ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - মঠবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষকের মারধরে শিক্ষার্থী হাসপাতালে !

মঠবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষকের মারধরে শিক্ষার্থী হাসপাতালে !

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা ফাঁস করায় শফিকুল ইসলাম (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নির্দয়ভাবে মেরে গুরুতর আহত করেছে প্রধান শিক্ষক । আহত পরীক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম গত দুই দিন ধরে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার দুপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলার বুখইতলা বান্ধবপাড়া সম্মিলিত (বিবিএস) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. মাহফুজুর রহমান নিজ কক্ষে শিক্ষার্থী শফিকুলকে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে । এসময় স্কুলের আরও দুইজন শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। মাধরের শিকার শফিকুলের পরিবারের অভিযোগ বিদ্যালয়ে এসএসসি ফরম পূরণে প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত ফি আদায় করেছেন এমন কথা প্রকাশ করার অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুলকে নির্দয়ভাবে মারধর করে।

আহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার বুখইতলা বান্ধবপাড়া সম্মিলিত (বিবিএস) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রতি এসএসসি’র ফরম পূরণে ৫৮ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কাছ থেকে ৫ হাজার, দুই বিষয়ে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে ১০ হাজার এবং তিন বিষয়ে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা আদায় করে নেয় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে স্কুল কর্তৃপক্ষ। গত ২০ নভেম্বর বুখইতলা গ্রামের দিনমজুর আবুল কালাম হাওলাদারের ছেলে ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী দুই বিষয়ে অকৃতকার্য শফিকুল ইসলামের কাছে প্রধান শিক্ষক ১৫ হাজার টাকা দাবি করলে তার অভিভাবকরা অনেক অনুনয় বিনয় করে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করে। ওই শিক্ষার্থী ফরম পূরণে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত অর্থ আদায় বাণিজ্যের কথা স্থানীয় লোকজনের কাছে ফাঁস করে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক মাহাফুজুর রহমান ওই শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে দুই শিক্ষকের উপস্থিতিতে বেদম মারধর করে। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের স্বজনরা তাকে স্কুল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

আহত শিক্ষর্থী শফিকুলের মা কোহিনুর বেগম অভিযোগ করেন, তার ছেলের ফরম পূরণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। পরে বাবার বাড়ি থেকে কর্জ করে ও শেষ সম্বল সেচ মেশিন বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা ছেরেল ফরম পূরণে দিয়েছি। স্কুলে বাড়তি টাকা নেওয়ার কথা এমনিতেই সবাই জেনেগেছে। আমার ছেলেকে দোষারোপ করে নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়েছে।

আজ রোববার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গেলে অভিভাবকরা জানান, বাছাই পরীক্ষায় সকল বিষয়ে উত্তীর্ণদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও শিক্ষার্থী রাশেদুল, রাবেয়া, কারিমা, মিরাজ, সলেমানের কাছ থেকে ফরম পূরণে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা নেয় প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহাফুজুর রহমান অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই স্কুলছাত্র গত কয়েকদিন ধরে স্কুলে না আসায় তাকে কয়েকটি কিল-থাপ্পর মেরেছি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন আহমেদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও মারধরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিন বলেন , শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে মারধরের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...