ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - জন্মাবধি কাদা রাস্তা কাঁদাচ্ছে দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামবাসিকে

জন্মাবধি কাদা রাস্তা কাঁদাচ্ছে দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামবাসিকে


দেবদাস মজুমদার :তিন গ্রাম, ছয়টি মসজিদ, তিনটি বাজার আর চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিত্য যাতায়াতের জন্য দুটি কাচা রাস্তা। ব্রীটিশ আমল-পাকিস্তান আমল হয়ে আজকের উন্নয়নশীল বাংলাদেশ। গ্রামের সব কিছু বদলে গেছে কেবল বদলায়নি কাদা রাস্তা দুটি।
রাস্তা দুটি সংশ্লিষ্ট তিনটি গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রাকে পশ্চাদপদ করে রেখেছে। বর্ষা মৌসুমে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আজও কাঁদেন গ্রামবাসি। যুগযুগ ধরে চরম দুর্ভোগের অবস্থা বিরাজ করলেও দেখার যেন কেউ নেই।
পিরোজপুরের মঠবাড়িযার গুলিসাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামের দক্ষিণ গুলিসাখালী হাইস্কুল এর সম্মূখ হতে মহিলা কর্মজীবী হোস্টেল কাম ট্রেনিং সেন্টার রাস্তাটি গুলিশাখালী মাদ্রাসা হয়ে পুরাতন ফরাজী বাড়ি,মালবাড়ি হয়ে হাওলাদার বাড়ি পর্যন্ত দুই কিলোমাটির রাস্তা। ওই রাস্তা সংশ্লিষ্ট উত্তরে গিয়েগ্রামের চান্দু খাঁ এর বাড়ি থেকে পূর্বের দিকে বাদল ফরাজি বাড়ি হয়ে টিয়ারখালি বাজার পর্যন্ত আরও দেড় কিলো মাটির রাস্তা । এ মাটির রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন তিন গ্রামের মানুষ ও তিনটি বাজার আর চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার মানুষের নিত্য যাতায়ত ।
গ্রামের মানুষের অভিযোগ, এ দুই কাচা রাস্তা সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামের ৯০ ভাগ মানুষ আওয়ামীলীগ সমর্থক হওয়া সত্বেও রহস্যজনক কারনে আজও রাস্তার দুর্ভোগের কেউ অবসান করছেনা।
দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থী এমডি জুয়েল মাহমুদ জানান, পরপর ৩ বার আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় থকায় পিরোজপুর-৩ আসন থেকে ২০০৯ সালে ডা. আনোয়ার হোসেন( সাবেক এমপি) এরপর দুইবার ২ বার স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টি থেকে ডা. রুস্তম আলী ফরাজী (এমপি) সাহেব ক্ষমতায় থাকলেও গ্রামের কাচা রাস্তা দুটিতে উন্নয়নের কোনও ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামবাসি জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিলেও কোনও প্রতিকার পায়নি।
তবে গ্রামের কাচা রাস্তা ২০০৯ সালে স্থানীয় সৌদিপ্রবাসি আওয়ামীলীগ নেতা ইউসুফ মাহমুদ ফরাজি বহু চেষ্টার পর এ রাস্তা দুটি ডিও লেটার পেশ করেছিলেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে পিরোজপুর এবং মঠবাড়িয়া থেকে বেশ কয়েকজন প্রকৌশলী বেশ কয়েকবার এসে রাস্তার মাপ নিয়েছিলেন এবং নক্সা করেছিলেন। এরপর আর তা আলোর মুখ দেখেনি।
দক্ষিণ গুলিসাখালী গ্রামের প্রবীণ কৃষক নূর হোসেন বাদল ফরাজি বলেন, বাপ-দাদার আমলের এই রাস্তা । আমার বাবা মো. আব্দুর রশীদ ফরাজি ইউপি সদস্য থাকাকালে কয়েক যুগ আগে রাস্তা দুটিতে মাটি ভরাট করে প্রশস্ত করেছিলেন। এরপর আজ অবধি এ কাদা রাস্তা নিয়ে আমরা কাঁদছি। রাস্তা দুটি ২০০৯ সাল থেকে বেশ কয়েকবার মঠবাড়িয়া এবং পিরোজপুর থেকে প্রকৌশলীরা এসে রাস্তা মেপে নক্সাও করেছিলেন। একযুগ পার হলেও রাস্তার অবস্থা বদলায়নি। কৃষি নির্ভর গ্রামের মানুষেরা রাস্তা দুটি নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছেন। তিনি আরও জানান, গ্রামে কেউ অসুস্থ হলেও জরুরী অ্যাম্বুলেন্স আসারও কোন পথ নেই। চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহায়। তিনি গ্রাম্য বাজারমুখী মানুষ আর উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহনে গ্রামের মানুষের চলাচলে বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের শেষ নেই।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. কাজী আবু সাঈদ মো. জসীম জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়ক দুটি পাকা করণে পিরোজপুর সড়ক উন্নয়ন বিভাগের অন্তর্ভূক্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মী ভৌমিক বলেন, বেহাল রাস্তা দুটি সরেজমিনে দেখে পাকা করণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...