মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >
“নাইট-কুইন” কে রাতের রানী বলা হয়। দূর্লভ একটি ফুল বলা হয় যাকে। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এটা যতটা দূর্লভ ফুল ভাবা হয় আসলে ততখানি নয়।কিছু-টা বিরল ক্যাকটাস জাতীয় এ ফুলটির আদি নিবাসআমেরিকার দক্ষিণাঞ্চল এবং মেক্সিকো।নাইট কুইনের বৈজ্ঞানিক নাম peniocereus greggii ।যার দেখা মেলে গাছ লাগানের অনেক দিন পর । প্রচলিত ভাষায় এটাকে সৌভাগের প্রতিক বলা হয়।এর বৈশিষ্ট হচ্ছে- এ ফুল বছরে মাত্র একবারই ফোটে।
নাইট কুইন ফুল নিয়ে পৃথিবীজুড়ে বহু কাহিনী ছড়িয়ে আছে। সবচেয়ে বিখ্যাতকাহিনীর অবতারণা ঘটেছিল দু’হাজার বছর আগে বেথেলহ্যাম নগরীতে। তখননগরীর প্রত্যেক বাড়িতে নাইট কুইন গাছ ছিল। এক রাতে ঘটল আশ্চর্যজনকঘটনা। প্রতিটি বাড়ি নাইট কুইন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেল। এ ঘটনায় কৌতূহলীনগরবাসী এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে দৌড়াতে লাগল। তারা কেউই বুঝেউঠতে পারল না প্রকৃতি কেন এক অজানা উৎসবে মেতে উঠেছে। পরে অবশ্য সবাই আসল ঘটনা বুঝতে পেরেছিল। সেই রাতে বেথেলহ্যামের ঘোড়ারআস্তাবলে জন্ম হয়েছিল এক মহাপুরুষের, তিনি যিশু খ্রিস্ট। বেথেলহ্যামের সব নাইট কুইন সে রাতে মেতে উঠেছিল যিশু খ্রিস্টের জন্মোৎসবে। এ জন্য এ ফুলটি ‘বেথেলহ্যাম ফ্লাওয়ার’ নামে পরিচিত।
অনেকটা পদ্ম ফুলের মত দেখতে, রং সাদা । মৃদু একটা সৈরভ আছে। ফুল ফুটে থাকে রাতের শুরু থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত।মধ্য রাত পার হলেই ফুল মিইয়ে যেতে শুরু করে।আর সেই রাতের অন্ধকারেই হয় তার জীবনাবসান। নাইট কুইনের জন্ম বীজ থেকে নয়, পাতা থেকে।
একটুকরো পাতা ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে রাখলে কয়েক দিনের মধ্যে ছেঁড়া পাতার চারদিকে চারা গজিয়ে ওঠে। আমাদের দেশে এ ফুল ফোটে বর্ষাকালে(জুলাই-আগস্ট)। বর্তমানে এর বিস্তার বিশ্বজুড়ে। আমাদের দেশেও রয়েছে এর বিস্তার।
দৈনিক ইত্তেফাকের মঠবাড়িয়া সংবাদদাতা ও পৌর শহরের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুজ্জামান আবিরের বাসার ছাদে দেখা মিললো এক সাথে ৯ রাতের রানীর। শুক্রবার রাতে রফিকুজ্জামান আবিরের বাসার দোতালার ছাদে টবে লাগানো একটি গাছে দেখা মেলে বিরল প্রজাতির মিষ্টি গন্ধযুক্ত রাতের রানীর।
সাংবাদিক আবির জানান, ৮ বছর পূর্বে উপজেলার টিকিকাটার এক সাধু বাড়িতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ওই ফুল গাছটির চারা তিনি উপহার পান। দোতালার ছাদে টবে গাছটি লাগিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী পপি জামান নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গত ২ বছরের ন্যায় এবারও গাছটিতে ফুল ফোটে।
রাতে একটি একটি করে ৯টি ফুল ফোটে। ফুলের মিষ্টি গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশিরা রাতের রানীকে একবার দেখার জন্য ছুটে আসে তার বাসায়। গত দুই বছর তার ওই গাছে ৬টি ও ১৩টি ফুল ফুঁটেছিল। এবারও ৯টি ফুল ফোঁটায় তার পরিবার অত্যান্ত আনন্দিত।