ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - জিয়ানগরে যুদ্ধাপরাধী সাঈদী পুত্রের হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা গ্রহণ নিয়ে তোলপাড় ! ওসি ক্লোজড

জিয়ানগরে যুদ্ধাপরাধী সাঈদী পুত্রের হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা গ্রহণ নিয়ে তোলপাড় ! ওসি ক্লোজড

মো. খালিদ আবু,পিরোজপুর >

পিরোজপুরের জিয়ানগরে (ইন্দুরকানী) মহান বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে যুদ্ধাপরাধী দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বিজয় দিবসের প্যারেডে সালাম গ্রহণ সহ বিজয় র‌্যালীতে নেতৃত্ব দেন । এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা এবং পুরষ্কারও তুলে দেন এই যুদ্ধাপরাধীর পুত্র। পুরষ্কার প্রাপ্তদের মধ্যে সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদীও রয়েছেন। এরপর মাসুদ সাঈদী তার ফেইসবুক আইডির টাইম লাইনে সকলকে দেখানোর জন্য ছবি সম্বলিত একটি পোষ্ট দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসন সহ সচেতন মানুষের মধ্যে। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধীপুত্রের অতিথি হওয়া ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়াকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধকে অপমান বলে আখ্যায়িত করেছেন সমালোচনাকারীরা। এদিকে এ ঘটনায় জিয়া নগর থানার ওসি মিজানুল হককে ক্লোজড করা হয়ছে। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. ওয়ারিদ হোসেন জিয়ানগর থানার ওসিকে ক্লোজড করার বিয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেচেন। তিনি বলেন, উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রশাসনিক কারনে তাকে(ওসি)ক্লোজড করা হযেছে।

গত শুক্রবার বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে সেসব ছবি নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন মাসুদ সাঈদী তারমধ্যে কয়েকটিতে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা পুরষ্কার তুলে দিচ্ছেন মাসুদ সাঈদী এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে বিজয়ে দিবসের শুভেচ্ছা স্মারক দেয়া হয়।
এসব ছবি ফেসবুকে যুক্ত করে মাসুদ সাঈদী লিখেছেন- ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জিয়ানগর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান। পুরষ্কার নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব বেলায়েত হোসেন, বর্তমান উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন কুমার রায়, সাবেক কমান্ডার মাহবুবুল আলম হাওলাদার (আমার আব্বার মামলার বাদী ও প্রথম স্বাক্ষী), মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার ফকির।’
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়া ছাড়াও উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় র‌্যালিতেও নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তাকে। বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সালামও গ্রহণ করেন সাঈদীপুত্র। শুধু তাই নয়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে উপহার দেয়া হয় বিজয়ের শুভেচ্ছা স্মারক। pirojpur-picture-s-07
এ ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে একাত্তরের শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিজয়ের ৪৬তম বছরের প্রথম সকাল হতবাক করেছে। রাজাকারপুত্র এবং মুক্তিযোদ্ধারা একসাথে বিজয় দিবস উদযাপন করছে। আর আমরা দেখছি। কি সুন্দর সকাল হওয়ার কথা ছিল আজ, তাই না!!’
রেদওয়ান আহমদ নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হয় যেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা এগুলো ¯্রফে কাগুজে শব্দ… মনে হয় প্রচন্ড তাচ্ছিল্যের সাথে কেউ পৈশাচিকভাবে হাসছে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের উদ্দেশ্যে…মনে হয় আমরা হুদাই দেশ দেশ করে মরছি…।’pirojpur-picture-s-02
সমুদ্র সৈকত নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘রাজাকার সাঈদী’র ছেলে মাসুদ সাঈদী’র হাত থেকে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মাননা ও পুরস্কার নিয়েছেন এর চেয়ে অপমান আর কি হতে পারে!! আসুন, আমরা লজ্জায় মরে যাই!’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সমীর কুমার দাস বাচ্চুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ।pirojpur-picture-s-06

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী মোবাইলে জানান, আমার বাবা অপরাধ করেছে, তার কৃতকর্মের দায়-দ্বায়িত্ব আমি কেন নিতে যাব। বাবার অপরাধে সরকার কি সব সময় আমাদের নর্দমায় ফেলে রাখবে,এখানে আমার কি দোষ ? আপনি কেন বিজয় দিবসের সালাম নিতে গেলেন জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।pirojpur-picture-s-04

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...