পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় শামীম আহসান নামের ছাত্রশিবিরের সাবেক এক নেতাকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে বালিপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমীক লীগের নেতা কর্মীরা মানব বন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজী। তিনি অভিযোগ করেন, গত বুধবার দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে গোপনে বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান হাওলাদার সভাপতি ও শামীম আহসানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজী অভিযোগ করেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একরামুল শিকদার মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ছাত্রশিবির থেকে আসা শামীম আহসানকে বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক করেন। কমিটি গঠনের সময় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশির ভাগ নেতা-কর্মী অনুপস্থিত ছিলেন।
শাহীন গাজী লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, এক মাস আগে বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের বর্ধিত সভায় নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারকে আহ্বায়ক, আলমগীর সেপাই, বাপ্পি মোল্লা, স্বপন পঞ্চায়েত, আবিদ হাসান ও আসাদুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জিয়াউল হাসানকে সদস্যসচিব করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু ওই কমিটি তিন মাসের জন্য অনুমোদন করেন। এরপর বুধবার আবদুর রাজ্জাক ও ইকরামুল শিকদার সংগঠন পরিপন্থী নতুন কমিটি করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজী বলেন, ‘শামীম আহসান ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের বালিপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন।’
বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শামীম জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, তা এই ইউনিয়নের কারও অজানা নয়।’
অভিযুক্ত উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘শামীমের সম্পর্কে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সত্য নয়। আমার জানামতে, তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমাদের সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছেন।’ ইকরামুল শিকদার বলেন, অর্থের বিনিময়ে শামীমকে পদ দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মো. তাওহীদ মুঠোফোনে বলেন, ‘শামীম আহসান একসময় আমাদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তবে তিনি ছাত্রশিবিরের কোনো পদে ছিলেন কি না, আমার মনে পড়ছে না।’
শামীম আহসান বলেন, ‘আমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতাম। আমি কখনো শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন।