ব্রেকিং নিউজ
Home - জাতীয় - সৎ এবং যোগ্য নেতৃত্ব চাই সর্বত্র

সৎ এবং যোগ্য নেতৃত্ব চাই সর্বত্র

মো. গোলাম মোস্তফা >
অনেকের ধারনা আল্লাহ অদৃশ্য কিন্তু যাহার ধ্যান আমাদের চোখে, যাহার জিকির আমাদের মুখে, যাহার ঠিকানা আমাদের বুকে, তিনি কেমন করে অদৃশ্য হতে পারেন? না, তিনি কখনো অদৃশ্য নন।
“গোরস্তানে নেই কোন রাজনীতির কোলাহল, নেই বিদ্বেষের হলাহল, নেই স্বার্থের সংঘাত,কেবা জ্যেষ্ঠ কেবা কনিষ্ঠ, যে বুঝেছিল সেই সর্ব শ্রেষ্ঠ”।
হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন ;
“কখন বুঝবে একটি দেশ ও সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে, যখন দেখবে দরিদ্ররা ধৈর্যহারা হয়ে গেছে, ধনীরা কৃপণ হয়ে গেছে, মূর্খরা মঞ্চে; জ্ঞানীরা পালিয়ে যাচ্ছে এবং শাসকরা মিথ্যা বলছে” ।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেনঃ
I am not bound to win, but I am bound to be true. I am not bound to succeed but I am bound to live by the light that, I have. I must stand with any body that, stand right and stand with his right and part with him when he goes wrong. বাংলা অর্থ “ আমি সত্যকে বিসর্জন দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিতে বাধ্য নই । আমি আমার জ্ঞানের আলো বিসর্জন দিয়ে সাফল্য ছিনিয়ে নিতে বাধ্য নই । আমি অবশ্যই সেই লোকটির পিছনে থাকবো, যতক্ষণ সে সত্যের পথে থাকে । আর যখন সে সত্যের পথ থেকে বিচ্যুতি হবে আর তখন আমি তাকে ত্যাগ করবো “।
ব্রিটেন গণতন্ত্রের “দোলনা ঘর ” (Cradle of Democracy) পণ্ডিতেরা গাঁও গ্রামের গণতন্ত্রকে বলেন Grassroots Democracy বা “ তৃণমূল গনতন্ত্র” আমাদের দেশে তৃণমূল গণতন্ত্রের নমুনা “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন” আউবের “বুনিয়াদি গনতন্ত্র” বা Basic Democracy ইন্দনেশিয়ার জাতীর পিতা সূকর্ণ চালু করেছিলেন “নির্দেশিত গণতন্ত্র” বা Guided Democracy মিশরের সমাজতান্ত্রিক শাসক আবিষ্কার করেছিলেন Controlled Democracy বা “নিয়ন্ত্রিত গনতন্ত্র”, মার্ক্সবাদীরা একদলীয় শাসন কায়েম করেন, তার নাম “সর্বহারা গনতন্ত্র” চীনা নেতা মাও যে ডং তার প্রবর্তিত তন্ত্রের নাম দিয়েছিলেন “নয়া গণতন্ত্র” বাংলাদেশের সমাজ ঐতিহাসিক ভাবেই “চির অস্থির” সম্রাট আকবরের ইতিহাসবিদ আবুল ফযল বাংলাকে “বুলগাকখান” দাঙ্গা হাঙ্গামার ঘর বলে বর্ণনা করেছিলেন। আমাদের সমাজে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মান অনেক অবনত! পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস জমাট বাঁধা পাথরেরমত আগলে রেখেছে সমষ্টিগত জীবনের মহামিলনের উৎসবকে । ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত স্বার্থের অন্ধকারে নিমজ্জিত সামগ্রিক স্বার্থের চেতনা । পেশীর সর্বগ্রাসী দাপটে নিস্তেজ হয়ে রয়েছে অন্তঃকরণের কল্যাণময়ী প্রত্যয় । আবেগের প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে যুক্তিবাদীতার গণমুখি ভাবনা, সৃজনশীলতার সার্বিক কালাকৌশল । সবকিছু ভাঙ্গার প্রবনতা নিঃশেষ করেছে গড়ার প্রতিভাকে আর তাই ভাঙতে হবে এই সঙ্কীর্ণতার দেয়াল। আত্ম-স্বার্থকে প্রক্ষিপ্ত করতে হবে সমগ্র সমাজের বৃহত্তর ক্ষেত্রে । গড়ে তুলতে হবে আত্ম স্বার্থের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্বার্থের উচ্চতর সৌধ ।

