পয়লা বৈশাখের সংস্কৃতির একটি দিক হলো এ দিনের খাওয়া দাওয়া,আমরা যারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করে নববর্ষের এ দিনটি বহুবার গ্রামে পালন করার সুযোগ পেয়েছি তারা দেখেছি এদিন প্রত্যেকে তার নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যতটা সম্ভব ভাল খাবারের আয়োজন করে।
প্রকৃতপক্ষে এদিন আগের দিনের বাসি খাবার যাতে ঘরে না থাকে সেদিকে সকলেই একটু সতর্ক দৃষ্টি রাখে কারণ বছরের প্রথম দিনটি যদি বাসি পান্তা খাবার দিয়ে শুরু হয় তাহলে সারা বছরই হয়তো এরকম খারাপ খাবার খেয়ে কাটাতে হবে।এ জন্যই প্রত্যেক পরিবার সাধ্যমত ভাল খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করে।
কিন্তু গ্রাম থেকে শহরে এসে এখন যা দেখেছি তা কিন্তু মোটেও গ্রামের সংস্কৃতি নয়,শহরে বিশেষ করে রাজধানী শহর ঢাকার রমনা বটমূলে বা কোন কোন হোটেলে পান্তা ইলিশ খাওয়ার যে দৃশ্য আমরা দেখি তা মোটেও আমাদের সংস্কৃতি নয়।
গ্রামে যেখানে ঐদিন খুব সতর্কতার সাথে পান্তা ইলিশ পরিহার করে চলা হয়_সেখানে শহুরে মেকি সংস্কৃতিজীবীরা ঐদিন পান্তাভাত খাওয়ার রীতিটি কোথা থেকে আবিষ্কার করলেন!
পান্তা ইলিশ আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ ছিল না এবং আজও নেই,এটি শহুরে “পেঁচক সংস্কৃতির” একটি উদ্ভট আবিষ্কার। যতদূর গবেষণা চালিয়ে জানা গেছে পুরান ঢাকার লোকেরা এই পান্তা ইলিশের সংস্কৃতিকে কুসংস্কারবশত একটি ধর্মীয় বিষয় ভেবেই এর প্রচলন করেছিল।
নিছক একটি কুসংস্কার ও ধারণার বশবর্তী হয়ে পুরান ঢাকার অধিবাসীরা এ ধারাটির প্রবর্তন করে,এটি একটি একটি ঢাকাইয়া সংস্কৃতি।জাতীয়ভাবে এর কোন ভিত্তি নেই,তাই আমাদের উচিত এসব কুসংস্কার বর্জন করে সত্যিকারের সংস্কৃতিকে জানা ও চর্চা করা; আসুন সবাই মিলে বর্জন করি_পহেলা বৈশাখের পান্তা ইলিশ!”
লেখক:আল আহাদ বাবু,শিক্ষার্খী,মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ»