খালিদ আবু,পিরোজপুর >
৩৫ তম বিসিএস পরিক্ষায় উত্তীর্ণ পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের একপাই জুজখোলা গ্রামে আরিফুলের ভেরিফিকেশন (যাচাই-বাছাই) করতে গিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েন পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বিশ্বাস। ওসি মাসুমুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আরিফুরের ভেরিফিকেশন করতে গিয়ে জানতে পারি তার বাবা একজন দিনমজুর। এ সময় শূন্যে ভিটা দেখে চোখে পানি চলে আসে। এরপর তার বাবাকে থানায় ডেকে এনে ফুল দিয়ে অভিনন্দন ও মিষ্টি খাইয়ে ভেরিফিকেশন করে দেই।
দিনমজুর পিতা আলতাফ শেখ এর দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে আরিফুল বড়। আরিফুল ২০০৬ সালে খানাকুনিয়ারী দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। ২০০৮ সালে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন। তিনি ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস অনার্স এবং ২০১৪ সালে এমএসএস পাশ করেন। পরে ৩৫ তম বিসিএস পরীক্ষায় অরিফুর সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন। আরিফুর বলেন, বাবা কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রাইভেট পড়িয়ে পড়াশুনা করেছি। এবং সকলের দোয়ায় বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়েছি।
আলতাফ শেখ জানান, আমি গরীব মানুষ দিন মজুরি করে ছেলেকে মানুষ করেছি। আমার বড় ছেলে কষ্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছে। ছেলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েছে, এটা আমার গর্বের বিষয়। আমার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে আরিফুর বড়। মেজ ছেলে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে অনার্স চতুর্থ বর্ষে এবং ছোট মেয়ে পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করে। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার জন্য বসত ঘরটি বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আমার আর কোন দুঃখ নেই।
তিনি বলেন, আজ আপনারা আমাকে যে সন্মান দেখিয়েছেন এতে আমার সারা জীবনের পরিশ্রম,কষ্ট সার্থক হয়েছে। তিনি সকলের কাছে তার ছেলে মেয়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন।