মঠবাড়িয়ায় করোনা সংক্রমণের চূড়া কখন?
পিরোজপুর জেলার মধ্যে আমাদের মঠবাড়িয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীর ভয়াবহ ভাবে বেড়ে যাচ্ছে।স্বাস্থ্যবিধির কথা সবাই বার বার বলার পরও উদাসীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের।অনেকেই মনে করে তার করোনা হবেনা,তাই মাস্ক পড়বেননা।আর পড়লেও সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অথবা উদাসীনতার কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এখন অনেকেই জ্বর এর কথা স্বীকার করেননা অথবা স্বীকার করলেও বলেন অনেক অনেক দিনের জ্বর,কেউ বলেন প্রতিবছর তার টাইফয়েড জ্বর হয়।সবচেয়ে কমন কারণ হিসেবে অধিকাংশই বলেন বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এসেছে।যখন করোনা পরীক্ষা করানো হয়,দেখা যায় পজিটিভ ।
আসল কথা হচ্ছে কেউ নিজেকে করোনা রোগী হিসেবে ভাবতে পারেননা।এর ফলে পরীক্ষার স্যাম্পল দেয়ার পরেও তারা আইসোলেশনে থাকেননা এবং পরিবারের সবাইকে আক্রান্ত করে ফেলেন।মঠবাড়িয়ায় এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে পরিবারের সবাই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
আপনারা দেখেছেন আমাদের সর্বমোট পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১০২।মাত্র ৭০০ জনের রিপোর্টে এই সং্খ্যা।কিন্তু হাজার হাজার মানুষ পরীক্ষা করছেনা অথবা করাতে পারছেনা।যাদের বাসা পৌরসভার ভিতরে তারাই দেখা যাচ্ছে পরীক্ষা করছেন।বাইরের অনেকেই পরীক্ষা করছেন না বিভিন্ন কারণে।তবে আমরা প্রতিদিন টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে এতো বেশি সং্খ্যক মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি ,তার মাধ্যমে মনে হয় নূন্যতম কয়েক হাজার রোগী ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন এবং অনেকেই সুস্থও হয়ে গেছেন।প্রকৃত রোগীর সংখ্যা পৃথিবীর কোন দেশই নিরুপন করতে সক্ষম হয়নি।আমরাও এব্যাপারে অনেক পিছিয়ে থাকবো এটাই স্বাভাবিক।
যেহেতু এই ভাইরাসটি মারাত্মকভাবে ছোঁয়াচে,তাই আমাদের সামান্য ভুল কিংবা অসচেতনতার কারণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।কঠোর লকডাউনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় তা হলো কমপক্ষে ৮০% মানুষের মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।যেহেতু দীর্ঘদিন এই ভাইরাসের সাথে বসবাস করতে হতে পারে,তাই আমাদের সবাইকে খুব সচেতনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
আমি মনে করি এই জুলাই মাস জুড়ে মঠবাড়িয়ায় করোনা রোগী আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে,জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে,তারপর আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে আস্তে আস্তে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।তবে আদৌ এই ভাইরাস কখনো নির্মূল হবে কিনা সেটা বলা মুশকিল ।
সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করা,শারীরিক দূরত্ব (৬ফুট) বজায় রাখা,অপরিস্কার হাতে নাক,মুখ বা চোখ স্পর্শ করা এবং করোনা ভাইরাসকে হালকাভাবে না নিয়ে সচেতনভাবে চললে সংক্রমণের হার আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা সম্ভব।