ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - বিবেকের তাড়নায় আর না লিখে পারছিনা, আশরাফুর রহমান

বিবেকের তাড়নায় আর না লিখে পারছিনা, আশরাফুর রহমান

সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সফল উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালচোর দের নিয়ে ট্রল করা সহ মিডিয়া ও প্রশাসনের অভিযানের কার্যক্রম নিয়ে বেস কিছুদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো নিয়ে তার ফেসবুক পেইজ দিয়ে একটি স্টাটাস দিয়েছেন যেখানে তিনি সারাদেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন সরকার প্রধান কে আরও গভীরে গিয়ে এদের ব্যাপারে সিন্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন নিম্নে তার লেখাটা সম্পূর্ণরূপে দেয়া হলো, …..

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলের লেখা ও মতামত মনোযোগ দিয়ে পড়লেও সহসা কখনো কিছু লিখি না। কেননা কার পক্ষে অথবা বিপক্ষে চলে যায় সেই ভেবে। কিন্তু গত কয়েকদিনের চাল চোর নিয়ে লেখালেখিতে বিবেকের তাড়নায় আর না লিখে পারছি না।
করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীতে সারা বিশ্ব নেতারা যখন কিংকর্তব্যবিমুড়, বিজ্ঞানী ডাক্তাররা যখন অসহায় আত্মসমর্পণ করছেন,সারা বিশ্বে লাশের মিছিল তখন আমাদের এই প্রিয় স্বদেশে “চাল চোর” “চাল চোর” বলে চিৎকারে মনে হয় দেশ বাসীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আস্থার জায়গা তৃণমূল।
সেই তৃণমূল আজ প্রশ্নবিদ্ধ চাল চুরির অপবাদে। কিন্তু এই চিৎকারের সাথে বাস্তবতার মিল আছে কি না সেটা আজ অনুধাবন করার বিষয়। যাদের কাছে গ্রাম থেকে সারা বছরে একটি ফোন আসে না কিংবা গ্রাম থেকে কেউ বাসায় আসলেও দরজা খোলে না তারা এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবে না এটাই সত্য!
নিশ্চয়ই আমি বলতে চাই না তৃনমুলের প্রতিনিধিগন শতভাগ সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে। তবে নির্দ্বিধায় বলতে পারি অধিকাংশ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি গণ সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে।দফাওয়ারী মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, তারপর আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন জনপ্রতিনিধিরা কি চাল চুরি করেছে বা করে নাই?
“—–জেলে কার্ড:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে জেলে কার্ড প্রবর্তন করা হয়। এই জেলেদের প্রত্যেককে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। যা বছরের ৪ মাস জেলেরা পেয়ে থাকেন।
উক্ত চাল বিতরণে-
১. উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
২. উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নিযুক্ত একজন কর্মকর্তা।
৩. মাননীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি।
৪. উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রতিনিধি।
৫. ৩ জন জেলে প্রতিনিধি
উপস্থিত থাকেন।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জেলে কার্ডের চাল বিতরণ এর দিন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ৪০০ কার্ড ধারি জেলের উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও হতদরিদ্র সহস্রাধিক মানুষ চালের প্রত্যাশায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন। সকল ক্ষেত্রে মাননীয়রা বিমুখ করতে পারলেও কোন জনপ্রতিনিধির পক্ষে কাউকে খালি হাতে ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপস্থিত সকল সদস্যদের সর্বসম্মতসিদ্ধান্তের মাধ্যমে সকলকে কমবেশি সন্তুষ্ট করা হয়। যদি আপনি এটাকে অনিয়ম বলেন, বলতে পারেন!
যে সকল মাননীয়রা জেলে কার্ডের চাল বিতরণের নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন তাদেরকে আমি সবিনয়ে প্রশ্ন করতে চাই–
উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ২০/২৫(+ -)কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইউনিয়ন এর চাল পৌছাবার খরচ কে বহন করবে, সেটা কি আপনারা নির্ধারণ করেছেন?
প্রতি ইউনিয়নে বহন খরচ আনুমানিক অর্ধলক্ষ টাকা।
কোথা থেকে আসবে এই অর্ধলক্ষ টাকা! একজন ইউপি চেয়ারম্যানের সম্মানী কত?
যারা ফেসবুকে লেখেন তারা কি কখনো গজা লোহা মারার কাহিনী জানেন!!
খাদ্য গুদামের শ্রমিকদের বস্তায় লোহা মারার কারণে ২৫ কেজি ওজনের চালের বস্তা কে সারা বাংলাদেশের ইউপি চেয়ারম্যানদের ৩০কেজি হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। কে দিবে এই ঘাটতি!
” খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি”
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে প্রত্যেক কে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। উক্ত চাল উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নিযুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। ইউপি সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান উক্ত তালিকা করেন। ১জন ডিলার এর কাছ থেকে ৩৩০ জন ভুক্তভোগী চাল গ্রহণ করবে।
ডিলার চাল বিতরণ কালে ৩৩০ জনের মধ্যে ২৫০ জন উপস্থিত হলেন।
( কার্ড ধারি কেউ মারা গেছেন। কেউ কাজের কারণে দূরে অবস্থান করেন। কেউ বা আবার ৩০০ টাকা জোগাড় করতে পারেন নি বলে চাল নিতে আসেননি )
তাহলে কিন্তু ৮০ বস্তা চাল ডিলারের গুদামে থেকে গেল। এক সপ্তাহ পরে ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ যদি সেই চাল উদ্ধার করে বলে চোর তাহলে আমার কিছুই বলার নেই। এমপি সাহেবের মনঃপুত ডিলার না হলে তো কথাই নেই।
এখন কথা হচ্ছে তাহলে এত এত চাল উদ্ধার হয় কোথা থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে।
কাবিখা কর্মসূচিতে যে শ্রমিক ভাইয়েরা কাজ করেন তারা কিন্তু পূর্বের ন্যায় এখন আর চালের বিনিময়ে কাজ করেন না।
এক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের চাল বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করতে হয়। যে ব্যক্তি চাল কিনলেন তার কাছ থেকে প্রশাসন চাল উদ্ধার করে যদি বলে মস্ত বড় চোর তাহলে আমার কিছুই বলার নেই।
সারা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ কাঁদছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা শক্ত হাতে যখন করোনা মোকাবিলায় সংগ্রামরত। তখন কিছু নির্বোধ, বেয়াক্কেল ষড়যন্ত্রকারীরা দেশরত্নের আস্থার জায়গা তৃণমূলে কালিমা লেপনের চেষ্টা চালাচ্ছে।জাতীয় নেতৃবৃন্দের শরীরে কালিমা লেপন করা হয়েছে ১/১১ এ। ছাত্র-শ্রমিক, যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের শরীরে কালিমা লেপন করা হয়েছে পূর্বেই। বাকি ছিল শুধু তৃণমূল।
শেষ পেরেক মেরে দেয়ার চেষ্টা চলছে……
বিরাজনীতিকরন—
সত্য মিথ্যা আগে যাচাই করুন, তারপরে শেয়ার এবং কমেন্ট করুন।
ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন
ভরসা রাখুন মহান আল্লাহর উপর!
জয় বাংলা!

লেখক..
জনাব আশরাফুর রহমান
সাবেক চেয়ারম্যান মঠবাড়ীয়া উপজেলা পরিষদ।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...