ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - বেঁদে বহরে আলোর পাঠশালা

বেঁদে বহরে আলোর পাঠশালা

দেবদাস মজুমদার >
বেঁদে জীবন ভাসমান। সেই ভাসমান জীবনে শিশুরা নানা বঞ্চনায় বেড়ে ওঠে। সবচেয়ে বড় সংকটে থাকে ওরা শিক্ষা নিয়ে। স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন অনিবার্য কারনেই ব্যহত হয়। প্রাথমিক শিক্ষাই ওদের বড় সংকট। বেঁদে শিশুদের পরিবারও ওদের শিক্ষা নিয়ে অতটা সচেতনও নয়। আবার ওরা ভাসমান বলে সরকারী বেসরকারী শিক্ষার সুবিধাও পায়না। ব্যক্তিগত উদ্যোগে একদল বেঁদে শিশুদের প্রাথমিক দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পিরোজপুরের কাউখালীর সামাজিক উদ্যোক্তা ষাটোর্ধ আবদুল লতিফ খসরু। তিনি একদল বেঁদে শিশুদের হাতে বই তুলে দিয়ে বেঁদে বহরে পাঠদান করে আসছে।
স্থানীয়দের সুত্রে জানাগেছে, পিরোজপুরের কাউখালীতে সন্ধ্যার বুকে আমরাজুড়ি ইউনিয়নের আমরাজুড়ি গ্রামে মাদারীপুরের শরিয়তপুর থেকে দশটি বেঁদে পরিবার জীবন জিবিকার তাগিদে নদী তীরে ঝুঁপড়ি ঘর বেঁধে অবস্থান নেয়। এক সপ্তহ পূর্বে আসা এ অসহায় বেঁদে পল্লীতে হতদরিদ্র সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মধ্যে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে শিশুদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাকার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। আবদুল লতিফ কাউখালী প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও একজন শিক্ষা উদ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় পরিচিত। আজ রবিবার তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে বেঁদে পল্লীতে গিয়ে শিক্ষা উপকরণ ও বই বিতরনের মধ্য দিয়ে বেঁদে শিশুদের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করেন।
তিনি জানান, বেদে পল্লীর মহিলার জীবিকা নির্বাহের জন্য সাঝ সকালে ঘর থেকে বের হয়ে যান। আর সন্ধ্যায় ফিরে আসেন পল্লীতে। রেখে যাওয়া শিশু দেখভাল করেন শিশুদের বাবারা। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে জীবিকা নির্বাহের জন্য ছুটে চলেন বেদেনীরা। যার ফলে বেদে শিশুদের লেখা পড়ার সুযোগ মেলেনা। তাই তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বেঁদে পল্লীতে ১২ জন শিশু নিয়ে এ পাঠদান কার্যক্রম তিনি শুরু করেন। যে সকল শিশুরা এই শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করেন তারা হলেন ঃ বেঁদে আতাউলের ছেলে রাইজুল (৪), লাভলু সরদারের দুই মেয়ে পিপাশা (৮), শ্যামলি সরদার (১০) ওয়াসিনের ছেলে ছনিরুল (১২), শাহেব আলীর ছেলে মাসিক (১০), রুহুল এর ছেলে ফরিদ হোসেন (৮), মাঝাহারের মেয়ে জোনাকি (৭), আর্যুর ছেলে নিরব(১০), ইসমাইলের মেয়ে সোনালী (৮), মিজানুরের মেয়ে রুপা (১০)।

বেঁদে বহরের সরদার সেরাজ মিয়া বলেন, আমাদের সন্তানদের কেউ যখন খোঁজ খবর নেয়না ওদের পড়াশুনা করানো তো দুরের কথা। আমাদের বেঁদে বহরে খসরু ভাই এসে শিশুগো বই পড়াচ্ছেন এতে আমরা সম্মানবোধ করছি।

আমরাজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক ফারহানা খানম বলেন, খসরু ভাই এর উদ্যোগের কথা আমি শুনেছি। তার এই মহতী উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাঁর মত এ ধরণের মহত কাজের সমাজের অন্য সব মানুষরা এগিয়ে আসলে সমাজের হতদরিদ্র ছিন্ন মূল শিশুরা কিছুটা হলেও শিক্ষার আলো দেখতে পারবে ।

আবদুল লতিফ খসরু বলেন, প্রতিবন্ধী স্কুল এর শিক্ষা কার্যক্রমের পাশা পাশি শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত বেদে পল্লী শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবার জন্য আমার এই উদ্যোগ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...