ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূল - আমাগো কতা কেউ ল্যাখেনা

আমাগো কতা কেউ ল্যাখেনা

দেবদাস মজুমদার : আমরা রাইত দিন করোনা ঠেকাইতে মাঠে কাম করছি। আমাগো জীবনের তো নিরাপত্তা নাই ।
আমাগো জীবন রক্ষার কোনও উপকরণ নাই। হেরপর লকডাইনে আমরাও অভাবে আছি। আমাগো গ্রাম পুলিশের কতা কেউ তো ল্যাখেনা। পিরোজপুরের কাউখালীতে করোনা সংকটে মাঠ পর্যায়ে কর্মমরত করোনা যোদ্ধা গ্রাম পুলিশ পঞ্চাশোর্ধ বয়সি আব্দুল মান্নান এমন আক্ষেপের কথা বলেন।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলার
৪৯জন গ্রাম পুলিশ সদস্য। একদিকে লকডাইনে পরিবারে অভাব আর অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে
করোনা সংকটের শুরু থেকে মাঠে নিবেদিত হয়ে কাজ করছেন এসব গ্রাম পুলিশ সদস্যরা।
জানাগেছে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তালিকা তৈরি ও তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা ব্যক্তিদের অবিরাম নজরদারি, সামাজিক দুরত্ব সম্পর্কে সচেতন করাসহ অন্যান্য সেবা প্রদানে নিয়োজিত রয়েছে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া সন্ধ্যায় বিভিন্ন অলিতে-গলিতে,
মোড়ে-মোড়ে দোকান পাট বন্ধ নিশ্চিত করণ ও বাজারে হাটুরে লোকসমাগম ঠেকাতে যেমন কাজ করছেন তারা। এছাড়া তেমনি জিআর, ভিজিডি, ভিজিএফসহ বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম যেগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিড় হয় সেখানেও দায়িত্ব পালন করছে। পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ ছাড়া এসব
দায়িত্ব পালন করার কারণে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা অন্যদের তুলনায় অধিক পরিমাণে করোনা আক্রান্তের
ঝুঁকিতে রয়েছে।
সারা বাংলাদেশের ৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশের ৬ হাজার ৫শত এবং ৭ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ থাকলেও ইউপি অংশের অর্ধেক বেতনের টাকা করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় ৮মাস ধরে বেতন বকেয়া রয়েছে। আগামী জাতীয় বাজেটে গ্রাম পুলিশ বাহিনীকে ৪র্থ শ্রেণীর
কর্মচারী হিসেবে অর্ন্তভূক্ত করাও দাবি করছেন গ্রামপুলিশ সদস্যরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনী কর্মচারী ইউনিয়ন পিরোজপুর জেলার সভাপতি দফাদার আব্দুল মান্নান জানান, করোনা বিস্তার রোধে গ্রামপুলিশ সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসছেন। তবে তাদের তেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ নেই। তাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে।
তিনি বলেন, উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের আবেদন গ্রাম পুলিশদের জন্য যেন সুরক্ষা উপকরণসহ ঝুঁকি ভাতা, স্বাস্থ্য বীমা ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ডাক্তার ব্যতীত অন্য কেউ পিপিই পরিধান করতে পারবে না তাই গ্রামপুলিশদেরকে প্রদত্ত রেইন কোট
পরিধান করে বাহিরে যেতে হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক, সাবান ও স্যানিটাইজার প্রদান করা হযেছে। আমি মনে করি গ্রাম পুলিশ সদস্যরা আমাদের করোনা যোদ্ধা
টিমের সদস্য, আমরা প্রণোদনা পেলে তাদেরও তা পাওয়া উচিত।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...