মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি > মঠবাড়িয়ায় ইউপি নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন দুলালের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ মনোয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র ৩৭ নেতাকর্মী গণ পদত্যাগ করেছেন। রবিবার রাতে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে বিক্ষুব্দ নেতা কর্মীরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এসময় মনোনয়নে অর্থ বাণিজ্য ছাড়াও বিএনপির উপজেলা নেতাদের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার অভিযোগ তোলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শ.ম তারিকুল ইসলাম স্বাধীন।
তবে এর আগে গত ১১ মার্চ উপজেলা বিএনপির সভাপতি/সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক পত্রে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে নিস্ক্রিয়তা থাকার অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিশের কোন জবাব না দিয়ে তুষখালী ইউনিয়ন বিকএনপির ৩৭ নেতা কর্মী আুপজেলা নেতৃন্দের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে গণ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সংবাদ লিখিত বক্তব্যে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শ.ম তারিকুল ইসলাম স্বাধীন বলেন, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন দুলাল ১নম্বর তুষখালী ইউনিয়নে আ’লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে যোগসাজেসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে চেয়ারম্যান পদে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অধিকতর দুর্বল ও বিতর্কিত প্রার্থী ছগির হাওলাদারকে বিএনপি’র ধানের শীষ মার্কার মনোনয়ন দেয়। এছাড়াও বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছগিরের বিরুদ্ধে বিগত সংসদ নির্বাচনে দলের বিপক্ষে কাজ করা, গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও আ’লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া, ১/১১ তে সংস্কারপন্থী কোরেয়শীর পক্ষের সদস্য সংগ্রহ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু তারপরেও দলের ত্যাগী নেতারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করলেও রহস্যজনক কারণে গত ১১ মার্চ ২০১৬ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি/সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্রে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে দলের প্রার্থীর পক্ষে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। ইউপি নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে ত্যাগী নেতা কর্মীদের কারণ দর্শানোর নোটিশটি তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপিকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় । এতে বিক্ষুব্দ হয়ে ৩৭জন নেতাকর্মী দলীয় সদস্য পদ ব্যতিরেকে সকল পদ-পদবী থেকে অব্যাহতির জন্য উপজেলা ও জেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সলিম পঞ্চায়েতসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন দুলাল তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু তুষখালী ইউনিয়ন বিএনপির কতিপয় নেতা কর্মী দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় তাদের কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাব না দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা দলীয় শৃংখলা বিরোধি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, অনেক পুরানো নেতাকর্মীদের দ্বারা এমনটা আশা করিনি। দলীয় শৃংখলা ভেঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।