ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - মঠবাড়িয়ার প্রাচীন ঐতিহ্যের সোনাখালী বাজারের প্রাণচাঞ্চল্য নেই ❗

মঠবাড়িয়ার প্রাচীন ঐতিহ্যের সোনাখালী বাজারের প্রাণচাঞ্চল্য নেই ❗

দেবদাস মজুমদার ↪️
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য বাজার সোনাখালী বাজারটি নানা সংকটে আজ বিলুপ্তির পথে। প্রায় আড়াইশ বছরের পুরানো বাজারটির অবকাঠামো উন্নয়ন ও সুরক্ষায় প্রশাসনিক কোন উদ্যোগ না থাকায় জরাজ্বীর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। বাজারের জলকাদায় পরিপূর্ণ রাস্তাঘাট, টলশেড জরাজ্বীর্ণ,পয়নিষ্কাশন ও পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা না থাকাসহ শত সংকটে প্রাচীন এ বাজারটি আজ প্রাণহীন আর হতশ্রী দশা।

স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, স্থানীয় জমিদার সন্তোষ কুমার চৌধুরী প্রায় আড়াইশ বছর পূর্বে মঠবাড়িয়া সদর হতে প্রায় চার কিলোমিটার দুরে সোনাখালী জমিদার বাড়ি সংলগ্ন খালের তীরবর্তী তিন একর জমিজুড়ে সোনাখালী বাজারটি গড়ে তোলেন। বাজারটি মঠবাড়িয়া জনপদের প্রথম গ্রাম্যহাট হিসেবে আজও ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। বাজারটি গড়ে তোলার সময় জমিদার সন্তোষ চৌধুরী এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্পসহ নানা দোকানপাটের অবকাঠামো গড়ে তোলেন। ওই সময়ে এটি একটি প্রসিদ্ধ বাজার হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত ছিল। মুদি, মনোহরি আর নানা কৃষি পণ্যের পসরায় বাজারটিতে দুর দুরান্তের মানুষ এখানে সমবেত হতেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এ হাটে জমিদারী আমলে সুলভে এ হাটে বিক্রয় হত। ফলে বাজারটি বেশ জমজমাট অবস্থা ছিল। প্রাচীন আমল হতে এখানে শনি ও মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বসত। যা আজও টিকে আছে। তবে বাজারটির সেই জমজমাট অবস্থা এখন আর নেই। একসময় এ হাটে উপজেলার টিকিকাটা,পাঁচশতকুড়া, ধূপতি, মানিকখালী,কবুতরখালী,পশুরয়িা, উত্তর সোনাখালী, মধ্য সোনাখালী ও দক্ষিণ সোনাখালীসহ নয় গ্রামের মানুষ এ হাটে প্রণ্য ক্রয় ও বিক্রয় করত।

স্থানীয় ধুপতি গ্রামের সমাজসেবক নূর মোহাম্মদ জানান , জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর ঐতিহ্যবাহী বাজারটি তার ঐতিহ্য হারাতে থাকে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে বাজারটি বিলুপ্তির দিকে যায়। স্থানীয় অনেক প্রভাবশালী বাজারের জমি দখল করে নেয়ায় বাজারটি সংকুচিত হয়ে পড়ে। পুরানো বাজারটিতে দুই শতাধিক নানা দোকানপাট থাকলেও ১৫টি দোকানপাট আর পুরানো ভাঙাচোরা একটি টলশেড ঘর ছাড়া আর তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই। ফলে ঐতিহ্যের বাজারটিতে এখন আর তেমন কোন প্রাণচাঞ্চল্য নেই। তবে ঐতিহ্যবাহী বাজারটি সুরক্ষা করা প্রয়োজন।
সোনাখালী বাজারের মুদি ব্যবসায়ি বিমল কৃষ্ণ পাল বলেন, গত ৪০ বছর ধরে বাজারে ব্যবসা করছি। গত দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে বাজারে কোন উন্নয়ন না থাকায় প্রাচীন এ বাজাওে মানুষের সমাগম কমে গেছে। তাছাড়া অদুরে সিএন্ডবি সড়কের মোড়ে অন্য আর একটি বাজার গড়ে ওঠায় প্রাচীন বাজারটি আজ বিলুপ্তি দিকে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বাজারটি বন্ধ হয়ে যাবে।

ব্যাবসায়ি দুলাল কৃষ্ণ পাল বলেন , প্রাচীন বাজারটি উন্নয়নে কোন নজরদারি নেই। বাজারের টলশেডটি কয়েকবছর ধরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে থাকায় হাটের দিনে জলকাদার মধ্যে ভাসমান বাজার বসে। বাজারে সড়কবাতি নাই। খাবার পানির চরম সংকট। এছাড়া বাজারে কোন পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিন বলেন, বাজারটি অতি প্রাচীন। নানা সমস্যায় বাজারটির আগের মত প্রাণচাঞ্চল্য নেই। বাজারটির সমস্যা নিরসনের জন্য উপজেলা পরিষদের পরবর্তী সমন্বয়সভায় আলোচনা করে সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ছবি > শাহাদাৎ হোসেন বাবু ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...