ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - মঠবাড়িয়ার নেতারা কত যোজন দুরে ?

মঠবাড়িয়ার নেতারা কত যোজন দুরে ?

মো. গোলাম মোস্তফা >>

চলিতেছে সার্কাস! মঠবাড়িয়ায় চলিতেছে Political Parody(রাজনৈতিক মিথ্যে অভিনয়)! আমরা হলাম তার দর্শক ! আমাদের প্রশ্ন নেতাদের নিকট আমরা আর কতদিন আপনাদের এই রাজনৈতিক মিথ্যে অভিনয় দেখতে থাকব? আমরা সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ! আমাদের প্রশ্ন আপনারা, নেতারা কি তা বুঝেন? সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাই মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্থানীয় নেতারা! খাইখাই ভাব, কে কাকে ধরবে, কাকে মারবে, কাকে কাটবে, বলা মুশকিল! বলতে গেলে সকল প্রকার সামাজিক কর্মকাণ্ড স্থবিরতায় থমকে দাড়িয়েছে!

চলিতেছে রাজনৈতিক প্যারোডি( Parody) ! দল আপনাকে করতেই হবে, আপনি যে পেশার বা শ্রেণিরই হোন না কেন ! মঠবাড়িয়ায় চলছে রাজনৈতিক প্যারোডি (Parody) ! আপনার গায়ে কোন দলের গন্ধ (Smell) সেটা পরখ করার চেষ্টা চলবে তৃণমূল থেকে সর্বত্র! ইচ্ছা থাকলেও থাকতে পারবেন না নিরপেক্ষ, দলীয় তকমা লাগিয়ে দেবে আপনাকে ! ছিদ্রান্বেষণতো থাকছেই, চালনী যদি সুঁই এর ছিদ্রান্বেষণ করে, তখনই উদ্রেক হয় প্রশ্নের!!

নেতা হতে হবেঃ পাতি নেতা, ছাও নেতা, লম্বা নেতা, খাট নেতা, মোটা নেতা, পাতলা নেতা, ছোট নেতা, বড় নেতা! এখনো কালা জাহাংগির, সুইডেন আসলাম, শুভ্রত বাঈন মার্কা নেতা হয়তো হয়ে উঠেনি কিন্তু উঠতে কতক্ষণ!

দলের মধ্যে নানা সংগঠনঃ যদিও এসবের কোন অনুমোদন নেই! তারপরেও স্ব-ঘোষিত নেতার ভিড়ে সত্যিকারের নেতা খুঁজে পাওয়া দায়! আমরা যাবোটা কোথায়? ভাইয়ে ভাইয়ে পারিবারিক কোন্দল, নেতা এসে হাজির! কোথায় নেই নেতা? এসবের একটাই কারণ! আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া! চাকুরী দেব, বিদেশ পাঠিয়ে দেব, মামলা থেকে জামিন ইত্যাদি ইত্যাদি! গ্রাম্য সহজ সরল লোকগুলোকে সর্বশান্ত করা হচ্ছে! জনগণ এই সব টাউট বাটপারদের না পাড়ছে কইতে, না পাড়ছে সইতে!

সরকারি সকল উন্নয়ন প্রকল্প (রাস্তা, পুল, কালভার্ট, বেড়িবাঁধ, খাল খনন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাইক্লোন সেন্টার ইত্যাদি ইত্যাদি) সকলই করবেন নেতারা(ব্যতিক্রম বাদে)! তাদের সেই কাজ করার আদৌ কোন যোগ্যতা আছে কি-না, সেটা বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য হলো সে নেতা, কি-না ! ই-টেন্ডার সর্বত্র চালু হলে হয়তো কিছুটা পরিত্রান মিললেও মিলতে পারে! নেতা যত বড় মাপের, কাজও তত বড় মাপের পাবেন! আর পায় কে তাকে ! কাজ; মান সম্মত হচ্ছে কিনা দেখভাল করার জন্য দায়িত্ব যাদের, বেশিরভাগ দুর্নীতিবাজ! তারাও নেতাদের শক্তিসামর্থ্য সম্পর্কে ওয়াকেবহাল! তারাও নেতাদের পদমর্যাদা ও শক্তি অনুধাবন করেই কাজে মনোনিবেশ করেন এবং টু-পাইস কামান ! তারমানে কাজ হবে নিন্ম মানের! কোথায় নেতা নেই? হাসপাতালে নেতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতা, ব্যাংকে নেতা, প্রকৌশলী অফিসে নেতা, ভূমি অফিসে নেতা, নেতা আর নেতায় ছড়াছড়ি ! নেতার ঠেলায় পাবলিক নিঃশেষ ! দেখার কেউ আছে বলে মনে হয়না!

