ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - আজকের মঠবাড়িয়ার ২য় বর্ষ পূর্তিতে অভিনন্দন ও প্রত্যাশা

আজকের মঠবাড়িয়ার ২য় বর্ষ পূর্তিতে অভিনন্দন ও প্রত্যাশা

প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের বিকাশ হচ্ছে! কিন্তু খুব কম প্রতিষ্ঠানই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করছে! বেশিরভাগ গণমাধ্যমই ক্ষমতাসীনদের গুণগান করতে পছন্দ করে কিংবা মালিকদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। কিছু ক্ষেত্রে বিরোধীদের কুৎসা রটনাতেও রাষ্ট্রযন্ত্র হিসেবে গণমাধ্যম ব্যবহার হয়! কয়েক বছর ধরে সামাজিক মাধ্যমগুলোর বিকাশ হওয়ায় তা মত প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে! আর তাই অনলাইন ভিত্তিক প্রকাশনা নিউজ পোর্টালকে সামাজিক মাধ্যম বললেও অত্যুক্তি হবেনা!

“আজকের মঠবাড়িয়া” নিউজ পোর্টালটি ৩য় বছরে পদার্পণ মুহুর্তে হঠাৎ একটি ক্ষুদে বার্তা পেলাম, প্রকাশক মেহেদী হাসান এর কাছ থেকে । আমাকে একটি লেখা দিতে হবে! এর আগেও বহুবার আমার লেখা “আজকের মঠবাড়িয়া” তে প্রকাশিত হয়েছে। দেখতে দেখতে ২ টি বছর পার হয়ে গেল! সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে যায়!! ধন্যবাদ দিচ্ছি পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষকে বিশেষ করে মেহেদী হাসান বাবু ও দেবদাস মজুমদারকে ।

দু’টি বছর একটি পত্রিকা মফস্বল থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার করটাও কম নয় কিন্তু । ইতিমধ্যে পত্রিকাটির যথেষ্ট জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে আমি মনে করি । নির্ভুল লেখা, ভাষারীতি, প্রাঞ্জল ভাষা হওয়ায় এর মান এবং গ্রহণ যোগ্যতা বেড়েছে বলে মনে হয় । একটা পত্রিকা প্রকাশনায় যে যে মানদন্ডের দিক লক্ষ রাখা দরকার তা লক্ষ রাখার মত যথেষ্ট পরিপক্কতা প্রকাশক ও সম্পাদক মন্ডলীর আছে বলেই মনে করি। যাইহোক, পত্রিকাটির নামের মধ্যেই এর অর্থ নিহিত । আজকের মঠবাড়িয়া অর্থাৎ “বর্তমান”। তাই বর্তমান নিয়েই কিছু লিখছি। মঠবাড়িয়ার রাজনীতি, মাদক ও শিক্ষার্থীর লেখাপড়া নিয়ে কিছু লিখতে চাই। রাজনীতি : যদিও জাতীয় নির্বাচনের আরো বাকি এক বছর। তথাপি ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। হয়তো ভিতরে ভিতরে চেষ্টা করেও বর্তমান এমপি মহোদয় আওয়ামীলীগে কার্যত সুবিধা করতে না পেরে আগে ভাগেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে গেলেন। ২১ তারিখ রংপুরে জিতে যাওয়ার ১ দিন পর অর্থাৎ ২৩ তারিখ গরম গরম ডা. ফরাজি সাহেব যোগ দিলেন জাতীয় পার্টিতে । এদেশের রাজনীতিতে আদর্শ লাগে বলে মনে হয়না । শুধু মাত্র ক্ষমতা! জনগণও ক্ষমতাধরদের কাছেই ধরনা দেয়! আর ক্ষমতাই এনে দেয় প্রাচুর্য আর সম্মান! কেন ফ্লোর ক্রস করবেন না? দল আদর্শ দেখেনা, দেখে সিট পাওয়া যাবে কি-না । জনগণের কথা আসলে কেউ ভাবেননা!

মঠবাড়িয়ায় একটি সরকারী হাসপাতাল আছে। ডাক্তার আছেন ৩২ এ ৭ জন অন্যান্য কর্মচারীদের কথা না হয় বাদই দিলাম। অপরিচ্ছন্নতায় ভরপুর গা ঘিনঘিন করে। টয়লেট ও পয়ঃনিষ্কাশন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে! দালাল গিজগিজ করে। মঠবাড়িয়ায় ক্লিনিকের রমরমা ব্যবসা। কারণ ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে কি ? হয়ত ভাববেন রাজনীতির মধ্যে হাসপাতালে কেন ? আরে ভাই মঠবাড়িয়ার ডাক্তার নেতারা কেউ কম পাওয়ার হোল্ড করেন না । সাবেক বর্তমান দুই এমপি ও অন্যরাও অনেক শক্তি নিয়ে চলা ফেরা করেন কিন্তু হাসপাতালটাকে পরিচর্যা না করে নিজেদের গণসংযোগের একটা হাতিয়ার বানিয়েছেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুগী দেখেন।

