মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদীর ইলিশের পোনা নিধন ◼️মৎস্য দপ্তরের নজরদারি নেই

0
27

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি 🔴🟢

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদীতে ইলিশের পোনা নির্বিচারে মারা পড়ছে। অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ বাঁধা জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বঘ্নে ইলিশের পোনা নিধন করছে। চলতি রমজান মাসে মৎস্য বিভাগের কোনো অভিযান না থাকায় অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনাসহ নানা মাছের পোনা নিধন করে তা বাজারজাত করছে ।

স্থানীয়রা জানান, মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নে কাটাখাল, পুরানো খাল, লঞ্চঘাট, তুষখালীর তুলাতলা, হোতাখাল ও বেতমোরের সাংরাইল এলাকায় নিষিদ্ধ জালে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের পোনা নিধন করা হচ্ছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে তাতে বলেশ্বর নদীতে আগামী মৌসুমে ইলিশ মাছ আহরণে চরম সংকট দেখা দেবে। নদীতে ছোট ফাঁস জালের অবাধ ব্যবহারে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশ বিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। মৎস্য আইনে মাছের পোনা সংরক্ষণে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁস জাল ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ বলেশ্বর নদীর জেলেরা আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চি ফাঁস জাল ব্যবহার করে ছোট মাছ নিধন করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তুষখালী থেকে বড় মাছুয়া হয়ে খেতাছিড়া পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নিষিদ্ধ বাঁধা, গড়া ও বেহুন্দি জাল দিয়ে জেলেরা মাছ শিকারা করে। এসব জালের ফাঁস আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চি। ওই ছোট ফাঁসের এ নিষিদ্ধ জালে অবাধে পোনা মাছ নিধন চলছে। সাধারণত জেলেরা ইলিশ, পোয়া, টেংরা, চিংড়ি, তপসে সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে থাকেন। জালে এসব মাছের পাশাপাশি অনেক মাছের পোনাও আটকা পড়ে। এসব পোনা কোনো কাজে লাগে না বলে তাঁরা নদী তীরে ফেলে দেন। এদিকে নদী থেকে ধরা মাছ ট্রলারে করে বড়মাছুয়া ও কাটাখাল বাজারে প্রকাশ্যে খোলা ডাক দিয়ে মাছ বিক্রি করা হয়। মাছের মধ্যে ইলিশের পোনা, ডিমওয়ালা গলদা চিংড়ি, পাঙ্গাসের পোনা সহ নদীর বিভিন্ন ছোট মাছ রয়েছে।

বড় মাছুয়া ইউনিয়নে খেজুরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল আকন অভিযোগ বলেন, জেলেদের নিষিদ্ধ বাঁধা জালে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের পোনা মারা পড়ছে। জেলেরা ইলিশের ছোট পোনাগুলো নদীতে ফেলে দিয়ে আসে। দেড়-দুই ইঞ্চি সাইজের পোনা গুলো ঘাটে এসে প্রকাশ্যে খোলা ডাকে বিক্রি করছে। স্থানীয় মৎস্য বিভাগের কোনো নজরদারি না থাকায় এ অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মৎস্য ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, অসাধু জেলেদের মাছের পোনা নিধনের ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বার বার অবহিত করা হলেও কোন অভিযান পরিলক্ষিত হয়নি। নির্মম এ নিধন যজ্ঞের কারনে প্রজননকালীন সময়ে ইলিশ রক্ষায় সরকারের গ্রহণ করা সকল উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অলিউর রহমান জানান, রমজানের কারণে আমাদের অভিযান কিছুটা ভাটা পড়েছে। শুনেছি মাছের পোনা নিধনের প্রকোপ বর্তমানে বেড়ে গেছে। শিঘ্রই পোনা নিধনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

About The Author