ব্রেকিং নিউজ
Home - জাতীয় - পাথরঘাটার বিস্মৃত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ! 🇧🇩️

পাথরঘাটার বিস্মৃত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ! 🇧🇩️

মির্জা খালেদ,পাথরঘাটা (বরগুনা) ➡️

উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ অযতœ ও অবহেলায় পড়ে আছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এ স্মৃতিস্তম্ভটি স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও সুরক্ষিত হয়নি। অথচ বিস্মৃত এ স্মৃতিস্তম্ভটি পাথরঘাটা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার একমাত্র স্মারক। বেদীহীন খর্বকায় অরক্ষিত এ স্মৃতিস্তম্ভটির চত্বরে জুড়ে স্থানীয় জনমানুষ সকল দাবি ও আন্দোলনে আজও সমবেত হয়।
জানাগেছে, ১৯৭৫ সালে পাথরঘাটা শহরের প্রাণকেন্দ্রের খাস কাচারী ময়দানে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল ৮ফুট উচ্চতার একটি স্মৃতিফলক। বেদীহীন মাটির ওপর নির্মিত এ স্মৃতিস্তম্ভটি ১৯৭৫ সালের ২০ শে আগস্ট তৎকালীন বরগুনা মহকুমার প্রশাসক মো. সিরাজুউদ্দীন আহম্মদ এ স্মৃতিফলকটি আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন। সেই থেকে সকল জাতীয় দিবস গুলোতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি স্থানীয় সকল সভা সমাবেশ আয়োজন করে আসছেন। জাতীয় দিবস সমুহে এর বেদীতে পুস্পার্ঘ অপর্ণ ও তোপধ্বনী দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সূচনা হয় । কিন্তুজাতীয় বীরদের সম্মানীয় কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভেও হতশ্রী দশা । দেশের সকল অবকাঠামো উন্নয়ন আমূল পরিবর্তন হলেও ৪৬ বছরে ঐতিহ্যের এ স্মৃতিস্তম্ভটি কোন উনয়ন ঘটেনি। স্মৃতিস্তম্ভকে ছায়াদানকারি কয়েক যুগের রেইন্ট্রি বৃক্ষটির আজ মৃত দশা । স্মৃতি স্তম্ভটির কোন উচ্চ বেদী না থাকায় এটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
পাথরঘাটার প্রবীণ কবি মো.ইদ্রিস আলী বলেন, পাথরঘাটা শহরের খাসকাচারির মাঠ ছিল স্বাধীনতা পুর্ব সকল আন্দোলন ও সভা সমাবেশের কেন্দ্র বিন্দু। উপজেলা ভূমি অফিসের সামনেই এর অবস্থান। এ মাঠেই শহীদ যোদ্ধাদের স্মরণে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভ দাড়িয়ে আছে এক রকম অবহেলা ও অযতেœর পরাকাষ্ঠা নিয়ে। পাাথরঘাটা উপজেলায় একাত্তরের যুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালে বরগুনার তৎকালিন মহকুমা প্রশাসক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ এই স্তম্ভটি নির্মান করেন এবং কয়েক জন শহীদের নাম খচিত একটি পাথর সেখানে লাগানো হয়। আমাদের দুর্ভাগ্য মুক্তিযুদ্ধে পাথরঘাটা অঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের স্মারকটি আজও খর্বকায় আর উপেক্ষায় পড়ে রয়েছে।
পাথারঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিবছর বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে এই স্মৃতিস্তম্ভের বেদীতে ফুল দিয়ে সম্মান প্রদর্শন ও গান স্যালুট দেই। বছরে দুই একবার বেদীতে চূন রঙের প্রলেপ ছাড়া স্মৃতিস্তম্ভটি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। অথচ জাতীয় দিবসে এই বিস্তৃত বেদীতে সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন,মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,ব্যবসায়ী,নতুন প্রজন্মের শিশুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ সমবেত হন। স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও সুউচ্চ দৃষ্টিনন্দন একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ না হওয়া দুর্ভাগ্যের। আমরা সকল শহীদদের তালিকা সম্বলিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানাই।
পাথরঘাটা শহরের ব্যবসায়ী তপন দাস বলেন যুদ্ধের শুরতেই আমার বাবা,দুই ভাইকে হারাই। হানাদার বাহিনী তাদের ডেকে নিয়ে মেরে ফেলে। কিন্তু তাঁেদর স্মরণে রাখার মত একটি স্থান আজও সরকার করতে পারেনি ।
পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজের সম্মান শ্রেনির ছাত্রী তানজিলা রহমান তন্বী বলেন, আমরা যুদ্ধ দেখিনি বা সকল শহীদ যোদ্ধাদের নাম জানিনা। একটি সার্বজনীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং নাম ফলক এখন সময়ের দাবি।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পাথরঘাটা উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার মো. আবদুল মন্নান জানান, বর্তমান স্থানেই একটি স্তম্ভ নির্মাণ সম্ভব। মন্ত্রনালয় থেকে বিশেষ বরাদ্ধ এনে বিশেষ কাজের অনেক কথা শুনি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্মারক নির্মানে বাধা কোথায় বলে তার প্রশ্ন প্রশাসনের প্রতি।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.হুমাউন কবীর বলেন,আমি এক মাস হয় এই কর্মস্থলে যোগদান করেছি । তবে শুনেছি এয একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, উপজেলা শহরে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ পরিকল্পনা আছে। আমিও শহীদ পরিবারের সন্তান। এজন্য ১৪ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প তৈরী করা হয়েছে কিন্তু স্থান সমস্যা নিরসনে জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বিষয়টি অচিরেই সুরাহা হবে। ।##

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...