ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - অসহায় বিধবা দিপালীর পাশে প্যারেন্টস ফাউন্ডেশন

অসহায় বিধবা দিপালীর পাশে প্যারেন্টস ফাউন্ডেশন

দেবদাস মজুমদার >

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার অসহায় অশীতিপর বৃদ্ধা বিধবা দিপালীর পাশে দাড়িয়েছে প্যারেন্টস ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক ও মানবিক সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার(২৭ জুন) সহায় সম্বলহীন অসুস্থ বিধবার বাড়িতে গিয়ে প্যারেন্টস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিধবার দোকানের মালামাল, কাপড় ও নানা নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। সম্প্রতি দৈনিক কালের কণ্ঠ,সমকাল ও আজকের মঠবাড়িয়ায় অসহায় বৃদ্ধা দিপালীকে নিয়ে মানবিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তারুণ্যের সংগঠন প্যারেন্টস ফাউন্ডেশ বিধবার পুনর্বসনে উদ্যোগ নেয়। সংগঠনের অ।ন্যতম উদ্যোক্তা জি.এম আদল অসুস্থ বিধবার বাড়িতে গিয়ে তার দোকানের মালামাল বিতরণ করেন। এসময় বিধবাকে শাড়িসহ নানা নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী প্রদান করা হয়।
এসময় ভান্ডারিয়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিদর্শক মো. আরিফুর রহমান,দৈনিক সমকাল পত্রিকার ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি রিয়াজ মাহমুদ মিঠু, দৈনিক কালের কণ্ঠের আঞ্চলিক প্রতিনিধি, দেবদাস মজুমদার, কলমের কণ্ঠ পত্রিকার ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি মো. লোকমান হোসেন ও উদ্যোক্তা সংগঠন প্যারেন্টস ফাউন্ডেশনের সদস্য মো. রুবেল মিয়া প্রমূখ।
এসময় অসহায় দিপালীকে তার দোকানের মালামাল কিনে দেয়া হয়। এছাড়া বিধাবার পরিধেয় শাড়ি, তেল সাবান,আয়না চিরুনী,ব্যাগ ও ছাতা প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভান্ডারিয়া পৌর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুরার মহল্লার বিধবা দিপালীর এখন বার্ধক্যের ক্রান্তিকাল । জীবনের এই অসহায়ত্বের কালে স্বজন বলতে তারঁ কেউ নেই। ২৫ বছর আগে দরিদ্র স্বামী যতীন সমদ্দার মারা যায়। এরপর পালাক্রমে আট সন্তানের মৃত্যু বৃদ্ধা দিপালেিক আরও অসহায় করে তোলে। একমাত্র মেয়ে বেঁচে আছেন বলে সে জানে। তবে সে স্বামীর সাথে দেশ ছেড়ে এখন আন্দামানে বসতি গড়েছেন। ু’বছর দুই আগে প্রতিবেশীর মোবাইলে মেয়ের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিলও নাকি দিপালীর । এর পর আর কো ন খবর জানেনা। ফলে সহায় সম্বলহীন বিধাব দিপালীর তালাশ নেওয়ার মত জগৎ সংসারে আর কেই রইলনা। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে বিধবা দিপালীকে পথে নামতে হয়। কিন্তু এ বয়সে তাকে দেখারমত কেউ নেই। এমন সংকটের জীবনে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা বিধবা দিপালী রানীর ভিক্ষা করে জীবিকা চালানোর কথা। কিন্তু অসহায় বিধবার তা ঘটেিেন। ভিক্ষাবৃত্তিকে অসম্মানের মনে করেন এই বৃদ্ধা । তাই প্রতিদিন চকলেট, বিস্কুট নিয়ে পথের দোকানী । চকলেট বিক্রির আয়েই এ সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধার দুই বেলা দুমুঠো ভাতের সংস্থান হয়।

বিধবা দিপালী জানান, তাঁর স্বামী যতিন সমদ্দার দুরারোগ্য অসুখে ভুগে ২৫ বছর আগে মারা যান। এরপর চোখের সামনে একে তাঁর ৮ সন্তানের মৃত্যু ঘটে। শ্যামলী নামে একটি মেয়ে ছিল তার। সেও একযুগ আগে স্বামীর সঙ্গে আন্দামানে বসবাস করছে বলে মা দিপালী এমনটাই জানেন। দু’বছর পূর্বে পাশের বাড়ীর মোবাইলে মেয়ের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিলও নাকি তাঁর। এখন তাকে দেখার মত আর কেউ নেই। স্বামীর বসত ভিটে ছাড়া কিছুই নেই তার! বৃদ্ধা দিপালী ভান্ডারিয়া ৬৮ নম্বর হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামনে সামান্য চকলেট বিস্কুট বিক্রি করে সে। এ প্রতিদিন ২০/৩০ টাকা আয় হয়। আবার কোনদিন হয়ই না। এতে তার খাবারই হয়না, নিজের অসুধ, কুপির তেল তো দুরের কথা।
অসহায় বিধাবার ওপর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর মানবিক সংগঠন প্যারেন্টস ফাউন্ডেশন তার পুনর্বাসনে উদ্যোগ নেয়। উদ্যোক্তা সংগঠনটি অসহায় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের জীবমান উন্নয়নে নানা সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...