ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - মঞ্জিলার বাকপ্রতিবন্ধী সংসার !

মঞ্জিলার বাকপ্রতিবন্ধী সংসার !

 

দেবদাস মজুমদার >

দরিদ্রক্লিষ্ট গৃহবধূ মঞ্জিলা বড়ই অভাগা। পরিবরের ৫ সদস্যই তাঁর বাক প্রতিবন্ধী । বাক প্রতিবন্ধী স্বামী আর চার সন্তানকে নিয়ে চরম দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে জীবন কাটছে মঞ্জিলার। মঞ্জিলা চার সন্তানের মা ডাকও আজ অবধি শুনতে পারেন নি। সে সাথে চরম দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনে অতি কষ্টে কাটছে তাঁর জীবন।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সন্ধ্যা নদী তীরবর্তী নিভৃত আমরাজুড়ী চরের আবাসনে আশ্রিত মঞ্জিলার বেগমের পরিবারের পাঁচ সদস্যই বাক প্রতিবন্ধী। একদিকে বাকপ্রতিবন্ধী কর্মহীন স্বামী আশ্রাফ আলী (৬২) আর চার বাকপ্রতিবন্ধী সন্তানের মা মঞ্জিলা বেগম পরিবারেরকারও সাথে কথা বলতে না পারার কষ্টে নিজেই এখনঅনেকটাই বাকরুদ্ধ। ইশারা ইঙ্গিতেই পরিবারের পাঁচ সদস্যের সাথে চলছে দুর্ভাগা মঞ্জিলার জীবন সংসার।

স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, কাউখালীর সন্ধ্যা নদীর নিভৃত চরে আবাসন প্রকল্পের এককক্ষের একটি ঘরে ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে কোন রকম বেঁচে রয়েছে মঞ্জিলার পরিবার। চরম দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত এই নারীর পাঁচ বাকপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন। একাধারে বাকপ্রতিবন্ধী স্বামী আশ্রাফ আলী কর্মহীন, অপরদিকে চার বাকপ্রতিবন্ধী সন্তানের ‘মা’ ডাক শোনা থেকেও বঞ্চিত মঞ্জিলা। মঞ্জিলার চার বাকপ্রতিবন্ধী সন্তাননেরা নিজাম (১৬), শারমিন (১২), রিয়াজ (১০) ও রিফাত (৭) জন্ম থেকেই বাকপ্রতিবন্ধী। মঞ্জিলার বাকপ্রতিবন্ধী স্বামী আশ্রাফ আলী উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পান। কিন্তু সামান্য এ ভাতায় তাঁদের ৬ সদস্যের সংসারের ভরণপোষণ চলেনা । স্থানীয় কয়েকজন দানশীল ব্যক্তি ও সমাজসেবকের সাহায্য সহযোগিতায় কোন রকম বেঁচে আছে পরিবারটি। কিন্তু পরিবারটির আয়ের স্থায়ী কোনপথ না থাকায় প্রায়ই অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তাদের।
মঞ্জিলা জানায়, কোন দয়াবান ব্যাক্তি দুটি গাভী দিয়ে যদি সহায়তা করতো তা চরে লালন পালন করে কিছুটা হলেও আয়ের পথ হতো। আর সেই আয় দিয়ে হয়তো কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরে আসতো সংসারে ।

স্থানীয় সমাজ সেবক আব্দুল লতিফ খসরু বলেন, আমি ওই পরিবারটির খোঁজ খবর নিচ্ছি। পরিবারটি নিভৃত চরের একটি আবাসনের এক কক্ষের ঘরে আশ্রিত। ওই আবাসনে হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী সব শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটি পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেছি । সেই পাঠশালায় অন্যসব শিশুদের সাথে মঞ্জিলার চার সন্তানরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অন্য এখন স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছে। তবে পরিবারটি পুনর্বাসন জরুরী। তবে সরকারী বেসকারী প্রতিষ্ঠান ও মানবিক মানুষের সহায়তা ছাড়া মঞ্জিলার পরিবারকে পুনর্বাসন সম্ভব হচ্ছেনা।

এ বিষয়ে আমড়াজুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা চাঁন বলেন, মঞ্জিলার পরিবারটি চরম অসহায় । গৃহহীন পরিবারটিকে ঘূর্ণিঝড়র সিডর পরবর্তী আবাসনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। পরিবারটির পাঁচজন সদস্যই বাক প্রতিবন্ধী । পরিবারটির একটি স্থায়ী পুনর্বসান করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সেখ বলেন, মঞ্জিলার পরিবারের পাঁচ সদস্য বাকপ্রতিবন্ধী । পরিবারটির দু:খ দুর্দশার খবর সম্প্রতি জানতে পেরেছি । পরিবারটির পুনর্বাসনে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...