ব্রেকিং নিউজ
Home - অন্যান্য - কৃষি ও বাণিজ্য - লেবুর পাতা করমচা, যাহ বৃষ্টি ঝরে যা……!!

লেবুর পাতা করমচা, যাহ বৃষ্টি ঝরে যা……!!

মোঃ রাসেল সবুজ >

গ্রামে এক সময়ে করমচার প্রচুর ফলন হত।কিন্তু বন-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করা এবং জমি কেটে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে ভেষজ গুণে ভরপুর করমচা।করমচা খুবই জনপ্রিয় টক জাতীয় ফল।কাঁটায় ভরা এ গাছটি গ্রাম থেকে এখন শহরেও চাষ করা হয়।কারও কারও বাড়ির ছাদ কিংবা বারান্দায়ও দেখা মেলে করমচার।করমচা পুষ্টিগুণে যেমন সমৃদ্ধ।তেমনি আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।তবে যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাঁদের করমচা না খাওয়াই ভালো।তাজা করমচা নিয়মিত খেলে অনেক রোগ এড়ানো যায়।তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাজারে প্যাকেটে করে চেরির নামে কৃত্রিম রং দেওয়া করমচা বিক্রি হয়।এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর।কেনার সময় তাই সতর্ক থাকতে হবে।

অ্যাপোসাইনেসি শ্রেণীতে ১৫৫ বর্ণের প্রায় এক হাজার গোত্রের করমচা গাছ দেখা যায়।করমচা গাছ বেশ ঝোপতলা ধরনের শক্ত জাতের কাঁটাওয়ালা গুল্ম।বড় সাদা ও ফিকে গোলাপি রঙের সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত করমচা ফুল দেখতে কিছুটা কুন্ধ ফুলের মতো।এর ফলের রঙ কাঁচায় গাঢ় সবুজ, পাকলে লাল হয়।ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে।বর্ষায় ফল পাকে।করমচা চাষে জমি উঁচু হলেই ভালো, তবে নিচু জমিতেও চাষ করা চলে যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো থাকে।করমচা খুব শক্ত ধরনের গাছ এবং দেহে আঠালো রস থাকায় রোগ ও পোকায় সহজে আক্রমণ করতে পারে না।ইংরেজিতে করমচাকে Bengal currant বা Christ’s thorn বলা হয়।Carissa গণভুক্ত কাঁটাময় গুল্মজাতীয় করমচা উদ্ভিদটি এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে পাওয়া যায়। কাঁচা ফল সবুজ, পরিণত অবস্থায় যা ম্যাজেন্টা লাল-রং ধারন করে।অত্যন্ত টক স্বাদের এই ফলটি খাওয়া যায়, যদিও এর গাছ বিষাক্ত।করমচার ঝোপ দেখতে খুব সুন্দর।

প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় আছে শর্করা-১৪ গ্রাম, প্রোটিন-০.৫ গ্রাম, ভিটামিন এ-৪০ আইইউ, ভিটামিন সি- ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন-০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন-০.২ মিলিগ্রাম, আয়রন-১.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম-১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-২৬০ মিলিগ্রাম, কপার-০.২ মিলিগ্রাম।
করমচায় চর্বি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না।

ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা মুখে রুচি ফিরিয়ে দেয়।এই ফল রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষা দেয়।শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে।যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা।মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে।করমচা কখনো কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবেও কাজ করে।এ ছাড়া পেটের নানা অসুখের দাওয়াই করমচা।শরীরের ক্লান্তি দূর করে করমচা শরীরকে চাঙা রাখে।বাতরোগ কিংবা ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী।করমচাতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী।এটি ত্বক ভালো রাখে ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।

তাই এবারের বর্ষায় বাড়িতে সবাই একটি করে করমচা গাছ রোপণ করুন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়া পৌরসভায় ৫৩ কোটি টাকার সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পে নাজুক অবস্থা অনিয়মিত পানি সরবরাহ, পানি ময়লা দুর্গন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার প্রথম শেণীর পৌরসভায় পানি সরবরাহ প্রকল্পে পানি সরবরাহ নিয়ে নানা ...