ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - দুই পা নেই তবু রেজাউলের লেখা পড়া থেমে নেই

দুই পা নেই তবু রেজাউলের লেখা পড়া থেমে নেই

ফারুক হোসেন খান,কাঁঠালিয়া (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি >

জম্ম থেকে রেজাউলের পা নেই। দুই পায়ে ভর করে চলার উপায় নেই। ক্রাচে ভর দিয়ে চলতে হয় রেজাউলকে। তবুও থেমে নেই রেজাউলের লেখা-পড়া। বাড়ী থেকে প্রতিদিন পাঁচ কিলোমিটার পথ ক্রাচে ভর দিয়ে চলে তার স্কুলে আসা যাওয়া। ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার আনইলবুনিয়া গ্রামের দিনমজুর আবু ছালেহ মোল্লার ছেলে রেজাউল বিকালঙ্গ হয়েও লেখা-পড়া শিখে স্বাবলম্বী হতে চায়। রেজাউল বলে পা নেই তো কি হয়েছে। লেখা-পড়া করে জীবনে দাড়াতে চাই। বিদ্যালয় ও পরিবার সূত্রে জানাগেছে,আনইলবুনিয়া গ্রামের দিন মজুর আবু ছালেহ মোল্লার ছেলে রেজাউল জম্মের সময় বিকালঙ্গ হয়ে পৃথিবীতে আসে। এরপর দরিদ্র পরিবারটি শিশু রেজাউলের অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা করেও শিশুটির পা ভাল হয়নি। এমনাবস্থায় রেজাউলের ইচ্ছাই লেখা-পড়া চলছে। বাড়ী থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ প্রতিদিন ক্রাচে ভর করে কাঠালিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় অস্টম শ্রেনীতে লেখা-পড়া করছে। রেজাউলের বাবা দিন মজুর আবু ছালেহ জানান,রেজাউল লেখা পড়ায় মনোযোগী। সে ভবিষ্যতে লেখা-পড়া করে মানুষ হতে চায়। দামী ক্রাচ কেনার পয়সা নেই। কাঠ দিয়ে একটি ক্রাচ তৈরী করে দেই। সেই ক্রাচের ভর দিয়ে ও স্কুলে যাওয়া আসা করে। ছেলের চলা ফেরায় কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগে। যখন দেখি ও ভালো লেখা-পড়া করছে তখন সুখ পাই। তিনি আরো জানান,ক্রাচে ভর দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসার কষ্ট দেখে দৈনিক ইত্তেফাকের স্থানীয় সাংবাদিক পত্রিকায় প্রকাশ করার করে। এরপর জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী স্যার একটি হুইল চেয়ার প্রদান করেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম ইউএনও ডাঃ শরীফ মুহম্মদ ফয়েজুল আলম ম্যাজিষ্ট্রেট রওশন আলী স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে রেজাউলের গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে হুইল চেয়ারটি প্রদান করেন। হুইল চেয়ার পেয়ে রেজাউলের পরিবার খুব খুশি। মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের

প্রধান শিক্ষক মো.হারুন অর রশীদ বলেন, রেজাউল লেখা-পড়ায় ভাল। ওর দুরাবস্থা দেখে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ওর প্রতি সহানুভতিশীল। ও লেখা-পড়ায় যাতে পিছিয়ে না পড়ে এজন্য সহযোগীতা করা হচ্ছে। তবে তার পরিবার দরিদ্র ওর পরিবারকে সহযোগীতা করা প্রয়োজন।

কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডাঃ শরীফ মুহম্মদ ফয়েজুল আলম বলেন, পত্রিকায় খবরটি পড়ে জেলা প্রশাসক স্যারকে বিষয়টি জানাই। তিনি রেজাউলকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করেন। ওর লেখা-পড়া যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে উপজেলা প্রশাসনের খেয়াল থাকবে। রেজাউল বলে ক্রাচে ভর করে হাটা খুব কষ্টের। এখন থেকে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে পারবো। আমি যাতে ভালভাবে লেখা-পড়া করতে পারি তার জন্য দোয়া করবেন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...