মো. গোলাম মোস্তফা >>
শুধু নেতা হলেই চলবেনা! থাকতে হবে নেতৃত্বের গুণাবলীও(Leadership Quality)! আর তাই আজ নেতৃত্বের গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করবঃ পাহাড় সম অবৈধ টাকা, অস্ত্রের ঝনঝনানি, মাস্তানি (দুরমুচ পার্টি)! এদ্বারা নেতৃত্বে এলেও সেই নেতৃত্ব সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী! হয়তো উপরোক্ত তিনটি উপদান ব্যবহার করে কেউ কেউ কখনোকখনো সফলতা লাভ করে নেতৃত্বে এলেও এটিই শেষ কথা নয়! বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের দিকে তাকালেও আমরা এদৃশ্য দেখতে পাই কিন্তু তা থেকে কেউ কি শিক্ষা নিচ্ছি? সময় এসেছে ভোটারদেরও চিন্তা ভাবনা করার! শুধু নেতা হলেই চলবেনা! সেক্ষেত্রে কি ধরনের গুণাবলী একজন নেতার থাকা দরকার? তা জনগণকেও ভেবে দেখতে হবে বৈকি! কিছু সময়ের জন্য কিছু লোককে বোকা বানিয়ে রাখতে পাড়লেও সকল লোককে সকল সময়ের জন্য বোকা বানিয়ে রাখা যায়না! দরকার মানুষের ভালবাসা! সত্যিকারের নেতা হতে হলে, নিজের ভেতরে ভালবাসা অর্জনের সম্মোহনী গুণাবলী অর্জন করতে হয়! নিজের ভেতরে ভালবাসার গুণাবলী অর্জিত হলে এমনিতেই জনগণ সম্মানিত করবেন এবং বারবার নির্বাচিতও করবেন! নেতৃত্ব দেবার মত গুণাবলী আপনার আছে কিনা ভাবুন!
আপনি যে পর্যায়ের নেতাই হোন না কেন, আপনার নেতৃত্ব দেবার গুণ (Leadership Quality) থাকতে হবে! অনেক নেতা আছেন, নিজ দলীয় প্রধান বা প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কেও ভাল ধারনা রাখেন না! দলের গঠনতন্ত্রটি পর্যন্ত জানেন না! লেখাপড়া করে জ্ঞানার্জনের কোন বিকল্প নেই! দল করব, অথচ দলের সম্পর্কে জানব না, দেশ সম্পর্কে জানব না, সমসাময়িক ঘটনা জানব না, শুধু শ্লোগান ভিত্তিক নেতা হব! তাই আসুন ভেবে দেখুন, মিলিয়ে দেখুন, নিম্নে গুণাবলীর কোনটির অভাব বোধ করছেন আপনি? কোনটি বর্জন করা উচিৎঃ
(ক) চাই অদম্য সাহস আর দুনির্বার ইচ্ছা শক্তি(Will Force). বিশেষজ্ঞদের চারটি টনিক বা পরামর্শঃ
(১) নিজের মনকে এমনভাবে তৈরি করুণ, যাতে জ্ঞান ও বিবেক-বুদ্ধি বিকশিত হয়। মন মস্তিষ্ককে আকাশের মতো প্রসারিত করুন! (২) আদর্শ ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিজের মধ্যে থাকতে হবে সুদৃঢ় অংগীকার।
(৩) কোন দুর্বল ও নেগেটিভ চিন্তা মনের মধ্যে দেখা দেয়ার সাথে সাথে, পজেটিভ চিন্তার প্রচন্ড আঘাতে সেগুলোকে কুপোকাত করতে হবে।
(৪) নিয়মিত নিজ কর্মের অগ্রগতি মূল্যায়ন (evaluate) করতে হবে!
(খ) সম্মোহনী ব্যক্তিত্বঃ নেতৃত্বের প্রধান উপাদান ব্যক্তিত্ব! জীবনোদ্দেশ্য ও কর্মসূচি নির্ধারণ করা! আগাছা পরিষ্কার করা। যেমনঃ সংশয়, বাজে নিষ্প্রয়োজনীয় চিন্তা কল্পনা, ভয়-ভীতি এবং অলসতা ইত্যাদি!!
(গ) আত্মীয় করুনঃ আত্মবিশ্বাসকে আত্মীয় করুন, সকলের কাছে বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভর যোগ্য হওয়া।
(ঘ) নির্ভিকতাঃ সাহসী ও বীরত্বের প্রতিক হোন।
(ঙ) সমাবেশ ঘটানোঃ রীতিনীতি, নতুনত্ব, পর্যবেক্ষণ, মনোযোগ পূর্ণতা, সৃষ্টিধর্মী চিন্তা, সিদ্ধান্ত শক্তি, পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যশীলতা, সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দক্ষতা, মত প্রকাশের যোগ্যতা, বিজ্ঞতা, বিচক্ষণতা ও কর্মকৌশল ইত্যাদি!
