ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান

সংস্কারের অভাবে পিরোজপুরের ৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে দুটি বিদ্যালয়ে বিকল্প স্থানে পাঠদান করা হলেও বাকি বিদ্যালয়গুলোর জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিশুদের পাঠদান। দ্রুত সংস্কার বা নতুন ভবন করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৯৬২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ৩৬টি জরাজীর্ণ বিদ্যালয়কে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সূত্রে ও সরেজমিনে ছয়টি বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বিদ্যালয়ের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। দেয়ালের বিম ও খাম্বাগুলোতে ফাটল ধরেছে।
গত শনিবার সদর উপজেলার পাঁচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, ১৯৮৭ সালে নির্মিত আধা পাকা ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে ইট বের হয়ে গেছে। খাম্বাগুলোতে ফাটল ধরে রড বের হয়ে গেছে।
গত ২০ আগস্ট বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর মো. রনু আহমদ। তিনি পরিদর্শন বইতে লিখেছেন, ‘অবকাঠামোগত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শিক্ষকগণ পাঠদান করছেন।’
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা খানম বলে, ‘যেকোনো সময় আমাদের বিদ্যালয়ের দেয়াল ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা সব সময় আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করি।’ প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার মলঙ্গি বলেন, ‘বিকল্প কোনো জায়গা না থাকায় কয়েক বছর ধরে ২০০ শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে এখানে পাঠদান করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টির নতুন ভবনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বারবার প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও আমরা কোনো ফল পাচ্ছি না।’
মঠবাড়িয়া উপজেলার সোনাখালী বন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসরাত জাহান বলেন, ‘১৯৭৯ সালে নির্মিত বিদ্যালয়ের ভবনটি ১০ বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে আছে। ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বিমের রড বের হয়ে গেছে। ধসে পড়ার ভয়ে শিক্ষার্থীরা সেখানে ক্লাস করতে চায় না।
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পিরোজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কাউখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, ৩৬টি জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনের তালিকা করা হলেও জেলার সাতটি উপজেলায় শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব ভবন সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ করা না হলে শিশুদের পাঠদান দারুণভাবে ব্যাহত হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল লতিফ মজুমদার বলেন, জরাজীর্ণ ৩৬টি বিদ্যালয়ের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল কার্যালয়ের উপপরিচালকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভবনগুলো সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...