ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূল - সোনালু

সোনালু


🍂
পথের ধারে প্রকৃতিগতভাবেই জন্মেছে সোনালু গাছ। মঠবাড়িয়া-ডৌয়াতলা সড়কের কুমিরমারা বাজারের সড়কের পাশে সোনালু গাছটিতে গতবছর ফুল ফুটেছিলো। এখন এ মৌসুমেও সোনালী হলদে আভা নিয়ে ফুটেছে শোভন এই ফুল। একটি ডাল ভর্তি ঝুলে থাকা সোনালু ফুল সড়কের এপাশ থেকে ওপাশ অবধি ছড়িয়েছে। পথচারীদের দারুণ আকৃষ্ট করে। আজ সকালে ডৌয়াতলা থেকে আসতে যেতে আমি সোনালু ফুলে মুগ্ধ হয়েছি। গাড়ি থামিয়ে বেশ কিছু ছবিও তুলেছি। দারুণ শোভন সবুজ নিসর্গে সোনা রঙের সোনালু ফুল। ঝাড় বাতির মতোন ঝুলে থাকা ফুল গুলো যখন বাতাসে দুলছিলো তখন মন ভরে যায়।
এ মৌসুমেই সোনালু ফুল ফোঁটে। আগে গৃহস্থবাড়ি প্রচুর সোনালু গাছের দেখা মিলতো। এখন আর তেমন দেখা মেলেনা। মঠবাড়িয়া কুমিরমারা বাজারের সড়কের পাশে আর আমড়াগাছিয়ার হোগলপাতি গ্রামে এক গৃহস্থ বাড়ির বাগানে দুটি গাছের খোঁজ আমার কাছে আছে।
সোনালু আসলে ভেষজ গুণের এক অলংকারিক বৃক্ষ। সোনালু,বাঁদর লাঠি আবার অঞ্চলভেদে একে সোনাইল নামে পরিচিতি আছে। সোনাইকে আবার স্বর্ণালী বৃক্ষও বলা হয়।
সোনালুর বৈজ্ঞানিক নাম: Cassia fistula এবং Albizia inundata) সোনালী রঙের ফুলবিশিষ্ট বৃক্ষ। উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাসে Fabaceae গোত্রের এ বৃক্ষের ফল লম্বাটে ঝাড়বাতির মতোন। সোনালী রঙের ফুলের বাহার থেকেই ‘সোনালু’ নামে নামকরণ। ইংরেজি ভাষায়ও একে বলা হয় golden shower tree বা স্বর্ণালী ঝর্ণার বৃক্ষ ।
সোনালু বা বাঁদরলাঠি গাছ সাধারণত ১৫ থেকে ২০মিটার উঁচু হয়ে থাকে। উঁচু থেকে মাঝারি উঁচু ভূমি সোনালু গাছ উৎপাদনের জন্য উপযোগী স্থান।পত্র ঝরা বৃক্ষ,শীতে গাছের সমস্ত পাতা ঝরে গিয়ে গাছ থাকে পত্র শুন্য এবং বসন্তের শেষে ফুল কলি ধরার পূর্বে গাছে নতুন পাতা গজায়।গ্রীষ্মে গাছের শাখা-প্রশাখা জুড়ে ঝুলন্ত মঞ্জুরিতে সোনালী হলুদ রঙের ফুল ফুটে এবং এর ব্যাপ্তি থাকে গ্রীষ্ম কাল পুরু সময় জুড়ে। ফুলের পাঁপড়ি পাঁচটি,মাঝে পরাগ দণ্ড অবস্থিত।পাতা হাল্কা সবুজাব,মধ্য শিরা স্পষ্ট। গাছের শাখা-প্রশাখা কম,কা- সোজা ভাবে উপরের দিকে বাড়তে থাকে, বাকল সবুজাব থেকে ধুসর রঙের,কাঠ মাঝারি শক্ত মানের হয়। ফুল থেকে গাছে ফল হয়,ফলের আকার দেখতে সজিনা সবজির আকৃতির,তবে সোনালু ফলের চামড়া সজিনার চেয়ে মসৃণ। ফল লম্বায় প্রায় এক ফুট হয়। ফলের রঙ প্রথমে সবুজ ও ফল পরিপক্ক হলে কালচে খয়েরি রঙ ধারণ করে। ফলে বীজ হয়,ফলের বীজ হতে বংশ বিস্তার সোনালু এর ফলকে বানর লাঠি হিসেবে অঞ্চলভেদে পরিচিতি।
সোনালু ফুল প্রকৃতিকে নয়নাভিরাম রূপে সাজিয়ে দেয়। পরিবেশের শোভা বর্ধনে সোনালু দারুণ এক নিসর্গ মায়া এনে দেয়। সড়কের দুই পাশে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সারিবদ্ধ ভাবে গাছ লাগানো হয়। গ্রীষ্মকালে যখন সব গাছে একসাথে সোনালী ফুল ফোটে,তখন মনে হয় সোনালী আলোকচ্ছটায় পরিবেশ মোহনীয় করে তোলে।
সোনালু গাছের বাকল এবং পাতায় ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। এ গাছের বাকল এবং পাতা ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ। যা ডায়রিয়ায ও বহুমূত্র রোগে ব্যবহৃত হয় ।
সোনালু আসলে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব এক বৃক্ষ। বৃক্ষটি আমাদের প্রকৃতির মাঝে টিকে থাকুক।

 

 

 

দেবদাস মজুমদার
কুমিরমারা
মঠবাড়িয়া,পিরোজপুর।
বুধবার । ৩০ বৈশাখ ১৪২৭ । ১৩ মে ২০২০

 

 

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...