ব্রেকিং নিউজ
Home - অন্যান্য - ধর্ম ও জীবন - কিয়ামতের আলামত

কিয়ামতের আলামত

কিয়ামত অারবী শব্দ।এর অর্থ হচ্ছে মহাপ্রলয়।কিয়ামতের অারো নাম অাছে। যেমন,ইয়াউমুল জাযা (প্রতিদানের দিন),ইয়াউমুল হিসাব (হিসাবের দিন),ইয়াউমুল কাযা(বিচারের দিন),ইয়াউমুদ দিন(শেষ বিচারের দিন),ইয়াউমুল হাশর(সমাবেশের দিন),ইয়াউমুল জাময়ে(একত্রিত হওয়ার দিন),ইয়াউমুল বায়াছ(পূনরুত্থানের দিন)। পবিএ কুরআনের সুরা নাবা এর ১৭-১৮ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ” নিশ্চয়ই বিচারের দিন একটি নির্ধারিত সময় অর্থৎ যে দিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, অনন্তর তোমরা দলে দলে এসে উপস্হিত হবে। ” কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে তা একমাত্র অাল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।তবে কিয়ামত সংঘঠিত হওয়ার পূর্বে কতিপয় নিদর্শন দেখা যাবে। বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ( স:) বলেছেন,কিয়ামতের পূর্বে ছোট ও বড় অালামত প্রকাশ পাবে।ছোট অালামত গুলো নিম্মে বর্ণিত হলঃ
১।সামাজিক অবক্ষয় চরমভাবে বৃদ্ধি পাবেঃ এ অালামতের সাথে জাতিসংঘের অান্তর্জাতিক অপরাধ প্রশমন কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত সার্বজনীন অপরাধ ও বিচার নামক সমীক্ষায় বর্ণিত তথ্যের সাথে মিল দেখা যায় যে,গত শতাব্দীর চেয়ে বর্তমান শতাব্দীতে অপরাধের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।সারা পৃথিবীর প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন ব্যক্তি বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পরেছে।মাদক দ্রব্যাদির প্রকার ও ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।পৃথিবীর বড় বড় শহরের অধিবাসীদের ৬৬% মানুষ প্রতি ৫ বছরে অন্তত একবার কোন না কোন অপরাধীর শিকার হয়েছেন।সামাজিক বিপর্যয়ের কারণ হচ্ছে,কুরঅান ও সুন্নাহ এর চর্চা ও অামল না করা।মানুষ ধীরে ধীরে ধর্মের পথ থেকে সরে যাচ্ছে।তাই সামাজিক অবক্ষয় চরম অাকার ধারণ করতেছে।১৪ শ বছর অাগে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) বলেছেন, মানুষ সামাজিক বিপর্যয় এবং সংঘাতের কষ্ট ভোগ করবে।
২।ইসলামী অাকীদা বর্জিত শিক্ষা চালু হবে।
৩।সন্তানরা পিতা মাতার সাথে দুর্ব্যবহার করবে।এমনকি তারা তাদেরকে হত্যা করবে।
৪।অন্যায়-অবিচার প্রকট অাকার ধারণ করবে।
৫।সুদ,ঘুষ, নারী ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ ও সমকামিতা বৃদ্ধি পাবে।
৬।হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ ও লালসা বৃদ্ধি পাবে।
৭।জনগণের সম্পদকে নিজের সম্পদ মনে করবে।
৮।যাকাতকে জরিমানা হিসেবে মনে করবে।
৯।শিরক, বিদয়াত,অামানতের খিয়ানত, ওয়াদা খিলাফ অহরহ হবে।
১০।দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের পরিবর্তে দুষ্টের পালন ও শিষ্টের দমন করা হবে।
১১।অসৎ ও দুষ্ট লোকের দৌরত্ম্য বৃদ্ধি পাবে।
১২।মানুষের নিকট থেকে নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাবে।
১৩।অশ্লীলতা, নগ্নতা ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে।
১৪।মানুষের হৃদয় কঠিন হবে।
১৫।নারীরা পর্দা (হিজাব) বর্জন করবে। তালাকের প্রচলন বৃদ্ধি পাবে এবং বিবাহ বর্হিভুত সন্তানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
১৬।বিশ্বাসভাজন লোকের সংখ্যা কমে যাবে এবং সত্য গোপন হবে। মিথ্যা সাক্ষ্য ও অপবাদ প্রাধান্য পাবে।
১৭।অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে দায়িত্বপূর্ন পদে বসানো হবে।
১৮।সম্পদ হবে মানুষের যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি।সম্পদের মানদন্ডে সম্মানের পরিমাপ হবে।
১৯। মিথ্যাচার, প্রতারণা ও ঠগবাজি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
২০।খুন-খারপীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
২১।তরুণরা বিদ্রোহী ভাবাপন্ন হবে।যুবক ও বয়স্কদের মধ্যে সৌহার্দ ও সম্মানবোধের অবনতি ঘটবে।
