মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী কে, এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোস্তফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিচালনার অব্যাবস্থাপনা, আর্থিক দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষক কর্মচারীদের স্কুল প্রদেয় ভাতাদি গত ২০ মাস ধরে স্থগিত রাখার অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ ২০ জন শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ ২২ টি অভিযোগ আনেন। আজ শনিবার দুপুরে স্থানীয় একটি রেস্তরায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ খলিলুর রহমান ২০ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন ।
অভিযোগে উলেখ করা হয় বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী বর্তমান প্রধানশিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি খামখেয়ালী ভাবে পরিচালনা করে আসছেন। শিক্ষকদের নানা ভাবে হয়রানী ও অসৌজন্য মূলক আচরন করছেন । গত ২০ মাস ধরে শিক্ষদের স্কুল প্রদেয় বেতন-ভাতাদি বন্ধ করে রেখেছেন। বর্তমান করোনা কালে শিক্ষকরা বিদ্যালয় হতে ভাতাদি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
অভিযোগে আরও উলেখ করা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অনুদান দুই লক্ষ টাকা ওই বছর একটি বেসরকারি সংস্থার সম্মেলন খরচ বাবদ ৬০ হাজার টাকা চলতি বছর বিদ্যালয়ের ম্যাগাজিন প্রকাশ বাবদ ৩ লক্ষ ২১ হাজার টাকার ভুয়া বিল ভাউচার সহ বিদ্যালয় ফান্ডের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। বিদ্যালয়ের অর্থে নির্মিত কে, এম লতীফ সুপার মার্কেটে ৬৫০ টি দোকান রয়েছে। ওই দোকান বরাদ্দ বাবদ স্টল প্রতি ২ লক্ষ টাকা নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের অন্যান্ন আয় সহ বিদ্যালয়ের ফান্ডে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা গচ্ছিত থাকার কথা। যা এখন শুন্যের কোঠায়।
বিদ্যালয়য়ে নেটিজেন নামে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানকে লাখ লাখ টাকা প্রদানের বিল ভাউচার হলেও পূর্ণাঙ্গ সুবিধা মেলেনি। অথচ এ খ্যাতে শিক্ষার্থী প্রতি ৩০০ শত টাকা হারে উত্তোলন করছেন। প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর বিদ্যালয়ের অর্ধ কোটি টাকা ব্যায়ে বিলাসবহুল বাসস্থান নির্মাণ করেন । এতে বিদ্যালয়ের মুসলিম ছাত্রাবাসটি চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। নিজের মোটরসাইকেলে চলাফেরা করলেও ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলের বিল ভাউচার করে স্কুলের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয় ফান্ড হতে প্রতিমাসে ১৯ হাজার ৩৪৫ টাকা নেন অথচ এমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা যোগদানের সময় মাত্র ৫০০ টাকা পান।
গত বছর বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক লাথি মারেন । এঘটনায় তার অপসারণ দাবি কওে ছাত্র আন্দোলন সংঘটিত হয়। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষকদের নানা ভাবে হয়রানি করে। এমনকি শিক্ষক র“মে পুলিশ ডেকে এনে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। বিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের নিতি গালিগালাজ করেন। তিনি প্রত্যক্ষ মদদ দিয়ে আমির সিরাজী নামে এক ভাড়াটে মমলাবাজ দিয়ে পিরোজপুর আদালতে মামলা দায়ের করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত করান। তিনি বিদ্যালয়ের জাতীয় করনের মামলার নামে বিদ্যালয়ের ১৮ লক্ষ টাকা অপ্রচয় করেন। তিনি বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা খান সাহেব হাতেম আলীকে স্বাধীনতা বিরোধী আক্ষা দিয়ে চরম অপমান ও অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারনে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এমন অবস্থায় বিদ্যালয়ের সকল আয় ব্যয় হিসাব হয় প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবী জানান শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অমল চন্দ্র হালদার, বর্তমান সহকারী শিক্ষক মোঃ নুর হোসেন ও মোঃ এনামুল হক।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে বলেন, বিদ্যালয়র অর্থ খরচ আমার একার আওতাভুক্ত নয়। সংশিষ্ট খরচের ভাউচার সংরক্ষিত আছে।