ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - করোনাকালে কেমন কাটছে বাংলাদেশী প্রবাসীদের জীবন?

করোনাকালে কেমন কাটছে বাংলাদেশী প্রবাসীদের জীবন?


বৈশ্বিক এ মহামারি থেকে পৃথিবী দ্রুতই মুক্ত হবে এমনটাই আশা প্রবাসীদের। তাঁরপরেও প্রতিটি মুহূর্ত আতঙ্কে কাটছে এক অদৃশ্য অতি ক্ষুদ্র এক ভাইরাসের কাছে। আতঙ্কের পাশাপাশি নগদ অর্থের অভাব, কর্মহীন জীবনের অনিশ্চয়তা এবং দেশে থাকা স্বজনদের জন্য চিন্তায়-উৎকন্ঠায় ভালো নেই তাঁরা। ইতিপূর্বে বিভিন্ন দুর্যোগে বা সংকটে প্রবাসে অনেক সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনকে সক্রিয় দেখা গেলেও করোনা পরিস্থিতিতে তারাও মাঠে নেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন, তাঁরাও এখন আতঙ্কে ঘরবন্দি।

সবার মনে একটাই প্রশ্ন কখন থামবে এই অদৃশ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। কারণ ইতিমধ্যে প্রিয় মাতৃভূমিতে করোনাভাইরাস আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে কেউই নিরাপদ নয়। এখন তাঁরা নিজের চেয়ে ভয় আর আতঙ্ক প্রিয় মাতৃভূমিতে থাকা পরিবার এবং প্রিয়জনদের নিয়ে। না জানি কখন কোথায় কোনো প্রিয়জন আক্রান্ত হন। চারদিকে মানুষের অসহায়ত্বের কথা ভাবলে চোখের কোণে পানি চলে আসে। একদিকে ক্ষুধার আর্তনাদ, অন্যদিকে করোনার ভয়। এ যেন উভয়সংকটে পড়ে আছেন আমাদের মাতৃভূমির দিনমজুর গরিব মানুষগুলো। আমরা তো তা–ও দুবেলা দুমুঠো খেয়ে কাটিয়ে দিলাম। কিন্তু যারা দিনে এনে দিনে খায়, তাদের তো আর বাসায় বসে থাকার উপায় নেই।

মানুষ কত সমস্যায় জর্জরিত করোনাকালে তাঁর একটি চিত্র দেখা যায়। বিশ্বব্যাপী মানুষকে বলা হলো স্টে হোম, স্টে সেইফ। কিছুদিন পর অধিকাংশ মানুষ বলে উঠল ভাতের জন্য তারা মরতে প্রস্তুত, তবু এভাবে ঘরে অভুক্ত থাকতে চায় না। এ থেকে বোঝা যায়, মানুষের সঞ্চয় কত কম। আমেরিকার মতো দেশেও লকডাউনবিরোধী মিছিল করতে দেখা যায়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই নিজ উদ্যোগে ঘরে না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ইতালির চেয়ে ভয়ংকর অবস্থা হবে বাংলাদেশে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যানের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় বিশ্বে এক শটির মতো দেশে যখন এই মহামারি ছড়ায়, তখন আমাদের বাংলাদেশে কোনো করোনা সংক্রমণ রোগীর অস্তিত্ব ছিল না। ঠিক তখন যদি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো সাময়িক বন্ধ থাকলে হয়তো আজকে আক্রান্তের সংখ্যা এমন হু হু করে বাড়ত না। অর্থনৈতিকভাবে সাময়িক দেশের যে ক্ষতি হতো, তা হয়তো বৃহৎ আকার ধারণ করত না। যে কাজটা করে ভিয়েতনাম করেছিল, তাই তারা আজ সফল।

করোনায় মৃত প্রিয়জনকে শেষবার দেখার সুযোগ পায়নি বহু মানুষ। কোথাও আবার ভয়ে প্রিয়জনকে দাহ বা কবর দিতে আসেনি কেউ, হয়তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কোনো স্বেচ্ছাসেবীর হাত ধরে নিতে হচ্ছে শেষ বিদায়। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে আল্লাহ যেন আমাদের পরিবার, দেশকে হেফাজত করেন। প্রবাস থেকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

প্রতিদিন মনে হয় এই তো আর কয়েকটা দিনের পর পৃথিবীটা আবার প্রাণ খুলে হাসবে। আবার আমরা নির্বিঘ্নে মাস্ক ছাড়া নিশ্বাস নিতে পারব। সবাই ফিরে যাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে। সবাই মিলেমিশে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রেখে একে অপরের সাথে হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় হবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশিত দিনগুলো যেন দূরে ঠেলে দিচ্ছে।

– মীর তারেক
কুয়েত প্রবাসী।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...