ব্রেকিং নিউজ
Home - মঠবাড়িয়া - বদলে যাচ্ছে দুর্গত উপকূলের গৃহহীন মানুষের জীবনধারা

বদলে যাচ্ছে দুর্গত উপকূলের গৃহহীন মানুষের জীবনধারা


দেবদাস মজুমদারঃ পানিমূল ও বনমূল আমাদের উপকূল। প্রতিবছর ভারী বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছাসে জীবন বিপন্ন হয় । ঝড় ঝঞ্জা মানুষকে গৃহহীন করে দেয় ফিবছর। প্রত্যন্ত গ্রামে এখন বিপর্যস্ত ঘর বসতি কম নয়। এদের মধ্যে অনেক ভূমিহীনেরও ঘর নাই । কেউ থাকেন থুপড়ি ঘরে। দরিদ্র মানুষ যাদের ঘর আছে তোও আবার নরেবরে ঝূঁকিপূর্ণ টিনের ঘর। ফি বছর ঝড়ে এসব বসতি বিধ্বস্ত হয়। মানুষ আবার দুর্গত গৃহহীন ।
বিশেষ করে দুর্যোগ প্রবণ উপকূলে অতিদরিদ্র মানুষের ছেড়াখোড়া টিনের ঘরবাড়ি ভিষণ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন বিপন্ন করে তোলে । প্রতিটি বাড়ি যদি পাকা বাড়ি হয় আমাদের প্রত্যন্ত গ্রাম যেমন বদলে যাবে তেমনি ঘরহীন মানুষের জীবনও নিরাপদ হবে। আমরা তেমন একটি জীবন যে জীবনে কোন অসহায় পরিবার আর গৃহহীন থাকবেনা তেমন করে বদলে যাওয়ার জীবনটা তো চাই। সেই দিন বদলানোর স্বপ্নটা আস্তে আস্তে পূরণের পথে। ধাপে ধাপে বদলে যাবে ঘরহীন মানুষের স্বপ্ন।
আমার আপন জনপদ মঠবাড়িয়া শুধু গোটা বাংলাদেশে সরকার ঘরহীন মানুষের পাকা বাড়ি বানিয়ে দিচ্ছেন। একটা অধিকার বাস্তবায়নে সরকারের এ বিশাল কর্ম যজাঞ সফলতার দিকে যাচ্ছে। আমি আশাবাদি।
মঠবাড়িয়ায় এ আশ্রয়ণ প্রকল্প চলমান। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশ শত সেমি পাকা ঘর সরকার নির্মাণ করে দিয়েছেন। নির্মাণাধিন আছে আরও ৫০টি পরিবারের জন্য সেমি পাকা বাড়ি। আর ধাপে ধাপে সকল গৃহহীন মানুষ পাকা বাড়ির নিশ্চয়তা বিধান করবে সরকার। এটি বিস্ময়করভাবে বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে সকল মানুষের জীবনধারা। বদলে যাবে প্রত্যন্ত গ্রাম জনপদ।
১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তদানীন্তন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন এবং সকল গৃহহীন পরিবারসমূহকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিন (০৩) টি ফেইজে আশ্রয়ণ প্রকল্প (৯১৯৭ – ২০০২), আশ্রয়ণ প্রকল্প (ফেইজ – ২) (২০০২ – ২০১০), আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্প (২০১০ – ২০১৯) মোট ২,৯৮,২৪৯টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়, তন্মধ্যে আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ১,৯২,৩৩৬টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে। বর্ণিত প্রকল্পের সাফল্য ও ধারাবাহিকতায় ২০১০-২০১৯ (সংশোধিত) মেয়াদে ২.৫০ লক্ষ ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

পুনর্বাসিত ভূমিহীন, গৃহহীন, দুর্দশাগ্রস্ত ও ছিন্নমূল পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ভূমির মালিকানা স্বত্বের দলিল/কবুলিয়ত সম্পাদন, রেজিষ্ট্রি ও নামজারী করে দেয়া হয়। পুনর্বাসিত পরিবার সমূহের জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, মসজিদ নির্মাণ, কবর স্থান, পুকুর ও গবাদি পশু প্রতিপালনের জন্য সাধারণ জমির ব্যবস্থা করা হয়। পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন উৎপাদনমুখী ও আয়বর্ধক কর্মকান্ডের জন্য ব্যবহারিক ও কারিগরী প্রশিক্ষণ দান এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করা হয়। প্রকল্পগ্রামে বসবাসরত উপকারভোগীদের (যেমন: নাম/স্বামীর নাম, সন্তান সংখ্যা, ঋণ ইত্যাদি) এবং প্রকল্পগ্রামের তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত হলে মানুষের জীবন সমৃদ্ধির দিকে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ স্বপ্ন ও সম্ভবনা একদিন নিশ্চয়ই সফল। জনবান্ধব সরকার ও জনবান্ধব প্রশাসনকে অভিনন্দন জানাই।🌿

🌀 লেখার ছবি মঠবাড়িয়ার ধানীসাফা ইউনিয়নে এক গৃহহীন পরিবারের নির্মাণাধিন সেমি পাকা ঘর পরিদর্শনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিক ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...