ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - ভালোবাসা দিবসে ঘর ও কর্মসংস্থানের দোকান ঘর পেল ভ্যানচালক অসহায় রুমা বেগম

ভালোবাসা দিবসে ঘর ও কর্মসংস্থানের দোকান ঘর পেল ভ্যানচালক অসহায় রুমা বেগম


খালিদ আবু, পিরোজপুর 🔴🟢
অভাবের তাড়নায় মাত্র ছয় বছর বয়সে তাকে পিরোজপুর শহরের রাস্তায় ফেলে যান তার স্বজনেরা। সেই থেকে ফুটপাতে বেড়ে ওঠা। ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালিয়েছেন তিনি। ভ্যান চালিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন এই নারী। এর পরে বিয়ে ? বিয়ের সাড়ে সাত বছর পর তার কোলজুড়ে আসে এক ছেলেসন্তান । নাম রাখেন মো. ইব্রাহিম। এখন ছেলের বয়স ৫ বছর। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হলো না। দুই বছর আগে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে রুমা ও তার ছেলেকে ছেড়ে চলে যান। আবার একা হয়ে যান রুমা। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেন। মানুষের কটুক্তিকর কথা ও মনের দুঃখে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বারবার। কিন্তু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিরে আসেন। ছেলে কোলে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে ফুটপাতে থেকে জীবন চলছিল তার। ভিক্ষা করে ঠিকমত তিনবেলা খাবার জুটছিল না। তখন ভ্যান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন রুমা। ছেলেকে ফুটপাতে রেখে ভ্যান চালাতে শুরু করেন। ভ্যান চালিয়ে একবেলা খাবার খান। অনেক সময় না খেয়ে থাকেন। ফুটপাতে বস্তা গায়ে দিয়ে ঘুমান। লোকে কটু কথা বললেও সহ্য করেন।
স্থানীয় সাংবাদকর্মী আবির হাসান তার এই দুঃখময় জীবনের কথা তুলে ধরেন সংবাদের মাধ্যমে। যা পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ এর নজরে আসলে তিনি রুমা বেগমের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন।
আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের সকালে সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠী গ্রামের রুমা বেগমের ঘরের পাশেই তার নিজস্ব কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি দোকানের চাবি হস্থান্তরের মাধ্যমে দোকানের উদ্বোধন করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ। সদর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় ও সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্থায়নে আজ দোকান পেয়েছে রুমা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসার ফারজানা আক্তার, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মতিউর রহমান, টোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইমরান আলম খান হারুন, সাংবাদিক আবির হাসানসহ আরো অনেকে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ জানান, রুমা বেগম শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। তিনি একজন বিধবা নারী। তার ঘর বা আশ্রয় কিছুই ছিল না। তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর প্রদান করা হয়েছে। ঘরের পাশেই কর্মসংস্থানের জন্য তাকে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ও সদর উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের অর্থায়নে একটি দোকান দিয়ে মালপত্র কিনে দেয়া হয়েছে। আশা করছি তিনি এটি পরিচালনা করে সাবলম্বী হতে পারবেন এবং তার আর কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে না।
এসময় দোকান পেয়ে রুমা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমারে একখান ঘর দিছে। পাশেই ইউএনও স্যার আমারে একটু দোকানের ব্যবস্থা করে দিছে। আমার এই দিয়ে এখন সংসারটা চলবে এবং আমি এখান থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার সপ্ন দেখছি। আগে ভ্যানগাড়ী চালাইতাম। আমার ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে ভালো ভাবে গড়ে তোলাটা এখন খুব সহজ হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...