ব্রেকিং নিউজ
Home - জাতীয় - পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণি’র আঘাতে দুই কোটি টাকার ক্ষতি। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গণপূর্ত মন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণি’র আঘাতে দুই কোটি টাকার ক্ষতি। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গণপূর্ত মন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

পিরোজপুর প্রতিনিধি >>
পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণি’র প্রভাবে গাছপালা ভেঙ্গে পড়াসহ নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কিছু এলাকায় পানি ঢুকে নি¤œঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার শাপলেজা ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। বড় মাছুয়া ষ্টিমার ঘাট বেড়িবাঁধ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দমকা হাওয়ায় কলাগাছ ও পেপে বাগানসহ কৃষিতে ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা কৃষি অফিস নিশ্চিত করেছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন । শনিবার দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলার বেকুটিয়া ফেরি ঘাটে তিনি এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বনাথ বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ, পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক প্রমুখ। এছাড়া শনিবার দুপুরে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, জেলায় প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ চাওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণি’র প্রভাবে মঠবাড়িয়ায় কাঁচা ঘরবাড়ি বির্ধ্বস্ত হয়েছে এবং জোয়ারের পানিতে বেশকিছু বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বলেশ্বর নদের তীরের মানুষ বেড়ি বাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় জলোচ্ছ্বাস এর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি.এম সরফরাজ জানান, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৭৯১টি পরিবার ও ৪ হাজার ৭৩২জন লোক ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে ২৩০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ৫৭২ একর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে ২৪৫টি কাঁচা ঘর ও ৪৩৭টি আংশিক কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্থহয়েছে। এছাড়া উপজেলার ২.৬ কিলোমিটার বেড়ি বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহম্মেদ জানান, মঠবাড়িয়া উপজেলার শাপলেজা ইউনিয়নের দুইটি পয়েন্ট থেকে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে খেতাচিড়া ও কচুবাড়িয়া এবং চরভোলমারা, ভাইজোড়া, নিজামিয়া প্রভৃতি গ্রামের নিচু এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
শাপলেজা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন জানান, শনিবার দুপুরে খেতাচিড়া ও কচুবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ্য বাঁধ মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, শুক্রবার দুপুরে মঠবাড়িয়ার খেতাচিড়া গ্রামে শতাধিক কাঁচাঘর বির্ধ্বস্ত হয়েছে।
জেলার ইন্দুরকানীতে ফণি’র প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ৮ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ইন্দুরকানী গ্রামের কলা চাষী আনোয়ার হোসেন জানান, তার তিন শতাধিক কলাগাছ ভেঙ্গে যাওয়ায় বেশ ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ায় বিদ্যুত লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলায় প্রায় ৪০টি কাচা ঘরবাড়ীর আংশিক ক্ষতি হয়। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গিয়ে ধান খেত, মুগডাল, ভুট্টার খেতের ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে একটি গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং স্থানীয় লোকজন দিনভর প্রচেষ্টায় গাছ কেটে প্রায় ১৬ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল আলম জানান মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও ব্যাপক প্রস্তুতির কারণে ভান্ডারিয়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কম হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন শনিবার বিকেলে নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে গেছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...