আরাফাত হোসেন নয়নঃ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা তখনও ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের দখলে।
১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত ভোর রাতে সুন্দরবন অঞ্চলের সাব-সেক্টরের কমান্ডিং ইয়াং অফিসার লেফটেন্যান্ট আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে চার শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সুন্দরবন অঞ্চল থেকে মঠবাড়িয়াতে প্রবেশ করেন। সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধারা মঠবাড়িয়ার স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাস্ত করতে মঠবাড়িয়া শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালির হাট বাজারে অবস্থান নেন।
অপর দিকে, শরণখোলা থেকে ওই রাতে (ট্রলারে) ১২০ জনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি মুক্তিযোদ্ধার দল কালির হাট বাজারে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেন। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি পায়। মুক্তিযোদ্ধাদের ওই সশস্ত্র অবস্থান টের পেয়ে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার বাহিনী চক্র ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরে । ওই রাতেই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে স্বাধীনতা বিরোধীদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পাঠান।
ভীত সন্ত্রস্ত স্বাধীনতা বিরোধীরা বিনা রক্তপাতে আত্মসমর্পণ করলে মঠবাড়িয়া অঞ্চল শত্রু মুক্ত হয়।
এরপর, ১৮ ডিসেম্বর সকালে কালির হাটে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় উল্লাসে মিছিল করতে করতে মঠবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করেন।
এভাবে কোন রক্তপাত ছাড়াই ১৮ ডিসেম্বর মঠবাড়িয়া শত্রু মুক্ত হয়। [১৮ ডিসেম্বর মঠবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস পালন করা হয় ] পরে, ২০ ডিসেম্বর বিকেলে শহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সংবর্ধণা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের, মঠবাড়িয়া কালির হাট বাজারের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে – বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মঠবাড়িয়া উপজেলা কমান্ড এর পদক্ষেপে, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর, স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।
♥স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করেন – চিএশিল্পী চঞ্চল কর্মকার।
তথ্য সংগ্রহ ঃ
দেবদাস মজুমদার
উপদেষ্টা সম্পাদক, আজকের মঠবাড়িয়া
আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক-কালেরকন্ঠ