ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা


শিক্ষার সাথে ধর্মের সম্পর্ক নিবিড়। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্হ হচ্ছে পবিত্র কুরআন। কুরআন আরবী শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে পাঠ করা বা আবৃত্তি করা।খৃষ্টানদের বাইবেল হিব্রু শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে বই। ব্যাপক অর্থ হচ্ছে জ্ঞান বা শিক্ষা। আর্য তথা হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে বেদ। এর অর্থ হচ্ছে তত্ত্ব জ্ঞান। সুতরাং ধর্মগ্রন্হগুলোর নামের সাথে শিক্ষার সম্পর্ক আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষা কি? সাধারণ অর্থে বিদ্যা অভ্যাস বা জ্ঞান অর্জন করাকে শিক্ষা বলা হয়।যিনি যত বেশী পুঁথিগত জ্ঞান লাভ করেন, তিনি তত বেশী শিক্ষিত হিসেবে সমাজে পরিচিত। আভিধানিক অর্থে শিক্ষা হচ্ছে, শেখা,অভ্যাস, চর্চা, বিদ্যাভ্যাস,অধ্যয়ন, জ্ঞান অর্জন ও চরিত্র উন্নয়ন। শিক্ষার তাৎপর্য হচ্ছে, মানুষের সহজাত বৃত্তি বা সম্ভাবনাকে বিকশিত ও পরিচালিত করাই শিক্ষার কাজ। অন্য কথায়, শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক বিকাশ সাধন করে তাকে প্রতিষ্ঠিত জীবনের দিকে পরিচালিত করাই শিক্ষার কাজ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা? বর্তমানে জাতীয় জীবনকে চরম নৈতিক বিপর্যয় থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষা একান্ত আবশ্যক। জাতীয় জীবনে মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠাের একান্ত প্রয়োজনে দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক আমাদের শিক্ষার্থীদের চিত্তে দেশপ্রেম, ধর্মনিষ্ঠা,নৈতিকতা, সততা,সত্যপ্রিয়তা,শৃঙ্খলাবোধ, সহিষ্ণুতা, কর্তব্যসচেতনতা এবং দেশের মানুষের প্রতি মমত্ত্ববোধ সৃষ্টি করার জন্যে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই।
মুসলিম মনিষীগণ শিক্ষা ব্যবস্হায় ধর্মীয় শিক্ষার প্রাধন্য দিয়েছেন। অমুসলিম মনিষীগণও ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার পক্ষে মত দিয়েছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্ট্যানলী হল, জন মিল্টন, এ্যলবার্ট স্কেজার, প্রফেসর হিম্যান এইচ হোম,শিক্ষা বিজ্ঞানী রাস্ক,নান এমনকি গ্রীক দার্শনিক প্লাটো ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষাকে অস্বীকার করেন নি। শিক্ষা বিজ্ঞানী স্ট্যানলী দ্ব্যর্থহীনভাবে ধর্মীয় শিক্ষা তথা নৈতিক শিক্ষার পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেন,” যদি শিক্ষার্থীকে ধর্মকে বাদ দিয়ে শুধু পড়তে,লিখতে ও আংক করা শিখালে তারা দুষ্ট হয়ে পড়বেই।” জন মিল্টন বলেন, ” শিশুর শরীর, মন ও আত্মার বিকাশ ঘটাতে হলে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। ”
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে।এর মধ্যে মুসলিম দেশগুলো ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত উল্লেখযোগ্য। ভারতে ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্হার সাথে বাংলাদেশের তুলনা করা যায়। হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্যে ভারতে দুটি ধারাকে অস্বীকার করে নি।এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও আমাদের দেশের জন্যে তা আদৌ গ্রহণযোগ্য কিনা? উত্তরে বলা যায় যে, ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষা প্রচলনে এদেশের মানুষের আগ্রহের ঘাটতি নেই। তবে এ শিক্ষার বিকাশ ঘটানোর দায়িত্ব সরকারের। নৈতিক অবক্ষয় থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সর্বস্তরে ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

 

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...