মঠবাড়িয়াতে জন্ম তাই মঠবাড়িয়া নিয়েই ভাবি । মঠবাড়িয়ার বর্তমান নেতৃত্বকে বলব আপনারা আমজনতার ভোটে নির্বাচিত হয়ে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ কারুন । এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বর ইত্যাদি সকল জনপ্রতিনিধি । এমন কি সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানের গভর্নিং বডির সভাপতি/সদস্য সবাই জনগন দ্বারা নির্বাচিত । আমার প্রশ্ন উপরোক্ত সকল পদ পদবী যাঁরা অলংকৃত করে আছেন । তাঁরা কি তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন? কতটুকু সচেতন? যদি সঠিক ভাবে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতেন , তবে কি আমাদের সাধারন জনগনের দুর্ভোগ এত চরম আকার ধারন করে! পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া-চরখালি রাস্তাটির গুরুত্ত্বপূর্ণ গুদিঘাটা সেতুটি ধসে পড়ে আছে তিন মাস । হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি দেখার কি কেউ আছে? ১৯৮৪ সালে সরকারী হওয়া কলেজটির ভবনগুলো জরাজ্বীর্ণ, শিক্ষকের অভাবে ভাড়ায় শিক্ষক এনে নিভু নিভু ভাবে চলছে। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মঠবাড়িয়া পৌর সভার সর্বত্র কি দূরাবস্থা। হাসপাতালের দূরাবস্থা (বহু দিন পর আম্বুলেন্স) এই আম্বুলেন্স কি সাধারনের জন্য? দেখা যাবে সামর্থ্যবানরাই ব্যবহার করছেন! ডাক্তার কতজন আছেন? কত জন থাকার কথা? কে দেখভাল করবে এসব? অপরিষ্কার হাসপাতাল, হোটেল, রেস্তরা, মাছ বাজার দেখভাল করার কি কেউ আছে? বাস স্ট্যান্ড এর দূরাবস্থা, এমনি হাজারো সমস্যা। প্রতিটি জিনিস দেখভালের জন্য লোক থাকলেও জনপ্রতিধিদের অবহেলা অথবা কর্তব্য সম্পর্কে অসচেতনতাই মূল কারন বলে প্রতীয়মান হয় । আর তাই আগামীর নেতৃত্বের কাছে আকুল আবেদন থাকবে যোগ্য সৎ কর্মঠদের মূল্যায়ন করুন । চাটুকারদের কাছ থেকে বেড়িয়ে আসুন । জনগনকে আস্থায় আনতে দৃশ্যমান কাজ করতে হবে। কথা কম বলা ভাল কিন্তু বেশি কম বললে জনগন বুঝবে কি করে?

একটি ঐতিহসিক সত্য ঘটনা লিখে শেষ করব, খলীফা ওমর (রাঃ)খুদবা দিতে দাঁড়ালেন, জনতার মধ্যে একজন হাত তুললেন, ইয়া আমিরুল মুমিনিন জবাব চাই? আপনার জামাটি এতো লম্বা হোল কি করে ? সরকারের দেয়া কাপড়ে আমাদের জামা ছোটো কেন? এবার ওমর (রাঃ) এর পরিবর্তে তাঁর ছেলে উঠে দাঁড়ালেন এবং জবাব দিলেন, ভাই সকল আমিও আপনাদের মত এক টুকরো কাপড় পেয়েছিলাম আর সেই কাপড় পিতাকে দিয়েছিলাম, কারন তিনি রাষ্ট্রের খলিফা তাঁর জামাটি বড় দরকার! এবারে লোকটি লজ্জিত হলেন ।
*লেখক পরিচিতি : মো. গোলাম মোস্তফা,মানব সম্পদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মাছরাঙা টেলিভিশান । #

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...