ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - ডেসটিনি-যুবকের পথেই কি পিরোজপুরের এহসান গ্রুপ ? গ্রাহকরা ধুম্রজালে

ডেসটিনি-যুবকের পথেই কি পিরোজপুরের এহসান গ্রুপ ? গ্রাহকরা ধুম্রজালে

পিরোজপুর প্রতিনিধি <>
হায় হায় কোম্পানি খ্যাত প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি, যুবক, পে-টু ইউ, ডোলেঞ্চার, বাগেরহাটের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট কোম্পানির পথেই কি যাচ্ছে পিরোজপুরের এহ্সান গ্রুপ ? এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুফতি রাগীব আহসান এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১১ কোটি টাকা আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগের মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। তাই পিরোজপুরের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের ধারণা ও আশঙ্কা দেশের বিভিন্ন হায় হায় কোম্পানির মতোই এ অতি লভাংশ দেয়া প্রতিষ্ঠান এহ্সান গ্রুপ একই দিকে এগুচ্ছে। এ দিকে বিভিন্ন অন-লাইন মিডিয়া ও ফেসবুকের মাধ্যমে এহসান গ্রুপের কর্ণধার মুফতি রাগিব হাসানের ১১ কোটি টাকার চেক জালিয়াতী মামলায় জেল হাজতে যাবার ঘটনা জানতে পারার পরপরই এহ্সান গ্রুপ এর গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং এ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তারা গ্রাহকদের রেখেছে ধু¤্রজালের মাঝে। এ বিষয়ে এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশের বর্তমান কার্যক্রম ও তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের দিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্শন কামনা করছে গ্রাহকরা।
এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তাদের পিরোজপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেলে সেখানে পাওয়া যায়নি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত তেমন কোন কর্মকর্তাকে। এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ এর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নূর-ই মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট একাডেমির অধ্যক্ষ মুফতী রাগীব আহসান সম্পর্কে এ প্রতিষ্ঠানে জানতে গিয়ে পাওয়া যায়নি প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আবুল বাশারকে। তার ফোনে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষক শামীম আহসান জানান, অধ্যক্ষ কোথায় আছে সেটা তাদের জানার দরকার নেই প্রতিষ্ঠান চলছে সেটাই কথা। এছাড়া তিনি আর কিছু বলতে চাননি।
এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ এর আরেকটি প্রতিষ্ঠান এহ্সান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি: এ গিয়ে পাওয়া যায়নি এ প্রতিষ্ঠানের ডিএমডি মাওলানা নাজমুল ইসলামকে। তার ফোনে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্রতিষ্ঠনের কর্মরত অন্যরা জানান তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজে শহরের বাহিরে আছেন।
এ প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষক মো: জামাল সরদারের কাছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুফতী রাগীব আহসান সম্পর্কে জানাতে চাইলে তিনি জানান তারা জানেন তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচলক ঢাকায় আছেন। তবে কোন অবস্থানে আছেন সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
এছাড়া এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ এর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর বস্ত্রালয়, আল্লাহরদান বস্ত্রালয়, এহসান মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ও হোটেল মদিনায় এ গেলে তারা কোন কথা বলতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এহসান গ্রুপের সাবেক গ্রাহকরা জানান, অধিক মুনাফা বা লাভের আশা দেখিয়ে স্থানীয় কিছু মানুষের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এহ্সান গ্রুপ। তবে বর্তমানে তাদের কার্যক্রম ও তাদের ব্যবসা পরিচালনা বিগত দিনের বিভিন্ন হায় হায় কোম্পানির ছায়া পাওয়া গেছে। তাই তাদের ধারণা এ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা কোন ভাবে যেন প্রতারনার শিকার না হয় এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন গ্রাহকরা।
এ দিকে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে বিরাজ করছে গভীর আতঙ্ক। তারা এহ্সান গ্রুপ এ কার্যক্রম ও প্রতিষ্ঠানের ব্যস্থাপনা পরিচালক মুফতী রাগীব আহসান কোথায় আছেন তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধু¤্রজান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করে জানান, ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিরচালনার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা জমা নেয়া হয়েছিল। তবে এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম তাদের কাছে বর্তমানে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তারা তাদের টাকা উত্তোলন করে নিয়ে আসছেন। তারা আরো অভিযোগ করে জানান, এহ্সান গ্রুপের যে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর বস্ত্রালয় ও আল্লাহর দান আছে তাতে নিন্মমানের মালামাল অধিক টাকায় বিক্রয় করা হয়। যা তাদের গ্রাহকদের সাথেও একটি প্রতারণা।
জানাযায়, পিরােজপুর জেলাধীন বড় খলিশাখালী নিবাসী আব্দুর রব খাঁ এর জ্যেষ্ঠ পুত্র মুফতি রাগীব আহসান ২০১০ / ২০১১ সাল থেকে এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামীয় একটি এম . এল . এম কোম্পানী দিয়ে যাত্রা শুরু করেন । এখানে গ্রাহকদের প্রতি এক লক্ষ টাকা জমার বিপরীতে মাসে ২ হাজার ২শত টাকা সুদের নামে মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মুফতি রাগিব হাসান । এর পূর্বে মুফতি রাগীব আহসান পিরোজপুরে ইয়াসিন খা ব্রিজ সংলগ্ন মকতব মসজিদে নামমাত্র বেতনে ইমামতি করতো । পরবর্তীতে একটি এম . এল . এম কোম্পানীতে চাকুরী করেছে । সেই এই চাকুরীর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজে পিরোজপুর জেলায় এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামীয় কোম্পানী যা পরে এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ নামের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এবং বিভিন্ন প্রকল্পের নামে হাজার হাজার সাধারন মানুষ থেকে শত শত কোটি টাকা জমা নিচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানে টাকা জমার বিপরিতে লভাংশ যে টাকা দেয়া হচ্ছে তা রীতিমত মানুষের কাছে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ সাধারণ হিসেবে যে কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান টাকা জমার বিপরীতে সুদের হার ৬- ৬.৫% নেমে আসলেও মুফতি রাগীব আহসান এহসান গ্রুপ থেকে ২০-৩০ % উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করছে। তাই স্থানীয়দের অনেকরে ধারণ অধিক টাকা হলেই এ প্রতিষ্ঠান অন্য সকল হায় হায় কোম্পানির মতই এ প্রতিষ্ঠান সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আত্মোসাৎ করতে পারে। এ জন্য তারা প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষন করছেন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...