২২।পরিবার, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের মধ্যে সৌহার্দমূলক সম্পর্কের অবনতি হবে।
২৩।মানুষ অতি মাত্রায় পার্থিব স্বার্থে জড়িয়ে পড়বে এবং পরলোকের কথা ভুলে যাবে।খারাপ কাজ থেকে কেউ কাউকে বারণ করবে না।
২৪।পুরুষের সংখ্যা কমতে থাকবে এবং নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
২৫।অসৎ ব্যক্তিরা দেশ ও সমাজ পরিচালনা করবে।
২৬।মুসলমানেরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদের অনুকরণ ও অনুসরণ করবে।
২৭।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ঘনঘন বন্যা, ভূমিকম্প এবং ঘূর্ণিঝড় হবে।
২৮।মানুষ মসজিদে শোরগোল ও খেলাধূলা করবে।
২৯।৩০ জন ভন্ড নবীর অাবির্ভাব হবে।
৩০।কুরঅান ও হাদীস চর্চা ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।
৩১/মানুষের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে।
৩২/মহিলারা পন্য হিসেবে ব্যবহ্নত হবে। তাদের ছবি বিজ্ঞাপনে ব্যপকভাবে ব্যবহার করা হবে।
৩৩/ মানুষ চুলে কলপ ব্যবহার করবে।
৩৪/ঘন ঘন বজ্রপাত হবে।
৩৫/নর-নারীর মধ্যে জিনা,ব্যভিচার,পরকীয়া, অবৈধ সন্তান বৃদ্ধি পাবে।
৩৬/ গায়ক- গায়িকা ও নর্তকী ও বাদ্য যন্ত্রের কদর ও প্রসার বৃদ্ধিপাবে।
৩৭/ যুলুম,অত্যাচার,নির্যাতন এবং শোষণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে
৩৮/ফোরাত নদীর পানি ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।
৩৯/অঙ্গ- প্রত্যাঙ্গে মালিশ সেবা বৃদ্ধি পাবে।
৪০/সাক্ষাৎ এর সময়ে সালামের পরিবর্তে অশালীন ও অমার্জিত কথাবার্তা বলা হবে।
৪১/পুরুষ তার স্ত্রীর অনুগত হবে এবং তার মাতার অবাধ্য হবে।
৪২/বন্ধুর সাথে সদ্ব্যবহার করবে কিন্তু পিতার সাথে দুর্ব্যবহার করবে।
৪৩/ ধর্ম বিবর্জিত শিক্ষার প্রচলন হবে।
৪৪/ পাপচারীরা গোএের সরদার হবে।
৪৫/ নিকৃষ্ট লোক সমাজের পূজনীয় হবে।
৪৬/শেষ জমানার লোকেরা তাদের পূর্ববতী যুগের লোকদের অভিশাপ দিবে।
৪৭/ রেশমী বস্ত্র পরিধান করবে।
৪৮/ অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে দুষ্ট লোকের সম্মান দেখানো হবে।
৪৯/ ধনী ব্যক্তিরা দাসী রাখবে এবং তারা দাসীদেরকে স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করবে।
৫০/ ঘন ঘন বাজার বসবে এবং তাতে অধিক সংখ্যক মহিলারা প্রবেশ করবে।
৫১/ সন্তান মায়ের অবাধ্য হবে।
৫২/ মুসলমানেরা শরিয়ত বাদ দিয়ে তরিকত অনুসরণ ও অনুকরণ করবে।
বৃহৎ অালামতসমূহঃ হযরত মুহাম্মাদ সঃ বলেছেন, যখন পর্যন্ত না নিন্মের ১০ টি বিশেষ আলামত দেখবে,ততদিনে কিয়ামত হবে না।( মুসলিম শরীফ) ।
১।পৃথিবী ধুমায়িত হবে।
২।মানুষকে বিপথগামী করার জন্যে দুর্দান্ত ও নিষ্ঠুর এক চোখ বিশিষ্ট দাজ্জালের অাবির্ভাব হবে। সে মিথ্যা প্রতারণা ও ধর্মের নামে নানা প্রলোভন দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে।
৩।দাজ্জালকে হত্যা করার জন্যে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উম্মাত হিসেবে হযরত ইশা (অাঃ) পৃথিবীতে অাগমন করবেন।তিনি দাজ্জালকে হত্যা করে পৃথিবীতে ন্যায় বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত করবেন।
৪।মাটি থেকে দাব্বাহ নামক একটি প্রানীর অাবির্ভাব হবে।
৫।কিয়ামতের ১০০ বছর পূর্বে একদিনের জন্যে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে।
৬।পৃথিবীর উত্তরে অবরুদ্ধ বর্বর ও নিষ্ঠুর ইয়াজুজ ও মাজুজদের অাবির্ভাব হবে।তারা সমতল ভূমিতে এসে হত্যা ও লুটতরাজ করবে।তাদেরকে কেহ দমন করতে পারবে না।
৭।পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে ভূমিকম্প হবে।
৮।অারব উপদ্বীপে ভূমিকম্প হবে।
৯। ফোরাত নদীর পানি শুকিয়ে যাবে এবং স্বর্ণের পাহাড় যে পর্যন্ত না স্বর্ণের পাহাড় বের হবে।
১০। হেজাজ ভূমি থেকে যে পর্যন্ত না অগ্নির উদ্বভ ঘটবে।
উৎসঃ১।সহি হাদীস গ্রন্থ সমূহ ২।কিয়ামতের অালামত -হারুন ইয়াহিয়া ৩। খায়রুল হাসর -, শাহ রফী উদ্দিন মুহাদ্দিসে দেহলবী রহঃ।৪। কিয়ামত কখন হবে?- সম্পাদনায়, মুফতি মুস্তফা আল মাহমুদ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...