আজকের মঠবাড়িয়া সত্য প্রচারে সোচ্চার 
দেবদাস মজুমদার : আজ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস । ১৯৮৭ সালের এ উত্তাল দিনে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বুকে পীঠে স্বৈচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক লিখে প্রতিবাদে অংশ নেন যুবক নূর হোসেন। সেদিন স্বৈরাচারের সশস্ত্র বাহিনী জনতার প্রতিবাদ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালালে নূর হোসেন ঢাকার রাজপথে শহীদ হন।
শহীদ নূর হোসেন এর পৈত্রিক নিবাস পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঝাঁটিবুনীয়া গ্রামে শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আজ তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, নূর হোসেনের স্মৃতি রক্ষার দাবিতে শোকযাত্রা, নূর হোসেনের পৈত্রিক ভিটায় ফুল ও ফলদ গাছের চারা রোপন ও মিলাদ মাহফিল এর আয়োজন করেছে।
শহীদ নূও হোসেন দিবসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেন এর পৈত্রিক ভিটায় স্মৃতি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও গ্রামবাসিরা। স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলনে জীবনদানকারী শহীদ নূর হোসেনের পৈত্রিক ভিটা মঠবাড়িয়ার নিভৃত পল্লী সাপলেজা ইউনিয়নের ঝাঁটিবুনীয়া গ্রামে। সেখানে জ্বরাজীর্ণ বাড়িতে এখন বসবাস করেন তাঁর বংশধরেরা।
শহীদ নূর হোসেনের স্বজন ও গ্রামবাসির আক্ষেপ, পৈত্রিক ভিটায় তাঁর স্মৃতি সুরক্ষায় আজও গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতি স্তম্ভ। মঠবাড়িয়া শহরে কোন চত্বর কিংবা ম্যুরালও নির্মিত হয়নি। প্রতিবছর নূর হোসেন এর গ্রামের বাড়িতে একটু মিলাদ আলোচনাসভা ছাড়া আর কোনও কর্মসূচিও পালিত হয়না।
গ্রামের স্থানীয় কতিপয় তরুণরা মিলে শহীদ নূর হোসেন চত্বর নামে তরুণদের একটি সামজিক প্লাটফর্ম, গ্রামে গড়ে ওঠা শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদ ও জাগো লক্ষ নূর হোসেন নামে একটি সংগঠন মিলে যৌথভাবে দাবি এবার দাবি তুলেছেন মঠবাড়িয়া পৌরশহরের থানাপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে শহীদ নূর হোসেন চত্বর, নূর হোসেনের ম্যুরাল, তাঁর নামে এবতেদায়ি মাদ্রাসারটির উন্নয়ন, গ্রামের বাজারটির নাম নূরের হাট আর তাঁর পৈত্রিক ভিটার উন্নয়ন ।
নূর হোসেন পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করেন তাঁর চাচাত ভাই মো. রুহুল আমীন হাওলাদার । তিনি বলেন, আমার ভাই গণতন্ত্রের জন্যই জীবন দিছে । তবে পৈত্রিক ভিটায় শহীদ ভাইয়ের স্মৃতি সুরক্ষায় কোন ব্যবস্থা আজও হইলো না।
শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নূরুল আমীন রাসেল বলেন, আমরা গর্বিত যে শহীদ নূর হোসেন আমার আপন জনপদের কৃতি সন্তান। তারুণ্যের অহংকার। বাংলার অধিকার আদায়ে যুগে যুগে এমন সাহসী তরুণরাই বুকের রক্ত দিয়েছে। শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতিবিজরিত মঠবাড়িয়া স্মৃতি রক্ষার দাবি সকল স্তরের মানুষের।
জাগো লক্ষ নূর হোসেন সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী হাসান বাবু ফরাজি বলেন, শহীদ নূর হোসেন আমাদের আপন জনপদের গর্বে এক বিস্ময় তরুণ। সে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জীবন দিয়েছে। আমরা তাঁর পৈত্রিক ভিটায় স্মৃতি সুরক্ষার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়ার বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী চঞ্চল কর্মকার বলেন, শহীদ নূর হোসেন আমাদের গর্বেও তারুণ্য। তাঁর পৈত্রিক ভিটায় একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ,একটি পাঠাগার নির্মাণ, মঠবাড়িয়া শহরে শহীদ নূর হোসেন চত্বর ও ম্যুরাল নির্মাণের দাবি জানাই।
