ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - মঠবাড়িয়ায় শিশু কন্যাসহ দম্পতি হত্যা রহস্য উদঘাটন টাকা ও স্বর্ণ লুটতে গিয়ে পালাক্রমে তিনজনকে শ্বাসরোধে হত্যা হত্যার মূল হোতাসহ দুইজন গ্রেফতার

মঠবাড়িয়ায় শিশু কন্যাসহ দম্পতি হত্যা রহস্য উদঘাটন টাকা ও স্বর্ণ লুটতে গিয়ে পালাক্রমে তিনজনকে শ্বাসরোধে হত্যা হত্যার মূল হোতাসহ দুইজন গ্রেফতার

SONY DSC

দেবদাস মজুমদার : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আয়নাল হক(৩২) তার স্ত্রী আমেনা বেগম খুকুমণি (২৬) তাদের একমাত্র তিনবছরের শিশু কণ্যা আশফিয়া (৩)কে হত্যার পর তিনজনের লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে অজ্ঞাত দুবর্ৃত্তরা । গত ৩০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দিনগত গভীর রাতে উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের ধানীসাফা গ্রামে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটনার ১০দিন পর পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দিনগত রাত আটটার দিকে পুলিশ এক প্রেস ব্রীফিংয়ে হত্যার রহস্য ও জড়িতদের বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।একই গ্রামের সংঘবদ্ধ চার দুর্বৃত্ত মিলে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নিতে গেলে নিহত অটোচালক দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় দুর্বৃত্তরা পালাক্রমে তিনজনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখে।
আজ শনিবার রাতে মঠবাড়িয়া থানায় অনুষ্ঠিতএক প্রেস ব্রীফিংয়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম, মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসান মোস্তফা স্বপন, থানার অফিসার মো. মাসুজ্জামান ও অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মো. আব্দুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রেস ব্রীফিংয়ে অবহিত করা হয়, মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের অটোচালক মো. আয়নাল হকের ভাড়া বাসায় টাকা ও স্বর্ণ লুটের উদ্দ্যেশে একই গ্রামের তোজাম্বর আলী বিশ্বাস এর ছেলের ও তার তিন সহযোগি মিলে গত ৩০ জুলাই রাতে হানা দেয়। তারা সিদ কেটে ঘরে ঢুকে বাসার মালামাল তছনছ শুর করে । এসময় গৃহকর্তা অটোচালক চার দুর্বত্তকে চিনে ফেলায় অটোচালক আয়নাল হক ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম খুকুমণিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে তাদেও লাশের হাতপা বেঁধে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এসময় ঘর থেকে দুর্বৃত্তরা বের হয়ে আসার সময় ওই দম্পতির তিনবছরের শিশু কণ্যা আশফিয়াকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। পরদিন পুলিশ তিনজনের বসতঘর হতে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
এ চাঞ্চল্যকর তিন খুনের ঘটনায় নিহত আয়নাল হক এর শ্বশুর উপজেলার চিত্রা গ্রামের আবুল কালাম সর্দার বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী কইে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ তিন খুনের ঘটনা দ্রুত তদন্তে আইনশৃংখলাবাহিনীর তিনটি সংস্থা সিআইডি এর ছয় সদস্য , পিবিআই এর নয় সদস্য ,র‍্যাব ও ডিবির একদল গোয়েন্দা হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার ১০দিনের মাথায় তদন্তে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন কওে আইনশৃংখলা বাহিনী। আজ শনিবার হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা একই গ্রামের তোজাম্বর বিশ্বাসের ছেলে অলি বিশ্বাস(৩৮)কে গ্রেফতার করে। এরপর তার গ্রামেরবাড়িতে তাকে নিয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। তার কথিত মতে বাড়ির পুকুর হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২টি লোহার পাইপ, একটি রামদাও ও লুণ্ঠিত কিছু অর্থ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার অপর এক সহযোগি একই গ্রামের কাওসার বেপারীর ছেলে রাকিব বেপারী(২০)কেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
তারা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে। এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও দুই সহযোগিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া অফিসার ইনচার্জ মো.মাসুদুজ্জামান মিলু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃত অলি বিশ্বাস ও রাকিব বেপারী হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ কিলিং মিশনে চারজন অংশ নেয়। অপর দুই সহযোগিকে গ্রেফতারের অভিযান চলছে। নিহত গৃহকর্তা দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় চারজন মিলে পালাক্রমে তিনজন হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে।

পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বিষযটি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন- এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে র‍্যাব, সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ থানা পুলিশের ৫টি টিম মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করে। হত্যার মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুই সহযোগির নাম এ মূহুর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছেনা। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...