ব্রেকিং নিউজ
Home - জাতীয় - মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদে ইলিশের আকাল

মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদে ইলিশের আকাল

দেবদাস মজুমদার >>

উপকূলীয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে টানা ২২ দিন অবরোধ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা ছিলেন বেকার। প্রতিবছর অবরোধ শেষে আশানুরুপ ইলিশের দেখা মিলতো বলেশ^র নদে। এবার চিত্র উল্টো। সারাদিন রাত্রি জেলেরা নদ নদীতে ইলিশের জাল পেতে দুই চারটার বেশী ইলিশ পাচ্ছেন না। কেউ আবার সারাদিনে ইলিশ শূণ্য । ফলে বলেশ^র নদে জেলেদের তেমন কোন বিচরণ নেই। ইলিশের আকালে মঠবাড়িয়ার বলেশ^র নদ তীরবর্তী সাপলেজা,বেতমোর,বড়মাছুয়া ও তুষখালী জেলে পল্লীর জেলেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। জেলেদের জালে আশানুরুপ ইলিশ না ধরা পড়ায় অবরোধ শেষে চরম দুর্দিন যাচ্ছে। সেই সাথে ভূক্তভোগি জেলেরা দাদন আর এনজিওর ঋণের কিস্তির জালেও আটকা ।

ভূক্তভোগি জেলেরা জানান, মা ইলিশ ধরার ২২দিনের অবরোধের পর মহাজনের দাদানের টাকা আর ঋণের কিস্তি মাথায় নিয়ে বলেশ^র নদে মাছ ধরা শুরু করেন জেলেরা। প্রথম কয়েকদিন আশানুরুপ ইলিশ পান উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জেলেরো। এরপর আর ইলিশের দেখা নেই। বলেশ^র নদ তীরের খেতাছিড়া, কচুবাড়িয়া, ভাইজোড়া, ভোলমারা ও বড়মাছুয়া গ্রামের জেলে পল্লীরা জেলেদের এখন দুর্দিন চলছে। অবরোধের সময় জেলেদের উপার্জণ বন্ধ থাকায় সঞ্চয় এবং ঋণ নিয়ে জীবিকা চলে। অবরোধের সময় সরকার জেলে পরিবার প্রতি ২২ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা দিলেও এ সহায়তা ছিল অপ্রতুল। কর্তমানে বলেশ^র নদে মাছের আকালের কারনে জেলেরা নদীতে মাছ আহরণ করতে পারছেনা। ফলে জেলেরা এখন বেকার । তাদের সময় কাটছে জাল মেরামত কিংবা দিনমজুরী করে।
খেজুরবাড়িয়া জেলে পল্লীর জেলে ইউসুব আলী হাওলাদার জানান, নদীতে অবরোধ শেষ হওয়ার সপ্তাহ খানেক ইলিশ মাছ ধরা পড়েছিল। এখন জেলেরা জাল ফেলে কোন ইলিশ মাছ না পাওয়ায় হতাশ। ফলে জেলেরা নদীতে তেমন নামছেনা। এতে জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়ার বলেশ^র নদ তীরবর্তী তালিকাভূক্ত জেলের সংখ্যা ৬হাজার ৫৮৪জন –জন। এদের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার জেলে ইলিশ মাছ আহরণে সরাসরি যুক্ত। তবে তালিকার বাইরে আছে দ্বিগুনেরও বেশী জেলে।

খেতাছিড়া গ্রামের জেলে আবুল কালাম খান বলেন, আশায় ছিলাম অবরোধের পর আশানুরুপ ইলিশ নদীতে পামু। পাইলে অবরোধের ক্ষতি আর ধার কর্জ কাটিয়ে উঠতে পারমু। নদীতে ইলিশের দেখা নাই। মনেও শান্তি নাই। দাদন ও কিস্তি পরিশোধে কষ্টের শ্যাষ নাই।

বড়মাছুয়া গ্রামের জেলে নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সারাদিন জাল ফেলার পর ২/৩টা ইলিশ মেলে। কেউ আবার মোটেও পায়না। এমন হইলে আমাগো কেমনে চলে।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেশ্বর নদে ইলিশের আকাল নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর নদীতে অবরোধ শেষ হলে জেলেরা কয়েকদিন আশানুরুপ ইলিশ পান। বর্তমানে বলেশ^র নদে ইলিশের আনাগোনা কিছুটা কম। যে সকল জেলে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন তারা ভাল ইলিশের দেখা পাচ্ছেন। তবে উপকূলীয় নদ নদীতে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আশা করা যাচ্ছে ইলিশের আনাগোনা বাড়বে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...