(চ) দূরীকরণঃ আত্মোপহাস, সূচীগ্রস্থতা, স্বার্থপরতা, বদমেজাজি, দুর্বল চিন্তা, ঘৃণা, অসন্তোষ, অনাগ্রহ, মনকষ্ট, গোসা, হিংসা-বিদ্ধেশ ইত্যাদি!
(ছ) প্রিয় নেতৃত্বঃ জনগণের প্রিয় হওয়া চাই। জনগণের মধ্যে আপনাকে একনজর দেখার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে এবং দেখলে আনন্দিত হয়! মানুষ আপনাকে ভালবেসে কথা বলাকে সৌভাগ্য মনে করে। আপনার কথা শুনার জন্য ব্যাকুল থাকে। আপনার জন্য কষ্ট স্বীকার করতে সদা প্রস্তুত থাকে। নির্বিশেষে সকল মানুষকে আপনার হ্রদয়ে স্থান দিতে হবে। চরম সাধনা ও মেহেনত করতে হবে। (জ) খোলা মনের মানুষ হোনঃ মননশীল, ভদ্র, সুরুচিবান, খোলামনের অধিকারী, হাসি-খুশী, বন্ধুসুলভ ও সুহ্রদ হোন!!
(ঝ) ঐকান্তিক ও নিষ্ঠাবান হতে হবেঃ মানুষের কল্যাণ, উপকার, মানুষকে ভালবাসা, লোকের জন্য কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করা, সততা ও নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করা!
(ঞ) আদর্শের উপর অটল থাকুনঃ মানুষের ভাল গুণগুলো দেখা, র্নিঃস্বার্থপর হতে হবে। হাসিখুশি থাকা, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা। আত্মসম্মান বোধ জাগ্রত রাখা, কথা ও কাজের সাথে মিল রাখা!!
(চ) বাহ্যিক শুদ্ধতা অর্জনঃ অশোভন ও দৃষ্টিকটু অঙ্গভঙ্গী না করা। নাকে, দাঁতে আংগুল না দেয়া, দাঁত খোচান, নাক খোচান,কান চুলকানো থেকে বিরত থাকা! চুল এলোমেলো না থাকা, কাপড় চোপড় পরিচ্ছন্ন রাখা! কর্কশ কথা না বলা! বসায়, হাটায়, পোশাকে, আশাকে সৌন্দর্যতা রক্ষা করা!
(ছ) ভাষা শুদ্ধ করাঃ শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা, শিষ্টতা চর্চা করা, ভদ্রতা, আদব কায়দা ইত্যাদি মেনে চলা! (জ) পারদর্শিতা অর্জন করাঃ নিজেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
(ঝ) তীক্ষ্ণ অনুভব শক্তি অর্জন করুনঃ অন্যদের মর্যাদা দেয়া, অন্যের বদনাম না করে প্রশংসা করা। সত্য কথা বলায় রস থাকলে উপভোগ্য! নিজের সম্পর্কে কম বলা!
সহকর্মীদের সাথে পরামর্শঃ যত বেশী লোকের পরামর্শ ততবেশী লোকের হ্রদয়ে আপনি যায়গা পাবেন। পরামর্শের পরিধি বাড়ান এবং বিতর্কের পরিধি কমান!!
(ট) নাম মনে রাখাঃ বেশি বেশি নাম মনে রাখতে হবে, কর্মীদের নাম বেশী মনে রাখা, নামের সাথে ভাই যোগ করা।
(ঠ) মানুষের সাহায্যে প্রস্তুত থাকাঃ আবেগ ও বিবেক দীপ্ত হওয়া, আবেগ উদ্দীপনা থাকা চাই। এগুলো জ্যান্ত সজীব ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের গুণাবলী!!
(ড) দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলুনঃ নিজ স্বার্থ, নিজেকে উত্তম ভাবা, নিজের পচ্ছন্দকে অগ্রাধিকার দেয়া, নিজের বহিদৃশ্যের অসুন্দর্য্য, হতাশ, নিরাশ দুশ্চিন্তায় ভেঙ্গে পড়া, অকৃতজ্ঞতা, অহংকার, অধৈর্য, ঔদ্ধতা, সেচ্ছাচারিতা, প্রতারণা, কুটকৌশল, মিথ্যা, অবিশ্বস্ততা, বদমেজাজি অতুষ্টি, অালস্য, গাফিলতি ; অপরিচ্ছন্নতা, বিশৃঙ্খলা, কাঁচাকাজ, কর্মভীতি অসচেতনতা, বে-খবরী, অসৌজন্যতা, বদ অভ্যাস ইত্যাদি ঝেড়ে ফেলুন!!
(ঢ) নেতৃত্বের গুণাগুণঃ সত্যপ্রিয়তা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা, উদ্ভাবনী যোগ্যতা, সু-সাস্থ্য, উচ্ছাস, উচ্চাশা, প্রভাবশালী বক্তব্য রাখার দক্ষতা, কৌশল