আজকের মঠবাড়িয়া অনলাইন ডেস্ক▶️
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের প্রভাব ও অবিরাম বর্ষণ এবং জোয়ারের পানিতে পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার নদী তীরবর্তী শতাধিক গ্রামের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে এসব গ্রামের লাখো মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ২৫ টি গ্রাম, ইন্দুরকানি উপজেলার প্রায় ৫০ টি গ্রাম, মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৩০ টি গ্রাম এবং কাউখালী উপজেলার ২০ টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বর্ষণ শনিবার দুপুর পর্যন্ত চলছিলো। জোয়ার ও অতিবর্ষনে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, বসত ঘর, রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। পানিতে তলিয়ে যাওয়ার করানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এ সব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ।
দু’দিনের অব্যাহত জোয়ারের পানি এবং অবিরাম বৃষ্টিতে সৃষ্ট হওয়া জলাবদ্ধতার কারণে নি¤œ আয়ের মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এ এলাকার হাজার হাজার মৎস্য চাষী। আতঙ্কিত মৎস্য চাষীরা বলছেন আর একদিন এভাবে বৃষ্টি হলে সকল মাছের ঘের ও পুকুর সমুহ ডুবে যাবে।
এদিকে, খুলনা-পিরোজপুর-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের পিরোজপুরের কঁচা নদীর বেকুটিয়া ফেরী এবং পিরোজপুর- মঠবাড়িয়া-বরগুনা সড়কের চরখালী ফেরী ঘাটের গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরী চলাচলে বিঘœ ঘটেছে। ফলে ফেরী ঘাটের দুই পারে আটকা পড়েছে অনেক যানবাহন ।
কাউখালীতে তিন দিন অবিরাম বর্ষণ এবং অমাবশ্যার জোয়ারের পানিতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া বর্ষণ এবং জোয়ারের পানিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এদিকে বৃষ্টিপাত আর জোয়ারের পানিতে বেকুটিয়া ও আমরাজুড়ি ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে।
গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে আজ শনিবার পর্যন্ত অবিরত বৃষ্টি ঝড়ছে। এদিকে অমাবশ্যার কারণে নদীতে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি ও জোয়ারে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, বসত ঘর ও রাস্তা-ঘাট।
নদী তীরবর্তী আশোয়া, রোঙ্গাকাঠী, গন্ধর্ব, মেঘপাল, ধাবড়ী,সয়না, সোনাকুর, রঘুনাথপুর, হরিণধরা, কুমিয়ান, জোলাগাতি, সুবিদপুর, বাশুরী, চিরাপাড়া, বেকুটিয়া, আমরাজুরি, জয়কুল, ডুমজুড়ি, আসপর্দী, কচুয়াকাঠী, কাঠালিয়া, বিড়ালজুরী, গুচ্ছগ্রাম সহ কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বহু মাছ চাষীর ঘের পানিতে তলিয়ে মাছ ¯্রােতের তোরে ভেসে গেছে এবং রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল খুবই নগন্য। দিনমজুররা শ্রম বিক্রি না করতে পেরে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
এছাড়া খুলনা-পিরোজপুর-বরিশাল আঞ্চলিক সড়কের পিরোজপুরের কচানদীর বেকুটিয়া ফেরিঘাট এবং কাউখালী-স্বরূপকাঠি আঞ্চলিক সড়কের আমরাজুড়ি ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।বৃষ্টির ও জোয়ারের প্লাবনে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর, ধানিসাফা-মিরুখালী,সাপলেজা,বেতমোরসহ বলেশ্বর নদী তীরবর্তী অন্তত৩ি০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে ফসলে মাঠের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। এছাড়া কিছু পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছ ভেসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষি ও মৎস্য দপ্তরের কাছে এখনও ক্ষয়ক্ষতির কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।