছে ত্যাগের উৎসব


ঈদুল আযহা শব্দদ্বয় আরবি। এর অর্থ হচ্ছে ত্যাগের উৎসব।হযরত ইব্রাহিম (অাঃ),তাঁর স্ত্রী হযরত হাজেরা এবং তাঁদের প্রিয়তম পুত্র হযরত ইসমাইল (অাঃ) এর পরম ত্যাগের স্মৃতিস্বরুপ প্রতিবছর জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সারা বিশ্বের মুসলমানেরা মহা সমারোহে
পশু জবেহের মাধ্যমে যে অানন্দ উৎসব পালন করেন তাই ঈদুল অাযহা বা কুরবানি।এটা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। ঈদুল অাযহা শুধু উৎসব নয়,পরম অাত্ম ত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত ইবাদতও বটে।মহান অাল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে হযরত ইব্রাহিম(অাঃ),তাঁর স্ত্রী হযরত হাজেরা বিবিএবং তাঁদের প্রিয়তম পুত্র হযরত ইসমাইল (অাঃ) অাত্মত্যাগের এত বড় নজির মানব ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। অাল্লাহর নামে তাঁদের পরম ত্যাগের স্মৃতি পালনার্থে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা কোরবানি করে থাকেন।কুরবানির তাৎপর্য হলো ত্যাগ,তিতিক্ষা ও প্রিয় বস্তু অাল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে উৎসর্গ করা। মুসনাদে আহমদ,তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজা শরীফে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সঃ বলেছেন, কুরবানী প্রত্যেক সমর্থবান ও বালেগ মুসলিম নর-নারীর উপর ওয়াজিব। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সঃ বলেছেন, “ঈদুল অাযহার নামাজের পর কুরবানির পশু যবেহ করতে হবে। নামাজের পু্র্বে কোরবানির পশু জবেহ করলে কুরবানি হবে না। শুধু তার পরিবারবর্গকে গোশ্ত পরিবেশন করা হবে।” কুরবানির পশু সু্ন্দর, মোটাতাজা ও অন্তত দুই বছর বয়স হতে হবে। কুরবানির পশুর প্রতিটি লোমের পরিবর্তে একটি করে সওয়াব কুরবানি দাতার আমলনামায় লেখা হয়। সুরা হজ্ব এর ৩৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, ” কুরবানির গোশ্ত ও রক্ত কিছুই তাঁর নিকট পৌঁছে না,কেবলমাত্র তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহভীতি পৌঁছে। ” কুরবানির মাংস নিজেরা খাবে ও আপরকে খেতে দিবে।হযরত মুহম্মদ সঃ বলেছেন যে, সম্পদ থাকা সত্তেও যদি কেহ কুরবানি না করে সে যেন ঈদগাহের কাছে না আসে। কুরবানি খাঁটি নিয়তে একমাএ আল্লাহর প্রতি তাকওয়া ও সন্তুষ্টি লাভের জন্য হতে হবে। কুরবানির মধ্যে তাকওয়ার পরিবর্তে রিয়া বা লোক দেখানো ভাব থাকলেই সে কুরবানি কবুল হয় না।নিখুত মোটাতাজা উট,গরু,ছাগল, মহিষ, ভেড়া ও দুম্বা ছাড়া অন্য পশু কুরবানি করা জাযেজ নহে।
কুরবানির শিক্ষাঃ কুরবানি মূলত ছিল আল্লাহর পরীক্ষা। তিনি হযরত ইব্রাহীম আঃ এর কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন। পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর প্রিয়তম পুএ ইসমাইল আঃ কে জবেহ করতেছেন। অতপর তিনি তাঁর পুএ হযরত ইসমাইল আঃ কে বলেন, হে বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে জবেহ করিতেছি। এখন তোমার অভিমত কি? হযরত ইসমাইল আঃ বলেন, হে আমার পিতা , আপনি স্বপ্নে যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং হযরত ইব্রাহীম আঃ তাঁর প্রিয় পুএকে জবেহ করতে কাত করে শায়িত করল , তখন ফেরেস্তা এসে হযরত ইসমাইল আঃ কে সরিয়ে তাঁর স্হলে বেহেশত থেকে একটি দুম্বা স্হাপন করে দিলেন। আল্লাহ বলেন, হে ইব্রাহীম, তুমিতো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে।এভাবেই আমি সৎকর্ম পরায়নদিগকে পুরষ্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই ইহা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। ( সুরা সাফ্ফাত, আয়াত নং -১০২১০৭)। আমাদের নিকটও আল্লাহর পরীক্ষা যে, আমরা তাঁর নির্দেশে আমাদের প্রিয় বস্তু বা পশু তাঁর জন্যে কতটা সন্তুষ্ট চিত্তে কুরবানি করতে পারি। আসুন, আমরা জাগতিক ভালবাসা থেকে বিরত থেকে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার পথে এগিয়ে আসি। আল্লাহ হাফিজ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...