পিরোজপুর প্রতিনিধি <>
পিরোজপুর জেলা জজ আদালতের স্টান্ডরিলিজ হওয়া জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান এখনও পিরোজপুর থেকে চলে না যাওয়ায় পুর্ব ঘোষিত আদালত বর্জন অব্যহত রেখেছে আইনজীবীরা। বুধবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক খান পান্না জানান, জেলা জজ আব্দুল মান্নান পিরোজপুর আদালতে যোগদানের পরপরই এখানকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন। তিনি নিজে যোগদানের পরপরই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ফুল দিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে তাদের দপ্তরে যান। যা কিনা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভুত কাজ । এছাড়াও তিনি আদালত কক্ষে স্বাধীনতা পক্ষের আইনজীবীদের সাথে প্রায়শঃই অসদাচারন করতেন। তিনি স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির গ্রুপের লোকজনদের তার খাস-কামরায় ডেকে নিয়ে বৈঠক করতেন। স্থানীয় এপেক্স ক্লাবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত যোগদান সহ স্বাধীনতা বিরোধী চক্রদের সাথে নিয়ে নিজ বাসায় ভাড়ায় নর্তকী এনে নাচ-গানের আসর বসাতেন। যা কিনা আদালতের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
সর্বোপরি মঙ্গলবার পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার সহধর্মীণী লায়লা পারভিনের একটি জামিন সংক্রান্ত্র আদেশের বিষয়ে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে জেলা জজ আঃ মান্নান গত ২৯ ফেব্রুয়ারী রাতে পিরোজপুর-১ আসনের এমপি ও মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের নাজিরপুর বাসভবনে মন্ত্রীর সাথে গোপন বৈঠক করেন। এরপরে জেলা জজ আঃ মান্নান এর সাথে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সম্পাদক একটি অনুষ্ঠানের দাওয়াত দিতে গেলে তাদের সাথে জামিনের বিষয় কথা বলেন জেলা জজ। তিনি আইনজীবী নেতাদের জানান সাবেক এমপি আউয়ালের জামিন দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। শ ম রেজাউল করিম এর নিষেধ আছে এ বিষয়। মন্ত্রীর কথা অমান্য করা তার পক্ষে সম্ভব না।
তার এই অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতি বারংবার তাকে অবহিত করা সহ ঢাকায় হাইকোর্টকে অবহিত করেন।
কিন্তু মঙ্গলবার পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার সহধর্মীণী লায়লা পারভিনের দুদকের দায়ের করা মামলার বিতর্কিত রায়ের পর আইনজীবীরা আদালত চত্তরে বিক্ষোভ করে এবং তার অন্যায় ও বিধিবহির্ভুত কাজের জন্য তার অপসারণ দাবী করে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করে। এরই প্রেক্ষিতে ওইদিনই দুপুরে মাননীয় রাষ্ট্রপতির অনমক্রিমে আইন ও বিচার মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব (প্রশাসন-১) শেখ গোলাম মাহবুব স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে স্টান্ড রিলিজ করা হয়। এর পরও তিনি পিরোজপুর থেকে চলে না যাওয়ায় আইনজীবীরা তাদের আদালত বর্জন অব্যাহ রেখেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এস এম বেলায়েত হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শুষেন কুমার হালদার, মানস কুমার বৈরাগি প্রমুখ।