মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি 🔴
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ঈদের ছুটি ও লকডাউন এর সুযোগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদরাসাছাত্রী ও ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করেছিল দুই পরিবার। প্রশাসন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে পণ্ড করে দেয়। এ সময় পৃথক দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালতে বর-কনে দুই পরিবারকে অর্থদণ্ডাদেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উর্মী ভৌমিক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকাশ কুমার কুণ্ডু।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালী কাচিছিড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. মোস্তফা খলিফার মেয়ে ও স্থানীয় দক্ষিণ মিঠাখলী ওহাবিয়া দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তারের সাথে পার্শ্ববর্তী বরগুনার পাথারঘাটা উপজেলার হাতেমপুর গ্রামের আফজাল খানের ছেলে সাইফুল ইসলামের সাথে সোমবার দুপুরে বিয়ের আয়োজন করা হয়। সোমবার দুপুরে বরের পক্ষের শতাধিক মেহমান কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়। খাওদাওয়া শুরু হলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার, স্থানীয় সাংবাদিক ইসরাত জাহান মমতাজ, রফিকুজ্জামান আবীরসহ থানা পুলিশ বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন।
পরে পুলিশের সহযোগিতায় বর ও কনের ভগ্নিপতি সুমন মিয়াকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির করা হয়। এ সময় উপজেলরা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই পক্ষকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা ও মুচলেকা নিয়ে দুই পরিবারের বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন।
অপরদিকে উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের সাহেব আলী বেপারীর মেয়ে ও স্থানীয় সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী মৌসুমী বেপারীর সাথে একই গ্রামের ফকর উদ্দিন বেপারীর ছেলে ইয়াসিন বেপারীর সাথে বিয়ের আয়োজন করে দুই পরিবার। রবিবার বিকেলে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার পরিবার এ বাল্যবিয়ের আয়োজন করে। কনের বাড়িতে বরপক্ষের লোকজন উপস্থিত হয়ে খানাপিনা চলার সময় প্রশাসন খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়। টের পেয়ে কনের বাবা ও বরের বাবা বরযাত্রীদের নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকাশ কুমার কুণ্ডু ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের মাকে চার হাজার টাকা ও বরের মাকে তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দিয়ে মুচলেকা রেখে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকাশ কুমার কুণ্ডু বলেন, চলমান লকডাউন ও ঈদের ছুটি সুযোগে বাল্যবিয়ে আয়োজন করা হচ্ছিল। চলতি মাসে মোট ছয়টি বাল্যবিয়ে প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছে। এ অভিযান অব্যহত থাকবে।