ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - গাছচাপায় পা ভেঙে একবছর ধরে বসে ঘুমান দিনমজুর সিদ্দিক !

গাছচাপায় পা ভেঙে একবছর ধরে বসে ঘুমান দিনমজুর সিদ্দিক !

দেবদাস মজুমদার >>
দিনমজুর সিদ্দিকুর রহমান(৫০) বড়ই দুর্ভাগা। ভূমিহীন জীবনে কৃষি জমিতে কামলা খেটে চলছিলো চার সদস্যের পরিবার। বড় স্বপ্ন ছিলো সিদ্দিকের ব্যবসায়ি হবার। তাতে দিনমজুরীর হাড়ভাঙা পরিশ্রম থেকে বেঁচে যেতেন। দিনমজুরী ছেড়ে তাই এলাকায় গাছের ব্যবসা শুরু করলেন। গৃহস্থেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাছ কিনতেন। সেই গাছ স-মিলে কেটে বিক্রয় করতে সিদ্দিক। অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন ছিলো তার। বছর খানেক আগে সে স্বপ্ন তার ফিকে হয়ে যায়। একদিন ভর দুপুরে এক গৃহস্থের কেনা গাছ কেটে ট্রলিতে উঠাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। অসাবধানতাবশত গাছের গুড়ির নিচে চাপা পড়েন সিদ্দিক। বাম পায়ের হাঁটুর হাড় ভেঙ্গে যায়। চিকিৎসার অভাবে গত এক বছর ধরে ভাঙা পা নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন সিদ্দিক। উন্নত চিকিৎসার সংগতি না থাকায় গ্রামের কবিরাজি চিকিৎসায় কোন সুফল হয়না। ভাঙা পায়ের অসহ্য যাতনায় কাতরাচ্ছেন সিদ্দিক।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নের মধ্য তুলাতলা গ্রামের মৃত মুজাহার হাওলাদারের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান অর্থাভাবে চিকিৎসা চলছেনা। তুলাতলা গ্রাম্য বাজারে একটি ভাড়া দোকানের চৌকিতে গত একবছর ধরে পড়ে আছেন তিনি। গত বছরেও হাসপাতালে যেতে পারছেন না। ভাঙা পা আর ফুলে ফেঁপে ওঠা পায়ের চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার মতো কোন সংগতিই নেই সিদ্দিকের। গত একবছ ধরে বিছানায় ভাঙা পা ছড়িয়ে বসে থাকেন। শুয়ে ঘুমানোরও সুযোগ নেই তার। দিবারাত্র বসে থাকেন আর সুস্থ জীবন ফিরে পাবার জন্য কাঁদেন।
আহত সিদ্দিকুর জানান, গাছের গুড়ির নিচে চাপা পড়ে হাটুর জয়েন্টের উপরে হাড় ভেঙে যায়। মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কয়েকদিন পড়ে থাকেন। চিকিৎসকরা জানান সুস্থ হতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সিদ্দিকুর ভাঙা পা নিয়ে গ্রামে বাড়ি ফিওে আসেন। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংগতি না থাকায় গ্রামে বসে কবিরাজি নানা চিকিৎসা নেন। কিন্তু তাতে কোন ফল হয়না। ভাঙা হাড় আর জোড়া লাগেনা তার। উপরন্তু পুরো পা তার ফুলে ওঠে। সেই থেকে উন্নত চিকিৎসার আশায় বসে আছেন। কর্মহীন উপায়হীন সিদ্দিকের চার সদস্যের পরিবারের দুবেলা পেটের ভাত সংস্থানের এখন যেখানে সম্ভব হয়না সেই দুর্ভাগা জীবনে উন্নত চিকিৎসা কেবল স্বপ্নই থেকে যায়।
অসহায় সিদ্দিক জানান, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এক থেকে দেড়লাখ টাকার প্রয়োজন। দয়ালু মানুষের সহায়তা ছাড়া তার আর চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাই সে সহৃদয় মানুষের কাছে চিকিৎসার মিনতি জানিয়েছেন।

স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক নূরুল আমীন রাসেল বলেন, সিদ্দিকুরের জীবন এখন কষ্টের। যেভাবে সে গাছের গুড়ির নিচে চাপা পড়ে পা ভেঙে আহ হয়েছেন তা হৃদয় বিদারক। গত একবছর ধরে চিকিৎসাবিহীন ভাঙা পা নিয়ে তার অসহনীয় জীবন একন কর্মহীন। বসেই ঘুমাতে হয় তাকে। কর্মহীন জীবনে পেটে ঠিকমত যেখানে ভরপেট খাবার মেলেনা সেই জীবনে উন্নত চিকিৎসা হবে কি করে ! মানবিক মানুষের সহায়তা ছাড়া আহত সিদ্দিকের চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাই সহৃদয় মানুষর সহায়তা কামনা করছি।

যোগাযোগ ঃ
অসুস্থ সিদ্দিকুরের মোবাইল ও বিকাশ নম্বর- ০১৭২৬৪১৮৫৭৮
ব্যাংক হিসাব নম্বর- সঞ্চয়ী হিসাব ৯৮০১১৮০৪০৯৪
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সাপলেজা শাখা, মঠবাড়িয়া,পিরোজপুর।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...