নবীজী একদিনের জন্য ভিক্ষা না দিয়ে কুঠার কিনে দিয়েছিলেন যাতে সারা জীবনে আর হাত পাততে না হয় । তাই বলি বাড়ি বাড়ি রুগীর পরিচর্যা না করে হাসপাতালটির পরিচর্যা করুন যাতে সারা বছর সকল রুগী সেখানে চিকিৎসা নিতে পারে! আপনারা গণসংযোগ আলাদা ভাবে চালান । এখন লোকেরা অনেক সচেতন এবং পরিপক্ব। পিছেনে সমালোচনা করে! প্রশাসনের সাথে জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত হলে এলাকার অনাচার থাকতে পারেনা! ফরাজী সাহেবকে নিয়ে আওয়ামীলীগের একটা টেনশন ছিল।এখন পথের কাটা ক্লিয়ার, সামনে ফকফকা। উচিৎ ডা. ফরাজিকে মিষ্টি খাওয়ান কারন সময় দীর্ঘায়িত না করে আগেভাগেই আপনাদের পথ পরিষ্কার করে দিয়েছেন! মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিন এমপি হলে তখনওকি গ্রামে গ্রামে রুগি দেখবেন না অন্য কোন উপায়ে খেদমত করবেন ? জনগণকেও বলব দয়া করে নেতাদের প্রতিশ্রুতিগুলো রেকর্ড করে রাখবেন । ডা. ফরাজি অনেক কাজ করেছেন কিন্তু অনেক বাধাবিঘ্নতার মধ্যে তাকে চলতে হয়েছে । মাদকঃ এক ভয়াবহ অভিশাপ, জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এর কড়াল গ্রাসে মঠবাড়িয়া!

আমি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রোগ্রাম করতে গিয়ে, প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন, গ্রামের যুবক শ্রেণী কোন না কোন ভাবে মাদকের নেশায় আক্রান্ত বলে জানতে পেরেছি! এমনকি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিকট বিনা পয়সায় পৌছে যাচ্ছে এই ইয়াবাহা (মাদক)! আমি বুঝিনা যারা এই ব্যবসার রাঘব বোয়াল তারা কি নিঃসন্তান! ভবিষ্যৎ বলতে তাদের অভিধানে কি কিছুই নাই! এদের যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দেন তারাও কি নিঃসন্তান! সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে অন্তত এই মাদককে না বলতে হবে একই সুরে! এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নেতৃত্ব দেবেন এটা সমাজ তাদের কাছ থেকে আশা করতেই পারে। লেখাপড়া ঃ জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই ।

আল্লাহ বলেছেন “ইকরা” “পড়” । সুতরাং পড়তে হবে এবং তা শুদ্ধ ভাবে । ছেলে মেয়েরা পড়বে কিন্তু অভিভাবকদের সঠিক নির্দেশনা থাকতে হবে। স্কুলে পঠিয়েই ক্ষান্ত হওয়া যাবেনা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পণ্ডিত বানিয়ে দেবেন না । তা হয়না । তাই আপনাকে প্রতিনিয়ত খোজ নিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আত্মীয় বাড়ি বানিয়ে নিতে হবে যতদিন সন্তান ঐ প্রতিষ্ঠানে থাকবে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, ছেলেমেয়ের পিছনে ইনভেষ্ট করুন। জমি বা অন্যকিছুতে ইনভেষ্ট না করে সন্তানের পিছনে টাকা খরচা করুন আখেরে বৃদ্ধ বয়সে এই ইনভেষ্টমেন্ট যে রিটার্ন দেবে তা অন্য কোনটাই দিতে পারবেনা।

আমি বলে থাকি তিনের সমন্বয় ছাড়া শিক্ষার মান ভাল হতে পারে না। শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবক এই তিনের সমন্নয় ছাড়া ভাল ফলাফল আশাকরা অসম্ভব! তাই সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে এবং সন্তানদের প্রতিনিয়ত খোজ খবর রাখতে হবে। পরিশেষে বলতে চাই সামনে নির্বাচন সবাই চোখ কান খোলা রাখুন, যাচাই বাচাই করে তবেই ভোট দেবেন। নিজে সচেতন হন অন্যকে সচেতন করুন মাদককে না বলুন সন্তানদের স্মার্ট ফোন দেবেন না । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিঢ় সম্পর্ক গড়ুন ।

ধন্যবাদ সকলকে।

>> মো. গোলাম মোস্তফা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মাছরাঙা টেলিভিশন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...