মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >>
গত তিন আগে দুই শিশুর পেটের কৃমি দমনে কৃষক মনিরুজ্জামান হাওলাদার নামি ঔষধ কোম্পানী স্কয়ারের দুটি এ্যালমেক্স (অষসবী) ক্রয় করেন। শুক্রবার রাতে প্লাস্টিকের বোতল ভর্তি এ্যালমেক্স ঔষধের ছিপি খুলে দেখেন তরল ঔষধ বিবর্ণ গুড়া। অনেকটা পোড়া কয়েলের গুড়ার মতোন। কৃমিনাশক এ্যালমেক্স তরল থাকার কথা। সন্দেহ হলে মনিরুজ্জামান আজ শনিবার সকালে ওই ঔষধ ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট ফার্মেসীতে আসেন। এরপর ভূক্তভোগি ক্রেতা সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর বিক্রয় ম্যানেজার ও সেলম্যানের উল্টো তোপের মুখে পড়েন। এক পর্যায় ক্রেতাকে নাজেহাল করে তাকে থানা পুলিশের ভয়ভীতি দেখালে ক্রেতা বাড়িতে ফিরে যান।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরশহরের ফার্মেসী সড়কের মেসার্স আরিফ মেডিকেল হলে আজ শনিবার স্কয়ার কোম্পানীর দুটি এ্যালমেক্স ঔষধ ফেরত দিতে এসে এমন বিপাকে পড়েন।
মঠবাড়িয়ার টিকিকাটা গ্রামের ভূক্তভোগী মনিরুজ্জামান হাওলাদার অভিযোগ করেন, তিনি গত তিন দিন আগে তার দুটি শিশু ১৬ মাস ও ৫ বছর বয়সী দুই শিশুর কৃমিনাশক ওষুধ খায়ানোর জন্য মঠবাড়িয়া শহরের আরিফ মেডিকেল হল থেকে ১৫ টাকা দরে কৃমি নাশক দুটি এ্যালমেক্স ঔষধ ক্রয় করেন। শুক্রবার রাতে শিশুদের ওষুধ খাওয়ানোর জন্য একটি বোতলের ছিপি খুলে দেখেন তরল ঔষধ জমাটবাঁধা কাঠের গুড়া অথবা পোড়া কয়েলের ছাইয়ের মত। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওই ঔষধের মেয়াদ থাকলেও তরল ঔষধ বিবর্ণ গুড়া। মনে সন্দেহ হলে ওই ঔষধ শিশুদের সেবন করা থেকে তিনি বিরত থাকেন। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে সকালে তিনি সংশ্লিষ্ট ফার্মেসীতে ঔষধ ফেরত দিতে আসলে ঔষধের দোকানী তাকে দুটি নতুন ঔষধ দেন। এসময় ঔষধ ব্যবসায়ি সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে স্কয়ার ওষুধ কোম্পানীর স্থানীয় সেলসম্যান নিজাম উদ্দিন ও এরিয়া ম্যানেজার আবুল কালম আজাদকে খবর দেন। তারা দ্রুত ওই ফার্মেসীতে আসেন। এসময় ভূক্তভোগি ক্রেতা কোম্পানীর লোকজনদের কাছে জানতে চান, কৃমির তরল ঔষধ নষ্ট আপনারা খেয়াল করবেন না ? এ নষ্ট ঔষধ খেলে বাচ্চা তো মারা যেতে পারত ? এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সেলসম্যান নিজাম উদ্দিন তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। সেই সাথে কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ উল্টো ওই ক্রেতাকে বলেন, আপনি বাড়িতে বসে এগুলো বোতলে ঢুকিয়ে নিয়ে ফেরত দিতে এসেছেন । আপনাকে এখন পুলিশে ধরিয়ে দেব। এসময় দুই পক্ষে হট্রগোল সৃষ্টি হলে স্থানীয় বিভিন্ন দোকানীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে আরিফ মেডিকেল হলের মালিক মো. আরিফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওষুধে ভেত হয়তোবা হাওয়া ঢুকে তরল ঔষধ নষ্ট হতে পারে। এজন্য কোম্পানীর লোকজনদের থাকবে শান্তনা মূলক কথাবর্তা। কিন্তু সেলসম্যান নিজাম উদ্দিন ও এরিয়া ম্যানেজার আবুল কালম আজাদ ক্রেতার সাথে যে আচরণ করেছেন তো দু:খজনক । তবে ওই ক্রেতাকে নতুন ঔষধ বদলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্কয়ার কোম্পানীর স্থানীয় এরিয়া ম্যানেজার আবুল কালম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে ওষুধের বোতলে কাঠের গুড়ো আকৃতির ময়লা দেখানো হয়েছে। এটা হতে পারেনা। তিনি আরও বলেন আমরা তো চাকরি করি, আমরা ঔষধ তৈরী করি না। কিভাবে এমনা হলো বুঝতে পারছিনা। আমি কোম্পানীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করব।
তিনি ক্রেতা মনিরুজ্জামানকে পুলিশে দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই ক্রেতা আমাকে দুইবার মারমুখি আক্রমন করার চেষ্টা করলে আমি ক্ষিপ্ত হয়ে এটা বলেছি।
ছবি > জামান আবীর