জীবন সেটাই আমরা যা ঘটাই!

0
41

জীবন কি আসলে সহজ? একজন ব্যর্থকে জিজ্ঞেস করলে সহজ হবে না।রজীবন কি আসলে কঠিন? একজন সফলকে জিজ্ঞেস করলে কঠিন হবে না। জীবন আসলে কেমন? সে কখনো সহজ আবার কখনো কঠিন। এমন সহজ যেন পেয়েও না পাওয়া। এমন কঠিন তবু অভেদ্য না। জীবন আসলে অভিমানী প্রেমিকা! তাঁর হাসি এবং কান্নার সঠিক অর্থ কখনোই উদ্ধার করা যায় না। কার্তিকের রাত্রে অসহ্য গরম আবার মাঘের রাতে তুমুল বৃষ্টি। তাকে চেনা সহজ নয়, তাকে পাওয়াও কঠিন নয়।

একজন বেকারের রাতজাগা যতটা না পছন্দের কাজ পাওয়ার জন্য তারচেয়ে বেশি দু’টো পয়সার সংস্থান করার জন্য। তারও অধিক দুঃখের জন্য। অর্থ তো শেষমেশ অনর্থ আনে। যার কাজ আছে সে ভাবে কীভাবে কাজ পালানো যায়। আর কতোদিন চোয়াল চেপে জোয়াল টানা যায়। একবার যদি দেয়া যেত ফাঁকি তবে জীবন ঘুরে ঘুরে দেখা যেত যা আছে বাকি। কেউ তাঁর অবস্থানে তুষ্ট নয়! আকার-নিরাকার।

যে ছেলেগুলো সারাদিন হৈ-হুল্লোড়ে কাটায় তাদের বাবাদের ঘামের ফোঁটাগুলোই পুঁজি। একদিন ওদের কাঁধেই রাজ্যের দায়িত্ব আসবে। ওরাই সব সামলাবে। এটাই জীবনের অঙ্ক। যে মেয়েটা মস্তিষ্কে আত্মহত্যা এবং হাতে নেশার বড়ি নিয়ে ঘোরে সেটাও জীবন। চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালের বারান্দায় কাতরানো রোগীর চেয়েও তার স্বজনদের যে বিপন্নতা সেই চিত্রই জীবন। পাতায়া বীচে বালুতে অর্ধশরীর লুকিয়ে সূর্যের পানে চেয়ে উপভোগ করার আলোও জীবন।

মরনের পূর্বভাগই কেবল জীবন নয়, মরনের পরেও জীবন থাকে। সে জীবনের শস্যক্ষেত আবার এই জীবন। জীবন আসলে কুয়াশার মত। আলো বাড়ার সাথে সাথে যতটা স্বচ্ছ হয় তার অধিক ফ্যাকাশে হতে শুরু করে। যে যেভাবে জীবন দেখেছে সে সেভাবেই বলেছে! অন্ধের হাতি দেখার মত আমরা জীবনের সিকিভাগ দেখেছি। জীবন এক বিশাল রাজ্য। মহৎ জীবনের এক আনাই আমাদের সমগ্র জীবনে ধরা দেয়।

যে আঘাত পেয়েছে তার কাছে জীবনের যে অর্থ আর যে আঘাত দিয়েছে তার কাছে জীবনের অর্থ সমার্থ নয়! জীবনের প্রকৃতার্থ আয়ু ফুড়িয়ে যাওয়া, মরণ সমুদ্রের বেলাভূমিতে দাঁড়ানো। জীবনের শেষ হিসাব সরলাঙ্কের মত সোজ। সবার ফলাফল এক- মৃত্যু। অতঃপর একবার পিছনে তাকানো,কী করলাম আর কী কী করতে পারতাম! দীর্ঘশ্বাস কিংবা প্রশান্তি -যেটির মাত্রা অতিমাত্রায় থাকবে, জীবন আসলে সেটাই! জীবন সেটাই যেটা রোজ রোজ ঘটাই। জীবন সেটাই যেখানে সব মুহুর্তে নিজেকে খাটাই!

লেখকঃ লেকচারার, মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ।

About The Author