খালিদ আবু, পিরোজপুর >>
আগামীকাল রবিবার পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৮নং শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪জন, কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জনও দেউলবাড়ী-দোবড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদন্দিতা করছেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই তিনটি ইউনিয়নে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সহিংস ঘটনা ঘটছে। আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থীরা একধিক সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ নির্বাচন কমিশন সহ থানায় মামলা ও অভিযোগ করেছেন। অপর দিকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বলে পরিচিত প্রার্থীরাও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রেখেছেন। আর এ সবের পিছনে পিরোজপুর- ১ আসনের এমপি এ কে.এম.,এ আউয়ালের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন তিন ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা মার্কার প্রার্থীরা। ৩ প্রার্থীর একই অভিযোগ পিরোজপুরের সরকার দলীয় এমপি একেএমএ আউয়াল নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছেন।
প্রচারণার শেষদিন শুক্রবার রাতে শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের মধ্য জয়পুর গ্রামের নৌকা মার্কার সমর্থক সংখ্যালঘু ভূইমালী বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, দোকান ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ২জন। ঘটনার রাতেই ৬০/৬৫জনকে এজাহারভূক্ত ও অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নাজিরপুর থানা ওসি নিশ্চিত করেছেন।
নারীসহ গুরুত্বর আহত ৫ জনকে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাধীনরা হলেন, কল্পনা মালি (৬৯), চিত্তরঞ্জন মজুমদার (৬২), গীতা রানী ঢালী (৪২), পরিতোষ মালি (৩৭), ও মানস বেপারী (২৪)।
স্থানীয় ও আহত সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নৌকা প্রতীকের ৩/৪জন সমর্থক একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এসময় আনারস প্রতীকের (বিদ্রোহী প্রার্থী) ৪০/৫০ জন কর্মী-সমর্থক নৌকা মার্কার প্রচার ও ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। চায়ের দোকানে বসে থাকা একজন এর প্রতিবাদ করলে তাদের উপর হামলা চালায়। তারা আত্মরক্ষার্থে পাশের মালি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে মালিবাড়িতে ঢুকে ২/৩টি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় বাড়ির লোকজন বাঁধা দিলে তাদের উপর হামলা মারধর করে হুমকি দিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। হামলাকারী সন্ত্রাসীরা যাওয়ার পথে চায়ের দোকানটিতে অগ্নিসংযোগ করে দোকানটি পুড়িয়ে দেয়। গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল বেপারী (২৮) ও এনামুল বেপারী (২৬) আনারস মার্কার প্রার্থী মিজানুর রহমান রিপনের সমর্থক বলে জানাগেছে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়ে আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার রাতেই আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থী (নৌকা মার্কার) উত্তম কুমার মৈত্র বাদী হয়ে এজাহারভূক্ত ১৭জন ও অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।