মঠবাড়িয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ভয়াবহ ! দলের মধ্যে গ্রুপিং, পেশি শক্তি প্রদর্শন ! কার শক্তি কত, যেকোনো কৌশলে প্রদর্শন করতে রীতিমত ব্যস্ত সবাই! কিছুদিন আগে দলীয় কোন্দলে এক নেতার মৃত্যু আমাদের ভাবায় এবং কাদায়ও! সামনে আরো ভয়াবহ অবস্থা অপেক্ষা করছে কি ? আমরা মঠবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ অবশ্য এমনটা আশা করিনা।

অবৈধ সম্পদ মানুষকে কখনো কখনো পশুত্বে পরিনত করে, সুখ দিতে পারেনা ! জানা থাকা সত্যেও আমরা চাই শুধু টাকা আর টাকা ! কফিনের কি পকেট আছে?? জনগণ এই অবৈধ সম্পদ ও পেশি শক্তির কাছে পরাজিত হচ্ছে বারবার! এথেকে মুক্তির পথ খুঁজতে হবে!

সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি গল্প দিয়ে শেষ করবঃ খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ, হযরত আবুবকর সিদ্দিক(রাঃ) মৃত্যুর পরে, খলিফার দায়িত্ব পেলেন হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)। রাতের অন্ধকারে বেড়িয়ে পরলেন সাধারণ জনগণের দুঃখ কষ্ট সচক্ষে দেখার জন্যে ! অন্ধকার এক কুঠুরিতে প্রবেশ করলেন, দেখতে পেলেন এক অন্ধ কুষ্ঠ রুগী(পীড়িত) ! বলছেন, হে আল্লাহ আবুবক্কর সিদ্দিক, নিশ্চই পৃথিবীতে নেই ! ওমর এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধকে জিজ্ঞাস করলেন আবুবকরকে কেন ? কি জন্য দরকার ? রাগান্বিত হয়ে বৃদ্ধ বলছেন ! তুমি কিভাবে বুঝবে, আমার কষ্টের কথা ! আবুবক্কর পৃথিবীতে থাকলে আমাকে এখনো পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হতো না ! ওমর ব্যাপারটি বুঝতে পেড়ে তাড়াতাড়ি খাবারের ব্যবস্থা করে, বৃদ্ধকে খাইয়ে দিতেই, বৃদ্ধ চিৎকার দিয়ে বললেন তুমি নিশ্চয়ই আবুবকর নও, তুমি আমাকে চামিচ দিয়ে খাওয়াচ্ছ? আমি কষ্ট পাচ্ছি, ওমর জিজ্ঞেস করলেন, আবুবকর কিভাবে খাওয়াতেন ? বৃদ্ধ বললেন, তিনি তার জিব্বাহ দিয়ে খাওয়াতেন। যাতে আমি কষ্ট না পাই ! এবার ওমর খুব লজ্জিত হলেন ! আর আল্লাহর কাছে পানাহ চাইলেন এবং মনেমনে বললেন এখানেও আমি আবুবকর সিদ্দিকের কাছে হেড়ে গেলাম!! পাঠক ভাবুনতো আমাদের নেতারা এখান থেকে কত যোজন যোজন দূরে !!

A man how much land r required ? Ans. Only three & half hand land r required ! একজন মানুষের কতটুকু জমি দরকার? যার যত দরকার হোক তবে স্মরণে থাকা দরকার মাত্র সাড়ে তিন হাত জমিই হবে প্রতিটা মানুষের শেষ ঠিকানা ।

 

লেখক > মো. গোলাম মোস্তফা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মাছরাঙা টেলিভিশন ।

 

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...